সোমবারও লেনদেনের মাঝে এক সময় পতন ১০০০ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। ফাইল ছবি
বিশ্বে আর্থিক মন্দা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা ধাক্কা দিয়েছে লগ্নিকারীদের আস্থায়। ফলে প্রায় সমস্ত দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লাগাতার পড়ছে ভারতের শেয়ার বাজারও। গত শুক্রবার হাজার পয়েন্টের বেশি পড়ার পরে সোমবার সেনসেক্স ৯৫৩.৭০ পয়েন্ট খুইয়ে নামে ৫৭ হাজারের ঘরে। এ দিনও লেনদেনের মাঝে এক সময় পতন ১০০০ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই লগ্নিকে সব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়। তাই মূল্যবৃদ্ধিকে রুখতে আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ বিভিন্ন দেশ বিপুল হারে সুদ বাড়ানোয় আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা ঘনিয়েছে। ফলে লগ্নিকারীরা হাতের শেয়ার বেচে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন আর আমেরিকা সুদ বাড়ানোয় চাঙ্গা সে দেশের ডলার এবং বন্ড বাজারে পুঁজি ঢালছেন। জিয়োজিৎ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর গবেষণা বিভাগের প্রধান বিনোদ নায়ারের মতে, বাড়তে থাকা ডলারের দাম এবং শ্লথ আর্থিক বৃদ্ধি বিশ্বের শেয়ার বাজারকে অস্থির করছে। আর এইচডিএফসি সিকিউরিটিজ়-এর রিটেল গবেষণা বিভাগের প্রধান দীপক জসনির দাবি, শেয়ারের মতো সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ লগ্নিরই অবস্থা কাহিল মূল্যবৃদ্ধি ও বিশ্ব জোড়া মন্দা দ্রুত মাথা তোলার আশঙ্কায়।
গত বুধবার থেকে চারটি লেনদেনে ভারতে ১০,৯৭১.৫৭ কোটি টাকার শেয়ার বেচেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। এর মধ্যে শুধু সোমবারেই ৫১০১.৩০ কোটি টাকার।
তবে শেয়ার ব্রোকিং সংস্থা ডিবি অ্যান্ড কোম্পানির কর্ণধার দেবু বিশ্বাসের দাবি, ‘‘এই টানা পতনকে নেতিবাচক বলে মানতে পারছি না। কারণ, গত দু’মাসে সেনসেক্স প্রায় ৭৫০০ এবং নিফ্টি প্রায় ৩০০০ পয়েন্ট বেড়েছিল। এই দফায় সূচক দু’টির যথাক্রমে ২৫০০ ও ১০০০-এর মতো পতন আমার মতে সংশোধন। সেনসেক্স আরও ১২০০ ও নিফ্টি ৫০০ পয়েন্ট পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। এতে ভারতীয় বাজারের ভিত মজবুত হচ্ছে।’’ যদিও বিশেষজ্ঞ অনিল আগরওয়ালের মতে, বিদেশের বাজারগুলি পড়ছে বলেই ভারতের সূচকে এমন ধাক্কা লাগছে। এ দেশের আর্থিক অবস্থা অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভাল। তবে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামের পতন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’ তাঁর আশা, ভারতের শেয়ার বাজার খুব শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে।
এ দিন মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস চলতি অর্থবর্ষের জন্য ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস তাদের আগের করা ৭.৩ শতাংশেই বহাল রেখেছে। তবে তাদের মতে মূল্যবৃদ্ধির হার ডিসেম্বর পর্যন্ত রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬ শতাংশের সীমার উপরেই থাকবে। ভারতে বৃদ্ধির ৬.৯% অনুমান বহাল আন্তর্জাতিক সংস্থা ওইসিডি-র রিপোর্টেও।
সোমবার (ভারতীয় সময় রাতে) খোলার পরেই মন্দার আশঙ্কায় ফের হুড়মুড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে আমেরিকার বাজার। তার আগে ডলারে সাপেক্ষে ঐতিহাসিক তলানিতে নেমেছে ব্রিটিশ পাউন্ডও। ধাক্কা খেয়েছে সরকারি বন্ডের বাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy