প্রতীকী ছবি।
আগে রাজ্যের হাতে কেন্দ্রের টাকা আসত মাসের পয়লা তারিখে। পিছিয়ে যেতে যেতে এখন তা মিলছে ২০ তারিখে। কেন্দ্রীয় করের এই ভাগ ঠিক সময়ে না মেলায়, মাসের শুরুতে নাভিশ্বাস উঠছে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের। রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন, পেনশন দিতে ধার করতে হচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে।
রাজ্যগুলি এতদিন এ নিয়ে চুপ ছিল। অধিকাংশ রাজ্যে বিজেপি সরকার। ফলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চুপ তারা। কিন্তু রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, পঞ্জাবে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে, এ বার মহারাষ্ট্রের তখ্তেও বিরোধী জোট। ফলে কেন্দ্রকে নিশানা করতে শুরু করেছে বিরোধীরা। অভিযোগ তুলছে, মোদী সরকার মুখে কেন্দ্র-রাজ্য সহযোগিতার সম্পর্কের কথা বলে। কিন্তু রাজ্যের সঙ্গে কথা না-বলে সিদ্ধান্ত নেয় একতরফাই। আর তাতে বিপাকে পড়ে রাজ্য।
কেন্দ্র যে কর আদায় করে, তার ৪২% রাজ্যগুলিকে ভাগ করে দিতে হয়। বরাবরই তা দেওয়া হয় মাসের ১ তারিখে। যাতে রাজ্যের কাজ চালাতে অসুবিধা না হয়। মোদী জমানায় রাজকোষে যত টান পড়েছে, ততই সেই টাকা মেলার দিন পিছিয়েছে। টানাটানির সংসারে ২০ দিনের খরচ চালাতে রাজ্যগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ধার (ওয়েজ অ্যান্ড মিনস অ্যাডভান্স) করতে হচ্ছে। সেখানে আবার ঊর্ধ্বসীমা বাঁধা আছে। অনেক রাজ্যের সে টাকাও শেষ হয়ে যাওয়ায় বাড়তি ধার বা ‘ওভারড্রাফট’ করতে হচ্ছে। ফলে গুনতে হচ্ছে চড়া সুদ। বুধবার বাজেটের প্রস্তুতি পর্বে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ডাকা বৈঠকে এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা। তাঁদের প্রশ্ন, এই সুদের বোঝার দায় কী কেন্দ্র নেবে?
২০১৭ সালে আচমকা অর্থ মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে জানিয়েছিল, ১ তারিখে নয়, ওই বছরের বাকি ক’মাস করের ভাগ দেওয়া হবে ১৫ তারিখে। নির্মলার জমানায় তা আরও পিছিয়েছে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, রাজকোষে টানাটানি। গোটা বছরের ঘাটতির যা লক্ষ্য, অক্টোবর শেষেই তা তার থেকে বেশি। অর্থবর্ষের আট মাস কাটলেও কর থেকে আয়ের লক্ষ্যের অর্ধেক আদায় হয়নি। অক্টোবরে কর বাবদ আয় গত বছরের চেয়ে ১৭% কম ছিল।
তথ্য বলছে, এতদিন কেন্দ্রীয় করের ভাগ থেকে পশ্চিমবঙ্গ পেত মাসে ৩০০০ কোটি টাকা। কিন্তু আয় কমায় প্রাপ্যও কমেছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘শুধু এ ক্ষেত্রে নয়। আয়ুষ্মান ভারত থেকে পানীয় জলের প্রকল্প, কেন্দ্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। রাজ্যের সঙ্গে কথা না-বলেই প্রকল্প আনছে। তার পরে দেয় অর্থের ভাগ কমিয়ে রাজ্যের দায় বাড়াচ্ছে। প্রকল্প চালুর পরে রাজ্যের পক্ষে বেরোনোও সম্ভব হচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy