Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে শিক্ষক-সঙ্কট মেটেনি, ফের পথে অভিভাবকেরা

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রাতঃ বিভাগে যেখানে ১৪ জন শিক্ষক থাকার কথা, সেখানে রয়েছেন ন’জন। পাঁচ জন শিক্ষক কম থাকায় মাঝেমধ্যেই ক্লাস হয় না।

প্রতিবাদ: প্রাতঃ বিভাগে যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে রাস্তা আটকে অবস্থানে হেয়ার স্কুলের পড়ুয়ারা। বুধবার, কলেজ স্ট্রিটে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

প্রতিবাদ: প্রাতঃ বিভাগে যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে রাস্তা আটকে অবস্থানে হেয়ার স্কুলের পড়ুয়ারা। বুধবার, কলেজ স্ট্রিটে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

প্রাতঃ বিভাগে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক নেই, এই অভিযোগে জুলাই মাসে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন হেয়ার স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের দাবি ছিল,
অবিলম্বে শিক্ষক-ঘাটতি মেটাতে হবে। এক মাস যেতে না যেতে সেই একই
দাবি নিয়ে বুধবার ফের কলেজ স্ট্রিট অবরোধ করলেন অভিভাবকেরা। অনেকেই সঙ্গে নিয়েছিলেন তাঁদের সন্তানদের। তাঁদের অভিযোগ, সমস্যার সমাধান এখনও পর্যন্ত হয়নি। যার
ফলে চরম অসুবিধায় পড়ছে তাঁদের ছেলেরা। বিক্ষোভের জেরে এ দিন সকাল ৭টা থেকে ১২টা, টানা পাঁচ ঘণ্টা আটকে থাকে কলেজ স্ট্রিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। বাস ও ছোট গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় সূর্য সেন স্ট্রিট দিয়ে। অফিস টাইমে গাড়ির চাপ পড়ে সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে।

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রাতঃ বিভাগে যেখানে ১৪ জন শিক্ষক থাকার কথা, সেখানে রয়েছেন ন’জন। পাঁচ জন শিক্ষক কম থাকায় মাঝেমধ্যেই ক্লাস হয় না। রণজিৎ ঘোষ নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘প্রাতঃ বিভাগে প্রি-প্রাইমারি সেকশন-সহ প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১১টি বিভাগ। অথচ, শিক্ষক মাত্র ৯ জন। আগামী ৩১ তারিখ অবসর নিচ্ছেন প্রাতঃ বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা। তখন শিক্ষকের সংখ্যা কমে দাঁড়াবে আটে। এ ভাবে পড়াশোনা হয়?’’ পিয়ালী পোদ্দার নামে আর এক অভিভাবকের অভিযোগ, ‘‘শিক্ষকের অভাবে কখনও কখনও দু’টো ক্লাস মিলিয়ে একসঙ্গে করা হচ্ছে। ফলে পড়াশোনা ঠিক মতো হচ্ছে না’’ মৌসুমী ঘোষ নামে এক অভিভাবক জানান, শিক্ষা দফতর বলেছিল, ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ হবে। কিন্তু ৪০ দিন পেরিয়ে গেলেও কিছু হয়নি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না। রাস্তায় দাঁড়িয়েই তিনি ঘোষণা করেন, ‘‘এই মুহূর্তে হেয়ার স্কুলে পাঁচ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হচ্ছে। তাঁরা বৃহস্পতিবার থেকেই পড়ানো শুরু করবেন।’’ কার্তিকবাবুর এই আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। পরে কার্তিকবাবু বলেন, ‘‘সরকার পোষিত স্কুল থেকে ডেপুটেশনের ভিত্তিতে পাঁচ জন শিক্ষককে নিয়োগ করা হল। স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এখানে পড়াবেন। শুধু হেয়ার স্কুলেই নয়, আরও যে সরকারি স্কুলগুলিতে শিক্ষকের ঘাটতি আছে, সেখানেও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ হওয়া পর্যন্ত ডেপুটেশনের ভিত্তিতে শিক্ষক দেওয়া হবে।’’ হেয়ার স্কুলের প্রাতঃ বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা তনুশ্রী নাগ বলেন, ‘‘আমরা পাঁচ জন শিক্ষকের নাম ইতিমধ্যেই পেয়েছি। এ বার রুটিন করা সহজ হয়ে যাবে।’’

যদিও সরকারি স্কুলগুলিতে কেন স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলে বহু দিন ধরেই সরব শিক্ষক সংগঠনগুলি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘কোচবিহার, পুরুলিয়ার সরকারি স্কুলেও পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় বিক্ষোভ হয়েছে। ডেপুটেশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করে সমস্যার সমাধান হবে না। শিক্ষক নিয়োগের যে পদ্ধতি, অর্থাৎ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে অবিলম্বে সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hare School Agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE