Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিমানবন্দরে ধৃত ২ রোহিঙ্গা তরুণী-সহ তিন

পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়া দুই রোহিঙ্গা কন্যার নাম রফিকা খাতুন (২২) এবং নুর কায়দা খাতুন (২০)। 

মাঝরাতে কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়লেন দুই রোহিঙ্গা কন্যা।

মাঝরাতে কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়লেন দুই রোহিঙ্গা কন্যা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৯
Share: Save:

মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে শনিবার মাঝরাতে কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়লেন দুই রোহিঙ্গা কন্যা। রোজগারের আশায় এক ব্যক্তির হাত ধরে তাঁরা পাড়ি দিচ্ছিলেন নতুন দেশে। পুলিশ জানিয়েছে, বিদেশে কারও বাড়িতে কিংবা রেস্তরাঁয় কাজ দেওয়ার নাম করে এই যুবতীদের নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের দেহ ব্যবসায় নামানো হয়। বিদেশের মাটিতে পৌঁছে জমা দিতে হয় পাসপোর্ট। চাইলেও ফেরার পথ থাকে না তাঁদের।

পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়া দুই রোহিঙ্গা কন্যার নাম রফিকা খাতুন (২২) এবং নুর কায়দা খাতুন (২০)।

আদতে মায়ানমারের মোন্ডু জেলায় জন্ম দু’জনের। মাত্র ছ’মাস, এক বছর বয়সে তাঁরা চলে যান বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে। রফিকা ছিলেন টাঙাইল শিবিরে, নুর কক্সবাজারে। অভিযোগ, মাস ছয়েক আগে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বেআইনি ভাবে তাঁরা ভারতে ঢোকেন। তার পরে দালালদের সাহায্যে দু’টি ভারতীয় পাসপোর্ট জোগাড় করেন। সেখানে দু’জনেরই ঠিকানা ছিল পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি থানার দিশেরগড়। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে থাকার ফলে তাঁদের কথায় রয়েছে সিলেটি টান। ফলে তাঁরা ঠিক কী বলছেন, তা উদ্ধার করতে পারেননি তদন্তকারীরা। তবে শনিবার মাঝরাতে এক যুবকের সঙ্গে ধোপদুরস্ত জামাকাপড় পরা ওই দুই যুবতীকে দেখে সন্দেহ হয় কলকাতা বিমানবন্দরের অভিবাসন দফতরের অফিসারদের। কথা বলতে গিয়ে সন্দেহ হওয়ায় শুরু হয় জেরা। ভয় পেয়ে যান দুই যুবতী।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সঙ্গী যে যুবক ছিল, তার নাম কল্লোল মিত্র (৪৯) বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই কল্লোলকে চেপে ধরলে তার কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, কল্লোল আদতে শিলিগুড়ির বাসিন্দা। এর আগে রাজ্য সরকারের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার সিউড়ি ডিপোতে কাজ করত সে। বেশ কয়েক মাস আগে ডিপো থেকে তেল চুরির অভিযোগে তার চাকরি চলে যায় বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। পরে কল্লোল সিউড়িতেই থাকতে শুরু করে। পুলিশের সন্দেহ, নারী পাচার চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ হয় কল্লোলের। কল্লোলকে গ্রেফতার করে সোমবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে চার দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রেখে জেরা করার অনুমতি দেন। দুই রোহিঙ্গা যুবতীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই দুই যুবতীই বিবাহিতা। বাংলাদেশে শিবিরে থাকাকালীনই তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু অভাবের তাড়নায় তাঁরা রোজগারের রাস্তা খুঁজছিলেন। বাংলাদেশের এক দালালের সঙ্গে তাঁদের পরিচয় হয়। সে-ই মালয়েশিয়ায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাংলাদেশের ওই দালাল মারফতই মালয়েশিয়ার এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয় ওই দুই যুবতীর। পুলিশ সূত্রের খবর, বাংলাদেশের অনেকে ও দেশে গিয়ে পাকাপাকি ভাবে থেকে যাওয়ার অভিযোগ আছে। তাই সে দেশ থেকে ভিসা পেতে সমস্যা হয়। ঠিক হয়, দুই যুবতীকে ভারতে পাঠিয়ে এ দেশের পাসপোর্ট জোগাড় করে মালয়েশিয়া পাঠানো হবে।

ওই দালালের সাহায্য নিয়েই মাস ছয়েক আগে সীমান্ত পেরিয়ে তাঁরা ভারতে ঢোকেন। হাতবদল হয় কল্লোলদের দলের কাছে। কল্লোলের দাবি, সে প্রথম বার বিদেশে যাচ্ছিল। তার কাজ ছিল কুয়ালালামপুরে এক ব্যক্তির হাতে দুই যুবতীকে পৌঁছে দিয়ে ফিরে আসা। কলকাতাতেও বিমানবন্দরে অন্য এক জন এসে ওই যুবতীদের তার কাছে পৌঁছে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE