Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ধাপে ধাপে কৃষিতে বেসরকারি পুঁজি প্রবেশের পক্ষে সওয়াল

কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতির জন্য বেসরকারি ও বৃহৎ পুঁজির প্রয়োজন রয়েছে। কৃষকের সঙ্গে বাজারের যোগসূত্র স্থাপনের প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা নিয়ে বণিকসভা ফিকি-র সঙ্গে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, কলকাতা (আইআইএমসি) আয়োজিত সভায় সোমবার এ কথা বলেন রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের ভাইস চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার। পাশাপাশি, অর্থনীতির শিক্ষক অভিরূপবাবুর বক্তব্য, ধাপে ধাপে কৃষিতে সেই পুঁজির প্রবেশ কাম্য। আর, এই পরিবর্তনের জেরে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্যও শিল্পায়নই একমাত্র পথ।

অভিরূপ সরকার

অভিরূপ সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২৮
Share: Save:

কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতির জন্য বেসরকারি ও বৃহৎ পুঁজির প্রয়োজন রয়েছে। কৃষকের সঙ্গে বাজারের যোগসূত্র স্থাপনের প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা নিয়ে বণিকসভা ফিকি-র সঙ্গে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, কলকাতা (আইআইএমসি) আয়োজিত সভায় সোমবার এ কথা বলেন রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের ভাইস চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার। পাশাপাশি, অর্থনীতির শিক্ষক অভিরূপবাবুর বক্তব্য, ধাপে ধাপে কৃষিতে সেই পুঁজির প্রবেশ কাম্য। আর, এই পরিবর্তনের জেরে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাঁদের পুনর্বাসনের জন্যও শিল্পায়নই একমাত্র পথ।

বাজারে কৃষি পণ্য যে-দামে বিক্রি হয়, কৃষক তার সিকিভাগও পান না। লাভের গুড় খায় অন্যেরা। উপরন্তু সঠিক পরিকাঠামোর অভাবে নষ্ট হয় কৃষি পণ্যের অনেকটা। সেই সূত্রেই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, পরিকাঠামো নির্মাণ, বিপণন-সহ কৃষিতে বেসরকারি পুঁজি লগ্নি নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক চলছে। বিপুল বাজারের সম্ভাবনার প্রসঙ্গও উঠছে।

সভায় উপস্থিত ম্যারিকো ইন্ডিয়ার অন্যতম কর্তা প্রবোধ কুমার হ্যালদে-র হিসেবে, সারা দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের বাজার প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকার। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ অন্তত এক লক্ষ কোটি টাকার। তবে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিকাঠামোর অভাব এ ক্ষেত্রে বেসরকারি পুঁজির প্রয়োজনীয়তার পথ প্রশস্ত করছে। এই পুঁজি এলে সামাজিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে তার বিরূপ প্রভাব নিয়েই বিতর্ক চলছে। আশঙ্কা, তা নতুন জট তৈরি করবে। এ রকম বিভিন্ন জট কাটিয়ে সার্বিক ভাবে লাভজনক পরিস্থিতি তৈরির জন্য কী ধরনের নীতি প্রয়োজন, তা খতিয়ে দেখতে এ রাজ্যের চার জেলায় সমীক্ষা শুরু করেছে আইআইএমসি। সেখানকার শিক্ষক পার্থপ্রতিম পাল এ দিন জানান, ব্রিটিশ হাইকমিশন তাঁদের এই প্রকল্পের ভার দিয়েছে। প্রাথমিক কাজ শেষ হওয়ায় শীঘ্রই বর্ধমান, হুগলি, নদিয়া ও পূর্ব মেদিনীপুরে সরেজমিনে সমীক্ষার কাজ শুরু হবে। আগামী মার্চে এই সমীক্ষার রিপোর্ট ব্রিটিশ হাই কমিশনের পাশাপাশি কেন্দ্রকেও দেওয়া হবে। আম চাষেও আইআইএমসি একই সমীক্ষা করছে দক্ষিণ ভারতে।

অভিরূপবাবু অবশ্য কৃষিতে বৃহৎ পুঁজির প্রয়োগ কৌশল নিয়ে সতর্ক। তাঁর মতে, এই পুঁজির দীর্ঘমেয়াদি সুফল আছে। তবে স্বল্পমেয়াদে সঙ্কটে পড়তে পারেন মধ্যবর্তী ছোট ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি কৃষকের আয় বাড়লে পণ্যের দাম বাড়বে। সে ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের মানুষের (যাঁরা অন্যের জমিতে কাজ করেন) খরচও বাড়বে। এঁদের সকলের ক্ষতিপূরণের কথা মাথায় রেখেই সরকারকে নীতি প্রণয়নে জোর দেন তিনি। তাঁর মতে, আমজনতার পকেটে চাপ কমাতে বাধ্যতামূলক ভাবে কৃষককে পণ্যের একটা অংশ ন্যূনতম মূল্যে সরকারকে বিক্রি করতে হবে। এবং জোরদার করতে হবে সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থাও। স্বল্পমেয়াদে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, শিল্পায়নই তাঁদের একমাত্র বিকল্প রুজির সূত্র হতে পারে বলে মনে করেন অভিরূপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fdi abhirup sarkar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE