প্রতীকী ছবি
আইডিয়ার সঙ্গে মেশার পরে গ্রাহক সংখ্যার বিচারে বছর কয়েক আগেও দেশে বৃহত্তম টেলিকম পরিষেবা সংস্থা ছিল তারা। এখন যে জায়গা তিন নম্বরে। বুধবার সেই ভোডাফোন আইডিয়াই (ভিআইএল) জানাল, গত অর্থবর্ষে ৭৩,৮৭৮ কোটি টাকা নিট লোকসান গুনেছে তারা। যা শুনে নতুন করে সংস্থার আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন সংস্থাটির অগুনতি গ্রাহক। ফের সংশয় তৈরি হয়েছে এই প্রশ্নে, এত ক্ষতি ঘাড়ে নিয়ে তারা এ দেশে ব্যবসা চালাতে পারবে তো? নিরবচ্ছিন্ন ভাবে দিতে পারবে পরিষেবা? হালে যে পরিষেবায় নেট সংযোগ ঠিক মতো না-পাওয়া নিয়ে অভিযোগ বিস্তর।
ভিআইএল অবশ্য বলছে, ক্ষতি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরকে (ডট) দেওয়ার জন্য স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি-র বকেয়া অর্থ তুলে রাখতে গিয়ে। আসলে তাদের আয় বেড়েছে।
ডট-এর হিসেব অনুযায়ী বকেয়ার টাকা অবশ্য কিস্তিতে মেটানোর আর্জি জানিয়েছেন ভোডাফোন ও আইডিয়ার শীর্ষ কর্তারা। বলেছেন, এই সুরাহা না-পেলে ব্যবসার চালানো অসম্ভব। নতুন পুঁজি ঢালতেও অনীহা তাঁদের। শীর্ষ আদালত এ ব্যাপারে কী রায় দেয়, তার উপর তাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
টালমাটাল
• গত অর্থবর্ষে (২০১৯-২০) নিট লোকসান ৭৩,৮৭৮ কোটি টাকা।
• কোনও ভারতীয় সংস্থা কখনও গোটা অর্থবর্ষে এত ক্ষতি দেখেনি।
• অক্টোবর-ডিসেম্বরের তুলনায় জানু-মার্চ ত্রৈমাসিকে ক্ষতি বেড়ে ১১,৬৪৩ কোটি।
আশঙ্কা
• নতুন লগ্নি না-হলে, আর্থিক চাপে পরিষেবা ও পরিকাঠামো উন্নয়ন ধাক্কা খেতে পারে।
• বকেয়া মেটাতে না-পারলে পরিষেবা চালু রাখা নিয়ে শঙ্কা।
• গ্রাহক কমে ২৯.১ কোটি।
সংস্থার দাবি
• সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি-র বকেয়া অর্থ (৫০,০০০ কোটি) সংস্থান করায় ক্ষতি বেড়েছে।
• ডটের হিসেবে বকেয়া ৫৮,২৫৪ কোটি। সংস্থার দাবি, ৪৬,০০০ কোটি। ৬৮৫৪ কোটি মিটেছে।
• হিসেব পদ্ধতির ফারাক থাকায় আগের অর্থবর্ষের সঙ্গে তুলনা ঠিক নয়।
• গ্রাহক পিছু আয় ১১% বেড়ে হয়েছে ১২১ টাকা।
• ত্রৈমাসিকের হিসেবেই সার্বিক আয় বেড়েছে ৬%।
আরও পড়ুন: সোনার দামে রেকর্ড, ৫০ হাজার পার রুপোও
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, রিলায়্যান্স জিয়ো বাজারে আসার পরে তীব্র মাসুল যুদ্ধ থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের কেন্দ্রকে বকেয়া মেটানোর নির্দেশ— ভিআইএলের হিসেবের খাতা দুর্বল করেছে এই সব কিছুই। তবে গত ডিসেম্বরে মাসুল বৃদ্ধি কিছুটা স্বস্তি দেয়। কেন্দ্র স্পেকট্রাম ও লাইসেন্সের খরচ মেটানো দু’বছরের জন্য স্থগিত রেখেছে। বকেয়া মেটানোর বিকল্প নিয়েও সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলছে। এই অবস্থায় ভিআইএলের আর্থিক ফল নতুন করে সংশয়ের মেঘ বুনতে পারে, আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের। তবে উপদেষ্টা সংস্থা সিএলএসএ-র মতে, এর মধ্যেই রূপোলি রেখা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সংস্থার গ্রাহক পিছু ও সার্বিক আয় বৃদ্ধি। শিল্পের আর্জি মেনে আগামী দিনে ন্যূনতম মাসুল স্থির হলে, আয় আরও বাড়তে পারে। তখন সংস্থার প্রোমোটারেরাও নতুন দিশা পেয়ে টাকা ঢালতে রাজি হতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy