Advertisement
E-Paper

২৪ হাজার ছুঁল সেনসেক্স

শেয়ার বাজারের প্রত্যাশার সঙ্গে বুথ ফেরত সমীক্ষা মিলতেই ফের লাফ দিল সেনসেক্স। মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালীন এই প্রথম তা ঢুকে পড়ল ২৪ হাজারের ঘরে। ছুঁল নতুন মাইলফলক। এক সময় পৌঁছে গেল ২৪,০৬৮ পয়েন্টে। সেখান থেকে কিছুটা নেমে তা ২৩,৮৭১.২৩ অঙ্কে দৌড় শেষ করল ঠিকই। কিন্তু সেই উচ্চতাও আগের দিনের তুলনায় ৩২০ পয়েন্ট বেশি। বাজার বন্ধের সময়ের নিরিখে সর্বকালীন রেকর্ডও।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০১:৫৩
ফের নতুন রেকর্ড। মঙ্গলবার ভোপালে ব্রোকারদের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।

ফের নতুন রেকর্ড। মঙ্গলবার ভোপালে ব্রোকারদের উচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।

শেয়ার বাজারের প্রত্যাশার সঙ্গে বুথ ফেরত সমীক্ষা মিলতেই ফের লাফ দিল সেনসেক্স। মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালীন এই প্রথম তা ঢুকে পড়ল ২৪ হাজারের ঘরে। ছুঁল নতুন মাইলফলক। এক সময় পৌঁছে গেল ২৪,০৬৮ পয়েন্টে। সেখান থেকে কিছুটা নেমে তা ২৩,৮৭১.২৩ অঙ্কে দৌড় শেষ করল ঠিকই। কিন্তু সেই উচ্চতাও আগের দিনের তুলনায় ৩২০ পয়েন্ট বেশি। বাজার বন্ধের সময়ের নিরিখে সর্বকালীন রেকর্ডও।

শুক্রবার ৬৫০ পয়েন্ট। সোমবার ৫৫৬। মঙ্গলবার ৩২০। মাত্র তিন দিনেই ১,৫০০ পয়েন্ট উঠেছে সেনসেক্স। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে স্থায়ী ও শক্তিশালী সরকার তৈরির আশায় বেশ কিছু দিনই তড়তড়িয়ে উঠছে বাজার। শেষ দফার ভোটের পর তাতে প্রায় উল্কার গতি। বুথ ফেরত সমীক্ষায় মোদী-সরকার আসার ছবি স্পষ্ট হতে পারে, শুধু এই আশাতেই সোমবার সাড়ে পাঁচশো পয়েন্ট উঠেছিল সূচক। সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছিল বাজার বন্ধের পর। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ সমীক্ষাই মনে করছে, সরকার গড়ার ‘ম্যাজিক ফিগার’ (২৭২) ছুঁয়ে ফেলবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ। আর মূলত সেই খবরই এ দিন ঠেলে তুলেছে শেয়ার বাজারকে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যা পরিস্থিতি, তাতে বুথ ফেরত সমীক্ষার সঙ্গে ভোটের ফল সত্যিই মিলে গেলে, আরও হাজার দুয়েক পয়েন্ট উত্থানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তার পর? দীর্ঘ মেয়াদে এই উচ্চতা ধরে রাখা কি আদৌ সম্ভব হবে বাজারের পক্ষে? কিংবা যদি ভোটের ফল বাজারের পছন্দসই না হয়? যদি দেখা যায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা হাসিলের বেশ কিছুটা আগেই আটকে যাচ্ছে বিজেপির নৌকা? তখন? ওই দুই ক্ষেত্রেই কিন্তু বড় মাপের পতনের সম্ভাবনা থাকবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

তাঁদের যুক্তি, দেশের অর্থনীতিতে এমন কোনও মৌলিক পরিবর্তন হয়নি, যে তার দৌলতে এমন রকেট গতিতে দৌড়বে সেনসেক্স। বৃদ্ধি তলানিতে। ফের মুখ তুলছে মূল্যবৃদ্ধি। শিল্প সঙ্কুচিত। ডলারের তুলনায় টাকার দাম হালে কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু তা-ও মন্দের ভাল। ফলে বাজার ছুটছে কেন্দ্রে স্থায়ী-শক্তিশালী সরকার আসার আশায় ভর করে। কারণ অনেকে মনে করছেন, কেন্দ্রে মজবুত সরকার এলে, তারা সংস্কারে উদ্যোগী হবে। অর্থনীতির হাল ফেরাতে অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হবে না। কিন্তু সেই প্রত্যাশা না-মিটলে, বাজারে বড়সড় পতনের গন্ধ এখন থেকেই পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শেষ পর্যন্ত সরকার যদি ওই সব পদক্ষেপ করে, তা হলেও তার সুফল অর্থনীতিতে পুরোপুরি প্রতিফলিত হতে লাগবে অন্তত দু’বছর।

আর তাই এখন এই উঁচু বাজারে সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের সাবধানে পা ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। ফিনশোর ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের এমডি লক্ষ্মণ শ্রীনিবাসনের পরামর্শ, “যাঁরা ইতিমধ্যেই মুনাফায় রয়েছেন, শেয়ার বেচে লাভের টাকা তুলে নেওয়াই তাঁদের পক্ষে ভাল। আর যাঁরা লগ্নি করেননি, তাঁদের উচিত আপাতত হাত গুটিয়ে থাকা। ‘কারেকশন’ আসার পরই তাঁদের বাজারমুখী হওয়া শ্রেয়।” তা ছাড়া, প্রায় দু’মাস ধরে টানা লগ্নি করে যাওয়া বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি লাভ গুনতে এক বার শেয়ার বিক্রি শুরু করলেও বাজার দ্রুত পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রেও আগে থেকে লাভের টাকা না-তুললে সাধারণ লগ্নিকারীরা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে তাঁর মত।

বিশেষজ্ঞ অজিত দে-ও বলছেন, “মুনাফা করে আক্ষেপ করলে ক্ষতি নেই। কিন্ত আরও বেশি মুনাফার আশায় লোকসান করলে ক্ষতি আছে। তাই পারলে লাভের টাকা তুলে পরবর্তী সুযোগের অপেক্ষায় থাকুন। আর যাঁরা এখনও টাকা ঢালেননি, তাঁরা অপেক্ষা করুন সোমবার পর্যন্ত। শুক্রবার ভোটের ফল বেরোবে। শনি ও রবিবার বাজার বন্ধ থাকার কথা। ফলে সোমবারই বোঝা যাবে যে, অবস্থা কী দাঁড়াল।” উল্লেখ্য, শনিবার বাজারে বিশেষ লেনদেনের জন্য সেবির কাছে আর্জি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ মেম্বাসর্র্ অব ইন্ডিয়া। তবে তা নিয়ে সেবি এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি।

praggananda chowdhuri sensex bse nifty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy