ধাক্কা: দুর্ঘটনার পরে সেই বাস। শুক্রবার, সল্টলেকে। নিজস্ব চিত্র
সিগন্যাল সবুজ হতেই দ্রুত গতিতে চার মাথা পার করলেন চালক। তার পরে স্টপে না দাঁড়িয়ে গতি আরও বাড়ল বাসের। অন্য বাসকে পাশ কাটাতে গিয়ে রাস্তার একেবারে ডান দিকে চলে গেল সেটি। তার পরেই সোজা ডিভাইডারে উঠে মেট্রোর স্তম্ভে সজোরে ধাক্কা। ভাল করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই কেউ সিট থেকে ছিটকে পড়লেন মেঝেয়, কারও মাথা গিয়ে লাগল জানলায়, কেউ বা হুমড়ি খেয়ে সামনে পড়লেন।
ওই দৃশ্য দেখেই ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। দ্রুত উদ্ধারকাজে হাত লাগান তাঁরা। আতঙ্কে তখন থরথর করে কাঁপছেন যাত্রীদের অনেকেই। হাসপাতালে গিয়েও অনেকের সেই আতঙ্ক কাটেনি। এই ঘটনার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই সরকারি তরফে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে সল্টলেকের উন্নয়ন ভবনের কাছে। যাত্রীরা জানান, রেষারেষি করতে গিয়েই বাসচালক ওই কাণ্ড ঘটান, যার জেরে অন্তত ৩৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। তবে পুলিশের দাবি, আহতের সংখ্যা ১২। তাঁদের সকলকেই বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এক জনকে পাঠানো হয় এনআরএসে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, এ দিন সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের দিক থেকে উল্টোডাঙার দিকে যাচ্ছিল হাওড়াগামী একটি বেসরকারি বাস। করুণাময়ী মোড় পার করে উন্নয়ন ভবনের কাছে আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি ডিভাইডারে উঠে মেট্রোর স্তম্ভে ধাক্কা মেরে কাত হয়ে যায়।
করুণাময়ী মোড় সংলগ্ন মেলা প্রাঙ্গণ থেকে দোকানিরা বেরিয়ে এসে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। সেখানে থাকা একটি মেডিক্যাল টিমও জরুরি পরিষেবা দিতে ছুটে আসে। উদ্ধারকাজে হাত লাগান পুলিশ ও ট্র্যাফিকের কর্মীরা। কিছু গাড়ি ও অটো জোগাড় করে হাসপাতালে পাঠানো হয় আহত কয়েক জনকে। কিছু সময় পরে পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্স এলে তাতেও পাঠানো হয় অনেককে।
আহতদের অভিযোগ, বাসটি রেষারেষি করছিল বলেই অত জোরে ছুটছিল। ওভারটেক করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। সোজা মেট্রোর স্তম্ভে গিয়ে ধাক্কা মারেন। সেই অভিঘাতে বাসের মধ্যে হুমড়ি খেয়ে পড়েন সকলে। ভেঙেচুরে যায় বেশ কিছু সিট। ছ’-সাত জনের মাথা ফেটে যায়।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিদিনই ওই রাস্তায় বহু বাস বেপরোয়া গতিতে ছোটে। কঠোর পদক্ষেপ না করলে সমস্যা মিটবে না। পুলিশের বক্তব্য, বারবার সচেতনতার বার্তা দেওয়া সত্ত্বেও চালকদের হুঁশ ফিরছে না। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy