Advertisement
E-Paper

সহজে ব্যবসা করার সুবিধায় এগোতে চায় রাজ্য

লক্ষ্য প্রথম পাঁচ। অন্তত প্রথম দশ তো বটেই। গত বছর অল্পের জন্য ফসকে গিয়েছিল। কেন্দ্র ও বিশ্বব্যাঙ্কের যৌথ প্রচেষ্টায় গত বছর থেকেই তৈরি হচ্ছে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ বা সহজে ব্যবসা করার সুবিধায় কোন রাজ্যের স্থান কোথায়, সেই ক্রম তালিকা।

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৮:৫১

লক্ষ্য প্রথম পাঁচ। অন্তত প্রথম দশ তো বটেই।

গত বছর অল্পের জন্য ফসকে গিয়েছিল। কেন্দ্র ও বিশ্বব্যাঙ্কের যৌথ প্রচেষ্টায় গত বছর থেকেই তৈরি হচ্ছে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ বা সহজে ব্যবসা করার সুবিধায় কোন রাজ্যের স্থান কোথায়, সেই ক্রম তালিকা। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ ছিল ১১ নম্বরে। এ বার পরীক্ষার ফল ভাল করতে মরিয়া রাজ্য তাই বিশ্বের প্রথম চার উপদেষ্টা সংস্থার অন্যতম কেপিএমজি-কে নিয়োগ করেছে।

গত বছর থেকেই রিপোর্ট কার্ড তৈরি করছে কেন্দ্র। ব্যবসা করার প্রক্রিয়া কতটা সহজ করে তুলতে পেরেছে রাজ্যগুলি, তার মূল্যায়নের ভিত্তিতে স্কোর কার্ড তৈরি করতে কেন্দ্রকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাঙ্ক। এ বছর গোটা মূল্যায়ন প্রক্রিয়ারই দায়িত্বে রয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ নস্যাৎ করতেই কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রক নিজের কাঁধে এই দায়িত্ব রাখেনি । গত বার বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছিল।

চলতি বছরে এ বিষয়ে ৩৪০টি মাপকাঠি রয়েছে। গত বছর তা ছিল ৯৮। প্রতিটি রাজ্যের কাছে পৌঁছে গিয়েছে প্রশ্নপত্র। উত্তর পাঠানোর শেষ দিন ৩০ জুন। গত বারের মতো এ বারও মাপকাঠির মধ্যে থাকছে অনলাইন একজানলা ব্যবস্থা, জমি-সম্পত্তি নথিভুক্তির সময়সীমা, অনলাইন কর ব্যবস্থা, পরিবেশ ও অন্যান্য ছাড়পত্র পাওয়ার সময় ইত্যাদি। শিল্প দফতরের দাবি, এ সমস্ত বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ যথেষ্ট কাজ করেছে। কিন্তু সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে সঠিক ভাবে সাজিয়ে দেওয়ার উপরেও অনেকটা নির্ভর করে স্কোর। মূলত সেই কারণেই উপদেষ্টা সংস্থা নিয়োগ করা হয়েছে বলে দাবি।

রাজ্যের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পমহল। বণিকসভার এক কর্তার দাবি, বিশ্বব্যাঙ্কের তালিকার উপরে উঠতে পারলে প্রতিযোগিতার বাজারে অবশ্যই এগিয়ে থাকবে পশ্চিমবঙ্গ। লগ্নি টানা ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাঙ্কের দেওয়া তকমা নিশ্চিতভাবেই কাজে আসবে বলে তাঁর মত। এক শিল্প-কর্তা বলেন, ‘‘বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে লগ্নিকারীর আস্থা অর্জন করতে এই তালিকা কাজে আসে। আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থাকে এ বিষয়ে নিয়োগ করে রাজ্য পেশাদারি মনোভাবই প্রকাশ করেছে।’’

এই মনোভাব বদলের পেছনে দ্বিতীয় দফায় তৃণমূল সরকারের রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরে উন্নয়নে কৃতিত্ব অর্জনের লক্ষ্যও কাজ করছে বলে মনে করছে শিল্পমহল। আর এই লক্ষ্যে পৌঁছতে বিশ্বব্যাঙ্কের তকমা যে-জরুরি, তা জানে রাজ্য সরকার। ২০১৫ সালে ‘ফার্স্ট বয়’-এর তকমা জিতে নিয়েছিল গুজরাত। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত ২০১৭’-র ওয়েবসাইট খুললেই যে-তকমা প্রথমে জ্বলজ্বল করে উঠে আসে। একই ভাবে বিশ্বব্যাঙ্কের দেওয়া নম্বর পশ্চিমবঙ্গও ব্যবহার করতে পারে বলে মনে করেন বিপণন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, চট করে নজর কাড়তে এই ‘র‌্যাঙ্কিং’ অবশ্যই সাহায্য করবে। গত বছর ১১ নম্বরে দৌড় শেষ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ। অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক তো বটেই, এগিয়ে গিয়েছিল ছত্তীসগঢ়, ওড়িশার মতো পেছন থেকে উঠে আসা রাজ্য।

গত বছর কেন্দ্রের এই মূল্যায়নের ঠিক আগে শিল্পপতিদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার টাউন হলে রাজ্যের সব বণিকসভার সদস্য ও শিল্পপতিদের সঙ্গে ঘণ্টা দেড়েক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনার মূল বিষয় ছিল ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়া সহজ করার পথে কতটা এগিয়েছে রাজ্য। তখন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানান রাজ্যের ঘাটতির কথা। তিনি উল্লেখ করেন ২০১১ সালে সহজে ব্যবসা করার মাপকাঠির বিচারে রাজ্যের স্থান ছিল ১৭-য়। অর্থাৎ তালিকায় প্রায় শেষের দিকে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন এই খামতি পূরণ করতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার, বিদ্যুৎ, শিল্প, শ্রম, পরিবেশ, পঞ্চায়েত, অর্থ, নগরোন্নয়ন ও দমকল দফতরে বিভিন্ন নিয়ম তৈরি হয়ে গিয়েছে।

সেই নিয়ম মেনে কতটা কাজ হয়েছে, তার আভাস দেবে বিশ্বব্যাঙ্কের ক্রম তালিকা।

Central profit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy