কয়লা ক্ষেত্রের সংস্কারে অটল কেন্দ্র। খনিকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকার হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে না বলেই এই শিল্পে গত চল্লিশ বছরের মধ্যে বৃহত্তম ধর্মঘট উঠে যাওয়ার একদিনের মাথায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কয়লা ও বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।
পাঁচটি ধর্মঘটী ইউনিয়নের সঙ্গে দীর্ঘ ছ’ঘণ্টার বৈঠকে বুধবার তাদের আশ্বস্ত করেন গয়াল। যার জেরে পাঁচদিনের ধর্মঘট উঠে যায় দু’দিনেই। কিন্তু বৃহস্পতিবার গয়ালই জানিয়েছেন, কয়লা শিল্পের দরজা বেসরকারি সংস্থার জন্য খুলে দেওয়া থেকে পিছু হটবে না কেন্দ্র। পাশাপাশি থমকে যাবে না রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়ার ১০ শতাংশ শেয়ার বিলগ্নিকরণের উদ্যোগ।
ধর্মঘটী খনিকর্মীদের গয়াল আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, কোল ইন্ডিয়া বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা কেন্দ্রের নেই। সরকারি হাতেই থাকবে তার মালিকানা, ক্ষুণ্ণ হবে না কর্মীদের স্বার্থও। তাঁদের স্বার্থ দেখভালের জন্য একটি কমিটি গড়া হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর আশা, কোল ইন্ডিয়ার কর্মীরা কমিটির সামনে নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন। ফলে আর তাঁদের ধর্মঘট করার প্রয়োজন হবে না। তা ছাড়া সরকারের সঙ্গে আলোচনার দরজা সব সময়েই খোলা থাকবে।
তবে বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকেই গয়াল জানান, কর্মীদের সঙ্গে রফার অর্থ এই নয় যে, সংস্কারের পথ থেকে সরে আসবেন তাঁরা। তাঁর কথায়, “আমাদের কোনও পরিকল্পনাই একচুলও বদলাচ্ছে না।” মন্ত্রক সূত্রেও জানানো হয়েছে, কর্মীদের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি এবং কেন্দ্রের সংস্কার কর্মসূচির মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। তার কারণ, ১০% বিলগ্নিকরণের অর্থ বেসরকারিকরণ নয়, সংস্থার মালিকানা বদলও নয়। কিন্তু কয়লা শিল্পে দক্ষতা বাড়াতে বেসরকারি পুঁজির পথ প্রশস্ত করতে কেন্দ্র বদ্ধপরিকর। ন্যাশনাল মাইনওয়ার্কার্স ফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদক এস কিউ জামা-ও বলেছেন, “খনি শিল্পে বেসরকারি পুঁজি আনার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে রাজি হননি গয়াল। কিন্তু সরকার যে কোল ইন্ডিয়া পুরোপুরি বেসরকারি হাতে দিচ্ছে না, কর্মীরা সেটা জেনেই স্বস্তি পেয়েছেন।”
শিল্পমহলের ধারণা, কর্মীরা ভয় পাচ্ছেন যে, খনন ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা পা রাখলে কোল ইন্ডিয়াও প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে খরচ কমাতে বাধ্য হবে। যার জেরে কর্মী ও বেতন ছাঁটাই হতে পারে। তবে কয়লা শিল্পে দক্ষতা বাড়াতে ও দাম কমাতে সংস্কারকেই দাওয়াই হিসেবে মনে করছে কেন্দ্র। তার লক্ষ্য ২০১৯-এর মধ্যে ভারতের ১২০ কোটি মানুষের কাছে দিনরাত বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া। ডিসেম্বরেও কয়লা খনি নিলামে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণের পথ খুলে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা পা রাখলে গত ৪২ বছরে এই প্রথম বাণিজ্যিক খননে পা রাখতে পারবে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy