প্রতীকী ছবি
করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় এক রোগীকে ঘরে তালাবন্দি করে রাখা হল ২০ ঘণ্টা! অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সারা দিন ঘরবন্দি অবস্থায় কেটে যাওয়ার পরে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্স এসে ওই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, করোনা-আক্রান্তদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর কথা বারবার প্রচার করা হলেও তাতে আদৌ কেউ কান দিচ্ছেন কি?
সূত্রের খবর, ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দপুরের এক যুবক। তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বুধবার রাত ১১টা নাগাদ স্বাস্থ্য দফতর থেকে ফোন করে ওই যুবকের বাবাকে জানানো হয়, ছেলে করোনা পজ়িটিভ। ওই যুবকের এক আত্মীয় জানান, ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে এসে ওই যুবক, তাঁর বাবা ও এক আত্মীয় কাছেই একটি বাড়িতে ঘর ভাড়া করেছিলেন। বুধবার রাতে স্বাস্থ্য ভবন থেকে ফোনে ওই যুবকের বাবাকে বলা হয়, তাঁরা সকলেই যেন বাড়িতে থাকেন। ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ, কোন হাসপাতালে নেওয়া হবে, কখন অ্যাম্বুল্যান্স আসবে, সে সব কিছুই তাঁদের জানানো হয়নি।
এর পরে বুধবার সারা রাত কেটে গেলেও কোনও অ্যাম্বুল্যান্স আসেনি। এ দিকে, ওই যুবকের করোনা ধরা পড়ার খবর বৃহস্পতিবার সকালে এলাকায় জানাজানি হতেই তাঁরা যে বাড়িতে ভাড়া ছিলেন, সেই বাড়ির লোক বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।
ওই ঘরে বন্দি থাকা প্রসঙ্গে আক্রান্ত যুবকের বাবা ফোনে বলেন, ‘‘একটা ছোট ঘরে আমরা তিন জন আটকে ছিলাম। বাইরে থেকে দরজা বন্ধ। খাবারদাবার কিছু ছিল না। সঙ্গে যেটুকু মুড়ি ছিল, সেটাই খেয়েছি। ওইটুকু ঘরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তিন জনের থাকাটাও খুব কঠিন।’’ ওই রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন যদি অ্যাম্বুল্যান্সের দ্রুত ব্যবস্থা করতে পারত, তা হলে এই ভাবে সারা দিন তাঁদের আটকে থাকতে হত না।
অন্য দিকে, স্থানীয় হরিদেবপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তাদের থানা এলাকায় ছ’জন করোনা পজ়িটিভ রোগীর সন্ধান মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতরকে ফোন করলেও তারা অ্যাম্বুল্যান্স পাঠাতে দেরি করছে। করোনা পজ়িটিভ রোগীদের হাসপাতালে পাঠানোর জন্য পুলিশের নিজস্ব কোনও অ্যাম্বুল্যান্স নেই।
যে বাড়িতে ওই রোগী ছিলেন, সেই বাড়ির লোকজন যে ওই রোগী ও তাঁর পরিজনেদের আটকে রেখেছেন, সেই ঘটনার কথা জানা সত্ত্বেও পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিল না? এর অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, বিষয়টি জেনে স্বাস্থ্য ভবনই অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে রোগীকে ভর্তি করিয়েছে। যদিও পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স বিভাগ জানিয়েছে, স্বাস্থ্য ভবন থেকে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর নির্দেশ পায়নি তারা।
আরও পড়ুন: দোকানির করোনা, বন্ধ হল নিউ মার্কেটের একাংশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy