জিএসটি-র যুগে রাজ্যের নিজস্ব আয়ের রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়েছে। তারই মধ্যে যে দু’টি ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, সেগুলি হল আবাসন ও আবগারি। বুধবার ২০২৫-২৬ সালের বাজেট নথিতে স্পষ্ট, জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও মদ বিক্রি থেকে আয় বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছে রাজ্য।
বাজেট নথিতে জানানো হয়েছে, জমি-বাড়ি বিক্রির রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে আগামী অর্থবর্ষে ১০,১০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যা চলতি বছরের সংশোধিত আদায়ের (৭৮৮৫ কোটি টাকা) থেকে প্রায় ২৮% বেশি। সরকারের আশা, আবগারি ক্ষেত্রে অর্থাৎ মদ বিক্রি থেকে আয় ১০.৩% বেড়ে পৌঁছতে পারে ২২,৫৫০ কোটিতে। এ বছরের সংশোধিত আয় যেখানে ২০,৪৪৪ কোটি। এর পাশাপাশি, জিএসটি খাতে আয় ৮.৫% বেড়ে ৪৯,৭৭২ কোটি টাকা হতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য। তাদের আর এক বড় আয়ের জায়গা বিক্রয় কর। রাজ্যের দাবি, এই খাতে রাজস্ব ৮.৯% বেড়ে পৌঁছতে পারে ১৩,৯০৫ কোটি টাকায়।
সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, গত কয়েক বছরে সারা দেশের মতো এ রাজ্যেও দামি আবাসনের বিক্রি বেড়েছে। বিক্রি বেড়েছে মদেরও। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই আয়ের লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করেছে সরকার। তবে অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা যদি বাজেট নথি দেখি, তা হলে দেখব আবগারি ক্ষেত্রে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ২০% বেশি রাজস্ব আসবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত রাজস্বের অঙ্ক বলছে, বৃদ্ধি হয়েছে ১২%-১৩%। সেখান থেকেই শিক্ষা নিয়ে এ বার ১০.৩% বৃদ্ধি হবে ধরে নিচ্ছে রাজ্য। সে দিক থেকে এটি রাজ্যের পক্ষে নেতিবাচক।’’ আবার স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন থেকে চলতি অর্থবর্ষে আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫০০ কোটি টাকা বেশি হয়েছে। অজিতাভবাবুর বক্তব্য, সে কারণেই এ বার এই ক্ষেত্রে ২৮% বৃদ্ধির আশা করছে রাজ্য। স্ট্যাম্প ডিউটির ছাড় উঠিয়ে দেওয়ার ফলেও আয় বেড়েছে রাজ্যের।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)