আশঙ্কা মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯০ টাকা ছুঁয়েই ফেলল ডলার। মঙ্গলবার নজিরবিহীন তলানিতে নামল ভারতীয় মুদ্রা। তবে সেখানে দিন শেষ করল না। এক ডলার ৪২ পয়সা উঠে থিতু হল ৮৯.৯৫ টাকায়। ভারতীয় মুদ্রার সর্বনিম্ন দাম এটাই। বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি বছরের শেষে যে ডলার ৯০ টাকা হতে পারে, তা আঁচ করছিলেন তাঁরা। এ বার তার ৯০ পেরনো শুধু সময়ের অপেক্ষা। আমেরিকার চড়া শুল্কের জেরে যখন রফতানি থেকে আয় কমছে, তখন আমদানি খরচ বাড়াচ্ছে তলানিতে ঠেকা টাকার দাম। এতে বিপাকে পড়বে অর্থনীতি। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অবিলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত।
তিনটি লেনদেন ধরে লাগাতার নামছে শেয়ার বাজারও। এ দিন সেনসেক্স ৫০৩.৬৩ পয়েন্ট পড়ে দাঁড়ায় ৮৫,১৩৮.২৭ অঙ্কে। নিফ্টি ১৪৩.৫৫ নেমে ২৬,০৩২.২০। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বাণিজ্য, অর্থনীতি-সহ নানা সমস্যার কারণে কেউ বেশি দিন শেয়ার ধরে রাখতে সাহস পাচ্ছেন না। বিশ্ব বাজারের অনিশ্চয়তা তো আছেই। তার উপর ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কথা চলছে বলে মোদী সরকার বহু দিন ধরে দাবি করলেও সেই সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা হচ্ছে না। এতেও চড়ছে উদ্বেগ। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ফের ভারতে শেয়ার বিক্রি করছে। ফলে এক দিকে সূচক পড়ছে, অন্য দিকে ধাক্কা খাচ্ছে টাকার দাম। কারণ, মুনাফা নিয়ে দেশে ফিরতে তারা ডলার কিনছে ঢেলে। যা আরও টেনে নামাচ্ছে ভারতের মুদ্রাকে।
বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর দাবি, আর্থিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়ছে শেয়ার ও মুদ্রায়। টাকা লাগাতার পড়ায় তেল-সহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানি খরচ বাড়ছে। ঘাটতিকে লক্ষ্যের মধ্যে বেঁধে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে পারে কেন্দ্র। বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রিও চাপ বাড়াচ্ছে। তিনি বলছেন, ‘‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানো নিয়ে ধোঁয়াশা লগ্নিকারীদের ধন্দে ফেলেছে। এতে যোগ হয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানো নিয়ে সংশয়।’’ পটনা আইআইটি-র অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের দাবি, ‘‘৯০ টাকার কাছে চলে এসেছে ডলার। এ বার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপ জরুরি। না হলে বাজার আরও দুর্বল হবে। আশা করছি, আসন্ন ঋণনীতি ঘোষণায় কিছু পদক্ষেপকরবে তারা।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)