শুরুতেই মারকাটারি ব্যাটিং নয়। বরং যথেষ্ট ধীর গতিতে শেয়ার বাজারে পা ফেলল টাটা গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা টাটা ক্যাপিটাল। সোমবার, ১৩ অক্টোবর বম্বে এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে এর ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং’ বা আইপিও-র হল তালিকাভুক্তি। ওই সময় দেড় শতাংশও চড়েনি টাটা ক্যাপিটালের শেয়ারের দাম। এর জন্য কি দায়ী শতাব্দীপ্রাচীন সংস্থাটির অন্তর্কলহ? উঠছে প্রশ্ন।
টাটা ক্যাপিটালের আইপিওর প্রাইস ব্যান্ড ছিল ৩২৬ টাকা। এ দিন তালিকাভুক্তির সময়ে ৩৩০ টাকা ওঠে আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাটির স্টকের দর। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে (এনএসই) দাম ছিল আরও কম। সেখানে তালিকাভুক্তির পর শেয়ারের দাম ৩২৬.৮৫ টাকায় নেমে যায়। সব মিলিয়ে মাত্র ১.২৩ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে স্টকের দুনিয়ায় পথ চলা শুরু করল সংশ্লিষ্ট সংস্থা।
উল্লেখ্য, টাটা ক্যাপিটালের আইপিওর তালিকাভুক্তির মুখে ‘ইতিবাচক’ রেটিং দিয়েছিল ব্রোকারেজ ফার্ম এমকে গ্লোবাল এবং জেএম ফিন্যান্সশিয়াল। অন্তত ৩৬০ টাকা শেয়ারের দাম নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি স্টকের দুনিয়ায় পা রাখবে বলে মনে করেছিল তারা। যদিও বাস্তবে তা হয়নি। এর জেরে দীপাবলির আগে লগ্নিকারীদের অনেকেই যে হতাশ হলেন, তা বলাই বাহুল্য।
এই পরিস্থিতিতে টাটা ক্যাপিটালের স্টকে বিনিয়োগ কতটা যুক্তি সংগত, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। আর্থিক বিশ্লেষকদের বড় অংশই মনে করেন, ধীর গতিতে খেলা শুরু করলেও আগামী দিনে যথেষ্ট দামি হবে এর শেয়ার। তার অন্যতম কারণ হল আর্থিক সংস্থাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে টাটা গোষ্ঠীর ব্র্যান্ডের সুনাম। গত ৬-৮ অক্টোবর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট আইপিওটিতে আবেদনের সুযোগ পেয়েছিলেন লগ্নিকারীরা।
সম্প্রতি টাটা গোষ্ঠীতে অন্তর্দ্বন্দ্বের খবর প্রকাশ্যে আসে। শতাব্দীপ্রাচীন এই শিল্প সংস্থাটির মূল রাশ রয়েছে টাটা সন্সের হাতে। এর অধীনে ৩০টি নথিভুক্ত-সহ মোট ৪০০টি সংস্থা রয়েছে। কিন্তু টাটা সন্সের দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে টাটা ট্রাস্ট, যার বর্তমান সদস্য ছ’জন। এর মধ্যে চার জনই চেয়ারম্যান নোয়েল টাটার বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন বলে জানা গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এর জেরে শতাব্দীপ্রাচীন সংস্থাটির ভিতরে নাকি তৈরি হয়েছে ‘অভ্যুত্থান’ পরিস্থিতি। তারই প্রভাবে আইপিওর তালিকাভুক্তিতে পড়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকদের একাংশ।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)