শুল্ক নিয়ে আশঙ্কা ছিলই। অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণায় সত্যি হল সেটা। আমেরিকার পার্লামেন্ট তথা কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে ‘পারস্পরিক শুল্ক’র (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। এর প্রভাবে ভারতের অর্থনীতি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, চলতি বছরের ২ এপ্রিল থেকে নয়া শুল্ক নীতি চালু করবে যুক্তরাষ্ট্র। এতে আমেরিকার বাজারে দামি হবে ভারতীয় পণ্য। ফলে সেগুলির বিক্রি কমার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে কমতে পারে রফতানি। শুধু তা-ই নয়, দেশীয় সংস্থাগুলির লাভের অঙ্ক হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
যদিও এই যুক্তি মানতে রাজি নয় জাপানি সংস্থা নোমুরা। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ট্রাম্পের ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির ফলে এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভারতই একমাত্র কম ঝুঁকির জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। কারণ, এর ফলে নয়াদিল্লির সামনে গোটা ইউরোপের বাজার খুলে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুল্ক যুদ্ধ শুরু করতেই ভারত সফরে আসেন ইউরোপীয় ইউনিয়ানের (ইইউ) প্রধান উরসুলা ফন ডার লিয়েন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সূত্রের খবর, ট্রাম্পের শুল্ক-বাণ এড়াতে খুব দ্রুত ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সেরে ফেলবে ইইউ। সে ক্ষেত্রে ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি বা বেলজ়িয়ামের মতো পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির বাজারে পা জমানোর সুযোগ পাবে এদেশের সংস্থাগুলি।
অন্য দিকে ট্রাম্পের ‘পারস্পরিক শুল্ক’র বোঝা সামলাতে ইতিমধ্যেই আমেরিকা সফরে গিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। সমস্যা মেটাতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওয়াশিংটন তাতে শেষ পর্যন্ত রাজি হলে, আর্থিক দিক থেকে আখেরে লাভবান হবে নয়াদিল্লি, বলছেন বিশ্লেষকেরা।
আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের ‘পারস্পরিক শুল্ক’র ঘোষণার পর কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ভারতের শেয়ার বাজার। এর জেরে বুধবার, ৫ মার্চ প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকা ফেরত পেয়েছেন লগ্নিকারীরা। অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘ট্রাম্প যদি ভারতের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তে অটল থাকেন, তা হলে তার বিরূপ প্রভাব দেশের রফতানি বাণিজ্যে পড়বে। বর্ধিত শুল্ক দীর্ঘ দিন চললে রফতানি ভিত্তিক সংস্থার শেয়ারের দাম পড়তে পারে।’’
রফতানি সংগঠন ফিয়ো-র ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সহায় আবার বলেছেন, ‘‘আশা করি আলোচনার মাধ্যমে জটিলতা কমবে। সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের ভারত সফরে আশার কথা রয়েছে। তখন দু’দেশের বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে। যার মধ্যে শুল্কের বিষয়টি থাকতে পারে।’’