Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: টাকাকড়ির বর্ণময় জগৎ

সংগ্রহ করা যাবে বাতিল ব্যাঙ্কনোটের টুকরোয় তৈরি নানাবিধ শৌখিন সামগ্রী, স্মারক। গত ১১ মার্চ খুলে দেওয়া হয়েছে এটি। মঙ্গল থেকে রবিবার, ১০-৫ টা খোলা সংগ্রহশালাটি।

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

লবণ, চিজ়, তিমি মাছের দাঁত, শস্যদানা— খ্রিস্টজন্মের বহু আগে এগুলিই বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হত! কড়ি এসেছে অনেক পরে। বিশ্বের প্রথম মুদ্রার সন্ধান মেলে তুরস্কের লিডিয়াতে আর এ দেশে ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুরে। পরে মহাজনপদগুলিতে চালু হয় ছাপচিহ্নযুক্ত মুদ্রা। ও-দিকে, তাং-মিং বা সং রাজাদের সময় চিনে চালু হয়েছিল কাগজের নোট। চিনেই চালু ছিল ছুরি আকৃতির ধাতব মুদ্রা, যার এক পিঠে ভেড়া অথবা মাছের চিত্র উৎকীর্ণ থাকত। তালিকায় রয়েছে ইয়াপ স্টোন, নব্যপ্রস্তর যুগের অস্ত্র, বালা বা বুলেট আকৃতির ‘ফানি মানি’ও। এখন আমাদের হাতে চলে এসেছে চিপ-কার্ড, ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল মুদ্রা! সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রার বিবর্তন এবং তারই সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আর্থ-সামাজিক ইতিহাস নিয়েই সেজে উঠেছে শহরের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক মিউজ়িয়াম। মুদ্রার ইতিহাস দিয়ে শুরু করে আধুনিক মুদ্রা ব্যবস্থার খুঁটিনাটি সমস্তই রয়েছে এখানে। কলকাতা শহর থেকেই কাজ শুরু করেছিল ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই সময় তার কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিল ৮ কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটের বাড়িটি। বর্তমানে এই হেরিটেজ ভবনেই গড়ে উঠেছে মিউজ়িয়াম। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ‘পাই’ ছিল ভারতবর্ষের সর্বনিম্ন মুদ্রা, তিন পাইতে ছিল এক পয়সা। পরে এটি বন্ধ হয়ে যায়। দেশের আর্থিক সুস্থিতির লক্ষ্যেই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা হয়। তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর স্যর জেমস টেলরের উদ্যোগে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতীকচিহ্ন নির্বাচিত হয় বেলভেডিয়ার হাউসের তোরণের উপরের বাঘের মূর্তিটি, পিছনে যুক্ত হয় খেজুর গাছ। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক ১৯৪৯ সালে রাষ্ট্রীয় সংস্থায় রূপান্তরিত হয়। এক টাকার মুদ্রা আকৃতির প্রবেশদ্বারের পরেই রয়েছে মুদ্রার বিবর্তন নিয়ে একটি ভাস্কর্য। বিমুদ্রাকরণ-সহ এই ব্যাঙ্কের উল্লেখযোগ্য ঘটনাক্রম প্রদর্শিত হয়েছে এখানে। বর্তমান স্বর্ণ-মানক ব্যবস্থাপনায় দেশগুলি তার নিজের টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে একমাত্র নিজেদের সোনা সঞ্চয়ের ওপর ভিত্তি করে। এই তালিকায় সর্বোচ্চ স্থানে আমেরিকা আর ৫৫৮ টন সোনা নিয়ে ভারতের স্থান ১১। সোনার সিন্দুকে ঢুকে এক হাতে তুলে দেখা যাবে ১২.৫ কেজি স্বর্ণখণ্ডটি। নিজের ওজন মিলিয়েও নিতে পারবেন সোনার মাপে। রয়েছে শিশুদের জন্য গেমিং জ়োন, যেখানে খেলতে খেলতেই ওরা শিখে যাবে ব্যাঙ্ক এবং ব্যবসার নানা জটিল বিষয়। গবেষকদের জন্য রয়েছে ছোট্ট একটি গ্রন্থাগার। লন্ডনে ১৮০৭ সালে তৈরি বন্ড ছাপানোর মেশিনে এখনও ছাপা হচ্ছে খুদে দর্শনার্থীদের শংসাপত্র। সংগ্রহ করা যাবে বাতিল ব্যাঙ্কনোটের টুকরোয় তৈরি নানাবিধ শৌখিন সামগ্রী, স্মারক। গত ১১ মার্চ খুলে দেওয়া হয়েছে এটি। মঙ্গল থেকে রবিবার, ১০-৫ টা খোলা সংগ্রহশালাটি।

প্রণতিপত্র

‘‘মারা যাবার পরে সবাই ভাল ভাল কথা বলে জানি, তখন শত্রুও মিত্র হয়ে যায়। কিন্তু বেঁচে থাকতে এত আদর! এমন যে ভালবাসার কপাল করে এসেছিলুম, এত বছর না বাঁচলে তো সেটা জানতেও পারতুম না’’— তাঁর ৭৫-এর জন্মদিনে ‘অহর্নিশ’ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বকীয় ভঙ্গিতে কথাগুলি বলেছিলেন সদ্যপ্রয়াত নবনীতা দেব সেন (১৯৩৮-২০১৯)। সেই অনুষ্ঠানে তাঁর এক পাশে অশোক মিত্র, তপন রায়চৌধুরী, অন্য পাশে শঙ্খ ঘোষ ও অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। দুর্লভ-ফ্রেম সেই ছবি মুদ্রিত হয়েছে ‘অহর্নিশ’-এর সদ্য প্রকাশিত ‘নবনীতা দেব সেন সম্মাননা’ সংখ্যায়। তাঁকে নিয়ে ২৪টি প্রবন্ধ, সংবাদ সঙ্কলন, সাক্ষাৎকার ছাড়া সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত, যশোধরা বাগচী ও সুচিত্রা ভট্টাচার্যের অপ্রকাশিত নবনীতা-কথন, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তর একাধিক কবিতার কোলাজ। শুভাশিস চক্রবর্তী সম্পাদিত সংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ গ্রন্থপঞ্জি ও কর্মপঞ্জি। সঙ্গে নানা ছবি। উত্তরপ্রজন্মের পক্ষ থেকে তৈরি এই সুন্দর প্রণতিপত্রটি প্রিয় লেখকের হাতে তুলে দেওয়ার আগেই চিরতরে ঠিকানা বদল করলেন তিনি। সে যন্ত্রণায় শোকস্তব্ধ অহর্নিশ। সঙ্গের ছবিতে স্নাতকস্তরে নবনীতা।

সম্পদ ও সঙ্কট

জলের মতো কঠিন জিনিস যে আর নেই, ভারতবাসী বিলক্ষণ টের পাচ্ছে। ভারতে কি জলের অভাব? দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে প্রতি বছর যে বন্যা হয়, সেই জল যদি কোনও ভাবে নিয়ে যাওয়া যায় খরাপীড়িত অঞ্চলে, জলের সাম্য তৈরি করা যায় কি? নদী-বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র জানালেন, এটা অবাস্তব ভাবনা। সবুজ বিপ্লবে যেমন ভাবা হয়েছিল, নদীতে বাঁধ দিয়ে সেই জল সমান ভাবে পৌঁছে দেওয়া যাবে দেশের সর্বত্র, আর চাষ করা যাবে জলনিবিড় শস্য। জল পৌঁছয়নি, কিন্তু বীজের ধরন পাল্টে কৃষিতে জলের চাহিদা বেড়েছে বিপুল। প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। এমনই সব সমস্যার কথা আলোচনা করবেন কল্যাণবাবু, ফ্রেন্ডজ় অব ডেমোক্র্যাসি আয়োজিত ‘ভারতবর্ষের জল সম্পদ ও জল সঙ্কট’ শীর্ষক আলোচনাসভায়। ১৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশুদ্ধানন্দ সরস্বতী বিদ্যালয়ে।

কবিতার স্মৃতি

কবিতার ভূমিকা কী? কবিতা কি মানুষের ইতিহাসের ধারাকে প্রভাবিত করতে পারে? এমন নানা প্রশ্ন হয়তো একদা জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের কবিমনে আলোড়ন তুলত তাঁর ফ্যাসিবিরোধী আন্দোলনের অথবা দিল্লিপ্রবাসের দিনগুলিতে। এই নিয়েই তাঁর নামাঙ্কিত বক্তৃতাটির বিষয়: ‘কবিতার স্মৃতি, ইতিহাসের ভবিষ্যৎ’। বলবেন স্বপন চক্রবর্তী। ১৮ নভেম্বর সন্ধে ৬টায় ত্রিগুণা সেন প্রেক্ষাগৃহে। সে সন্ধ্যায় প্রকাশ পাবে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র স্মারক বক্তৃতামালার প্রথম খণ্ডটি (সপ্তর্ষি), যাতে সঙ্কলিত হয়েছে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিয়কুমার বাগচী, মার্টিন কেম্পশেন, উমা দাশগুপ্ত এবং সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বক্তৃতা। বইটি উন্মোচন করবেন বিভাস চক্রবর্তী। শেষ পর্বে দেবাশিস রায়চৌধুরীর পরিচালনায় ‘হাম দেখেঙ্গে’— গণনাট্য সঙ্ঘের নির্বাচিত গানের পরিবেশন। আয়োজনে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।

গোপাষ্টমী

কথিত আছে, কার্তিক মাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ গোচারণ করেছিলেন, তাই এই দিনটি পালিত হয় ‘গোপাষ্টমী’ হিসেবে। পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে এ দিন গোমাতাকে পুজো করা হয়। মূলত কলকাতার রাস্তাঘাটে নিরাশ্রয় গরুদের আশ্রয় দান ও তাদের যত্নে পালন ভাবনায় ৩৪ আর্মেনিয়ান স্ট্রিটে ১৮৮৫-তে প্রতিষ্ঠিত কলিকাতা পিঁজরাপোল সোসাইটি-র উদ্যোগে এই দিন গোপাষ্টমী পুজো আয়োজিত হয় কলকাতা ও হাওড়া মিলিয়ে আশিটি কেন্দ্রে। সকাল ৭-১১:৩০টার মধ্যে প্রায় দেড় লক্ষাধিক ভক্ত পুজো করেন। নবীনরাও গোপাষ্টমী পুজোয় শামিল হয়েছেন। যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করেন সংস্থার সদস্যরা। পাচারে উদ্ধার এক হাজার গরুকে বর্ডার সিকিয়রিটি ফোর্স এই সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে।

লোকসংস্কৃতিবিদ

ভারতের উত্তর-পূর্ব পার্বত্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন বহু বছর। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকসংস্কৃতি গবেষণা ও সংগ্রহালয় প্রকল্পের অধিকর্তার দায়িত্বও সামলেছেন। ভারতীয় লোকগাথা কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১৯৯০ থেকে। তাঁর লোকসংস্কৃতিচর্চা-ভিত্তিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে দেশ-বিদেশে। উত্তর-পূর্ব ভারতের জনজাতি ও তাঁদের সংস্কৃতি নিয়ে তাঁর বইয়ের অন্যতম— ‘লোকসংস্কৃতি: তত্ত্ব জিজ্ঞাসা’ এবং ‘লোকসংস্কৃতি: প্রশ্ন অপ্রশ্ন’। তাঁর লেখা ও সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা ষোলো। তার মধ্যে রয়েছে একটি ছোটগল্পের সঙ্কলনও। ৮২ বছর বয়সে ১ নভেম্বর চলে গেলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লোকসংস্কৃতিবিদ সৌমেন সেন।

সাইকেল যাত্রা

ডায়াবিটিস এই শতাব্দীর নিঃশব্দ ঘাতক। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে। সেই অভাব দূর করতেই ২০০৬ থেকে সক্রিয় ‘ডায়াবিটিস অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড ইউ’ (ডে)। ২০১৬-য় এই সংস্থার হাত ধরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে ভারতের প্রথম ডায়াবিটিস সচেতনতামূলক সিনেমা প্রদর্শিত হয়। এ বার তাদের উদ্যোগ ইন্দো-বাংলাদেশ সাইকেল অভিযান। ‘ডে’র স্বেচ্ছাসেবী ও কলকাতার সাইক্লিস্ট সম্রাট মৌলিক ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে ৩০০০ কিমি সাইকেল অভিযান শুরু করেন। বাংলাদেশের ২১টি জেলার ১১০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে আখাউড়া সীমান্ত পেরিয়ে আগরতলা পৌঁছন। ত্রিপুরা মেঘালয় অসম পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের ২৪টি জেলার ১৯০০ কিমি পথ পেরিয়ে এই সাইকেল যাত্রা শেষ হবে কলকাতায়, ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবিটিস দিবসে। সে দিন একটি ম্যাসকট ‘মিস্টার ডে’ উদ্বোধন হবে সন্ধে ৬টায় প্রেস ক্লাবে।

শতবার্ষিকী

বাড়িতেই পড়াশোনা, ম্যাট্রিক দেন প্রাইভেটে। আশুতোষ কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক— প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর, জুবিলি বৃত্তি ও একাধিক স্বর্ণপদক-সহ। সংস্কৃত, রুশ ভাষা জানতেন। ফরাসি শিখে ফ্রান্সের সরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্নাতকোত্তর, সেখানেও প্রথম শ্রেণিতে প্রথম! তিনি স্যর আশুতোষের বড় নাতনি প্রতিমা মুখোপাধ্যায় (১৯১৯-২০০৫), সঙ্গের ছবি। আশুতোষের বড় মেয়ে-জামাই, অমলা ও প্রমথনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় মেয়ে প্রতিমার বিয়ে হয় চার্টার্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার শ্মশানেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ১৯৫৫-৫৬’য় আমেরিকা, ইউরোপ ও মিশর সফর করেন। ১৯৭০-৭৬ মডার্ন হাই স্কুলে ইতিহাসের শিক্ষকতা করেন। শেষ দিন পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন পড়াশোনা আর সমাজকর্মে। আশুতোষ মুখার্জি মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটের প্রতিমা মুখার্জি শতবর্ষ কমিটির আয়োজনে ১১ নভেম্বর বিকেল ৫টায় ইনস্টিটিউট প্রেক্ষাগৃহে তাঁর শতবার্ষিকী অনুষ্ঠান।

শেষ আইসিএস

অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ ছিলেন দ্বিতীয় হুগলি সেতু কমিশনের চেয়ারম্যান। কলকাতাবাসীকে বড় যত্নের সঙ্গে দেখাতেন বিদ্যাসাগর সেতু। সান ফ্রান্সিসকোর ঐতিহাসিক গোল্ডেন গেট সেতুর মতো কাঠামো তার। নিজের প্রতিটি কাজের প্রতিই ছিল তাঁর গভীর বাৎসল্য। তিনি মনীষীমোহন সেন। ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের ১৯৪৪-এর ব্যাচের অফিসার। শেষ আইসিএস ব্যাচ। প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা পাশ করে নজির গড়েন সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এমএম সেন সেই বিরল জ্যোতিষ্কপুঞ্জেরই উত্তরাধিকারী। শিক্ষায়, কর্মবৃত্তে এবং জীবনচর্যায়। ডা. নীলরতন সরকার তাঁর মাতামহ, পিতা প্রেসিডেন্সি কলেজ অধ্যক্ষ ভূপতিমোহন সেন। মনীষীমোহন নানা কেন্দ্রীয় দফতরে গুরুদায়িত্ব সামলেছেন। ধ্রুপদী সঙ্গীত ও ঐতিহ্যে বুঁদ মানুষটির যত্নে লালিত বাড়ির গোলাপবাগটিও ছিল দেখার মতো। জন্মশতবর্ষের দু’মাস আগে, ২৩ অক্টোবর প্রয়াত হয়েছেন তিনি।

উৎস মানুষ

‘উৎস মানুষ’-এর প্রয়াত সম্পাদক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় কুসংস্কারের পাশাপাশি যুক্তিহীন সামাজিক ঘটনাগুলো নিয়ে মানুষের মনকে নাড়া দেওয়ার কাজে তৎপর ছিলেন। এই ভাবনা থেকেই একাদশ অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা-র বিষয় ‘নাড়ি টেপা ডাক্তারির দিন আজ আর নেই’। ‘ফ্যামিলি ফিজ়িশিয়ান’রা আজ অবলুপ্ত প্রজাতি। রোগী-ডাক্তার বিশ্বাসের শেকড় উপড়ে অবিশ্বাসের চারাগাছ আজ মহীরুহ! অপর দিকে, অনেক বিপন্ন লোক জ্যান্ত ভগবান চান। ডাক্তার তা সাজতে রাজি নন বলে সাধু সন্ন্যাসী দৈবজ্ঞ গুরু অবাধ ক্ষমতা পেয়ে থাকেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগান্তকারী অগ্রগতি সত্ত্বেও অবস্থা খুব কি বদলেছে? এই সব প্রশ্ন নিয়ে জমে উঠবে উৎস মানুষ আয়োজিত অনুষ্ঠানটি। মহাবোধি সোসাইটিতে ১৬ নভেম্বর বিকেল ৪টেয়। বক্তা চিকিৎসক গৌতম মিস্ত্রি।

কর্মশালা

এশিয়াটিক সোসাইটি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অন্তর্গত ভারতীয় ভাষা অনুবাদের চর্চা কেন্দ্র এবং ইংল্যান্ডের ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ২১-২৫ অক্টোবর পাঁচ দিন ধরে বড়ো ভাষার ছোটগল্পের বাংলা ও ইংরেজিতে অনুবাদ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা কলকাতায় অনুষ্ঠিত হল। প্রথম তিন দিন এশিয়াটিক সোসাইটিতে আর শেষ দু’দিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বল্প চর্চিত একটি ভারতীয় ভাষার সাহিত্যকে কী ভাবে সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে দিয়ে সামাজিক ও সাহিত্যিক দায়বদ্ধতা পালন করা যায়, তা ব্যাখ্যা করেন যাদবপুরের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের প্রধান সায়ন্তন দাশগুপ্ত‌। বড়ো ভাষা নিয়ে চর্চা করেন এমন ছ’জন লেখক-অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে দশটি বড়ো ছোটগল্প বাংলা ও ইংরেজিতে অনুবাদ করেন অনুবাদকেরা। সমাপ্তি অধিবেশনে তার অংশ পাঠ করা হয়।

বহুরূপী

বহুরূপী পত্রিকা-র (সম্পা: প্রভাতকুমার দাস) শারদ সংখ্যা শুরুই হচ্ছে সৌরীনবাবুর ‘স্মৃতির অ্যালবাম’ দিয়ে। যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘‘রক্তকরবী-তে যে সাড়া পড়েছিল তার সবই আমার স্মৃতিতে আছে। এমনকি রক্তকরবী বিষয়ে কোনও কোনও মহলের বিরূপতা।’’ লুপ্ত উদ্ধার-এ এ বার পুনর্মুদ্রণ করা হয়েছে বহুরূপী-র প্রথম সভাপতি মহর্ষি মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের ‘ব্রতচারিণী’ নাটকটি। নাটকে জমিদার বিহারী মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অহীন্দ্র চৌধুরী। পুনর্মুদ্রিত হয়েছে কে. এ. বসির বি-এ-র ‘উদ্বাস্তু’ নাটকটিও, তা নিয়ে আলোচনা সুমন ভট্টাচার্যের। প্রকাশ পেয়েছে দেবাশিস মজুমদারের ‘বৈজয়ন্তিকা’, কুন্তল মুখোপাধ্যায়ের ‘লালন’, প্রবালকুমার বসুর ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’-সহ একাধিক নাটকের পূর্ণ পাঠ। শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় লন্ডনে চারটি সাম্প্রতিক নাট্যপ্রযোজনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। আলোচিত হয়েছে বহুরূপী-র সাম্প্রতিক কর্মশালার কথা।

সুরসাধক

সুরসাধক ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় সেই বিরল বাঙালি, যাঁকে গোটা ভারত ‘উস্তাদ’ ডাকত। পাঁচ বছর বয়সে খেলাচ্ছলেই শোনাতেন গহরজানের গান, গেয়ে দিতেন দুরূহ কেদার। ১২ বছর বয়সেই টপ্পার রেকর্ড। বিস্ময় বালকের তান শুনেই শিষ্য বানিয়ে নিয়েছিলেন স্বয়ং খলিফা বদল খান। ত্রিশের দশকে ভীষ্মদেবের রাগসঙ্গীতে সারা ভারত সম্মোহিত। একই সঙ্গে ছিলেন সুরকারও। রেকর্ডিং রুমে ঢুকতে ঢুকতে একটি বার গান দেখে নিলেই নাকি তাঁর চলত। কাজী নজরুল সেই দেখে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি ভগবান না ভূত?’ তাঁর শিষ্য ছিলেন শচীন দেব বর্মন, কাননবালা, ছায়া দেবী, যূথিকা দেবী, পাহাড়ী সান্যাল। আপনভোলা এই সংবেদনশীল গায়ক বহু বার সঙ্গীতমঞ্চ থেকে অজ্ঞাতবাসে গিয়েছেন। ৮ নভেম্বর ছিল তাঁর ১১০তম জন্মদিন। স্মরণিকায় ৯ নভেম্বর কাঁকুড়গাছি মোড়ের উৎসব মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ভীষ্মদেব সঙ্গীত সম্মেলন। হিন্দুস্থানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শোনালেন ওঙ্কার দাদরকর। আচার্য জয়ন্ত বসু পরিবেশন করলেন তাঁর ‘ওমনি শৃঙ্গার’। আয়োজনে ভীষ্মদেব মেমোরিয়াল ট্রাস্ট।

বঙ্গে শেক্সপিয়র

বঙ্গে শেক্সপিয়র। উনিশ শতক থেকেই বঙ্গরঙ্গমঞ্চে তাঁর নাটকের আবির্ভাব। অনুবাদও হয় স্বাভাবিক ভাবেই। হয় বঙ্গীকরণ। স্বয়ং বিদ্যাসাগর ‘কমেডি অব এরর্স’ নিয়ে লেখেন ‘ভ্রান্তিবিলাস’। সেই ধারা স্বাধীনতা-উত্তর পর্বে উৎপল দত্ত সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে আজও বহমান। এ বার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ‘শেক্সপিয়র ইন বেঙ্গল’ প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে ভিক্টোরিয়ার কেন্দ্রীয় হল-এ প্রদর্শনী ‘শেক্সপিয়র ইন বেঙ্গল’। থাকছে উনিশ শতকের শেষ পর্ব থেকে আজ পর্যন্ত বঙ্গে শেক্সপিয়র প্রযোজনার আলোকচিত্র, কস্টিউমের ছবি, চলচ্চিত্র থেকে স্থিরচিত্র, টিকিট ও পোস্টার-সহ নানা এফিমেরা, শ্রেণিকক্ষে শেক্সপিয়র পঠনপাঠন সংক্রান্ত নানা নথি, ছবি প্রচ্ছদ গান আরও কত কী। ৮-১৭ নভেম্বর প্রদর্শনীর সঙ্গে ১৩ নভেম্বর সাড়ে ৫টায় সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে আলোচনা, কথোপকথনে সুকান্ত চৌধুরী, এরিক জনসন (ফলজার শেক্সপিয়র লাইব্রেরির অন্যতম অধিকর্তা) ও পারমিতা চক্রবর্তী। সঞ্চালনায় দয়িতা মজুমদার।

কোলাজ-শিল্পী

২০০২ মধ্য হাওড়ার ইছাপুর সংঘমিত্র ক্লাবে লোহালক্কড়ের দুর্গা মূর্তি দেখে সকলের চক্ষু চড়কগাছ, বলছিলেন বিআর পানেসরের শিষ্য হাওড়া কদমতলার বাসিন্দা ‘মেটাল কোলাজ’ শিল্পী অরুণকুমার মজুমদার। রবীন্দ্রভারতী থেকে ভিজ়ুয়াল আর্টে ডক্টরেট, সেখানেই প্রথমে লেকচারার ও পরে বরিষ্ঠ শিল্প শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন হাওড়া সেন্ট টমাস চার্চ স্কুলে। ১৯৯২ থেকে তাঁর শয়ন স্বপন সব ভাবনাই কোলাজ শিল্প ঘিরে। কাগজ, টিন, লোহালক্কড়ের ছাঁট বাবরি, গাড়ির যন্ত্রাংশ, শিকল, পেরেক, চামচ-সহ হরেক উপকরণে সৃজন করেন দেবদেবী, নিসর্গ দৃশ্য, সমুদ্র সৈকত, মহানগরের জনজীবন-সহ আরও কত কী! একক ও দলগত বহু প্রদর্শনীতে সুুনামের অধিকারী, তাঁর শিল্পকর্ম স্বদেশ ও বিদেশের বহু সংগ্রহে রক্ষিত। ৬৭ বছরের জীবনে যেখানেই গিয়েছেন রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা নানা জিনিস সযত্নে নিয়ে এসেছেন বাড়িতে। লোকে কত কী বলে, সে দিকে কান দেন না। একাকী নিমগ্ন থাকেন সৃজনে। সম্প্রতি অ্যাকাডেমিতে ‘পেন্টার্স অর্কেস্ট্রা’র ৫১তম বার্ষিক প্রদর্শনীতে দেখা গেল তাঁর শিল্পকর্ম।

আধুনিকতা

হীরালাল রায় ১৯২০ সালে এশিয়ায় সর্বপ্রথম কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ তৈরি করেন জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ও আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের অনুপ্রেরণায়। তিনিই যাদবপুর প্রাক্তনীর প্রথম সম্পাদক। তাঁর স্মৃতিকে শ্রদ্ধা জানাতে প্রাক্তনী সংগঠন ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আয়োজিত হয় বার্ষিক বক্তৃতা। এক দিকে যেমন প্রযুক্তিবিদ ও তাঁদের প্রযুক্তিকর্ম সভ্যতার আধুনিকতায় একটি সংস্থাপন, অন্য দিকে তেমনই চলচ্চিত্র একটি প্রযুক্তি-নির্ভর শিল্পমাধ্যম, এই দুইয়ের যোগাযোগেই এ বারের বক্তৃতায় সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলবেন: ‘ফ্র্যাগমেন্টস অব মডার্নিটি: সত্যজিৎ অ্যান্ড ঋত্বিক’। সত্যজিৎ রায় ও ঋত্বিক কুমার ঘটক আধুনিকতা বিষয়ে তাঁদের ধারণা কী ভাবে চলমান চিত্রমালায় বিকশিত করেছিলেন, সে নিয়েই তাঁর আলোচনা। ১৫ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় যাদবপুরের ত্রিগুণা সেন প্রেক্ষাগৃহে।

ঘরোয়া মেলা

প্রাঙ্গণের মেলা এ বার ঘরের চৌহদ্দিতে। ফার্ন রোডে দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাসে শিল্পমেলা— বাংলার ঘরোয়া মেলা (১৪-১৮ নভেম্বর)। বাঙালি শিল্পীদের কাজে ঠাসা। প্রবীণ শিল্পীদের পাশাপাশি নবীন শিল্পীদের কাজ, আর্ট কলেজের ছাত্রদের কাজ, পটচিত্র ডোকরা গালার পুতুল কত কী। মেলার জন্য রঙে রেখায় চিঠিতে এঁকেছেন গণেশ হালুই যোগেন চৌধুরী শুভাপ্রসন্ন, জলরঙে লালুপ্রসাদ সাউ (সঙ্গে তারই একটি) রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দনা হোর। সরাচিত্র টেম্পারা ওয়াশ প্যাস্টেল, ভাস্কর্য— থাকছে সবই। সনৎ করের ছাপাই চিত্র, সুশোভন অধিকারীর বারকোশ-চিত্র। প্রকাশিত হবে গণেশ হালুইয়ের স্কেচখাতা ‘শান্তিনিকেতন’। ১৫ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় ‘কথালাপ’-এ জয় গোস্বামী।

কলকাতার বন্ধু

কলকাতায় এসে তিনি এ বার পড়েছেন ডেঙ্গির কবলে। অন্য সাহেব মাত্রেরই আত্মারাম খাঁচাছাড়া দশা হতে পারত, কিন্তু তিনি— জেসি অল্‌ক— অন্য ধাতুতে গড়া। কলকাতার ভূমিপুত্র না হয়েও মনেপ্রাণে ভালবাসেন এ শহরকে, নইলে সর্বস্ব পণ করে তৈরি জীবনের প্রথম ছবি কে আর কলকাতাকে নিয়ে, এ শহরের নেড়িকুকুর আর তাদের জন্য এক বুক মায়া নিয়ে জেগে থাকা কয়েক জন মানুষকে নিয়ে বানাবে! রক্তে সিনেমা, বললে ভুল হবে না মোটেও। তাঁর বাবা, তথ্যচিত্রনির্মাতা হাওয়ার্ড অল্‌ক ছবি বানিয়েছেন ও দেশে বব ডিলান আর এ দেশে লক্ষ্মণ দাস বাউলকে নিয়ে! সে অনেক বছর আগের কথা, লক্ষ্মণ দাসকে নিয়ে তৈরি হাওয়ার্ডের সেই ছবি মুক্তির আলো দেখেনি, কিন্তু আট বছর বয়সে বাবাকে হারানো জেসির বার বার ফিরে আসার ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বাংলা আর কলকাতাই। ২০১০-এ প্রথম আসা, আর ২০১৯-এ তাঁর তথ্যচিত্র ‘পারিয়া ডগ’ দেখানো হচ্ছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। লস অ্যাঞ্জেলেস-এর বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের সিনেমা, টিভি ও ডিজিটাল মিডিয়া বিভাগের একদা-ছাত্র নিজের টাকায় কিনেছেন ক্যামেরা-সহ নানান সরঞ্জাম, পোস্ট-প্রোডাকশন অনেকটা হয়েছে আমেরিকায় এক ছবিতুতো বন্ধুর সহায়তায়। সমস্ত ডলার ফুরিয়েছে, পরের ছবি কী ভাবে তৈরি হবে জানা নেই। মুখের হাসিটি তবু অমলিন। নিউ ইয়র্কে ফেরার তাগিদও নেই বড় একটা, কলকাতাই হয়ে উঠেছে বন্ধুতার ঠাঁই। ভবানীপুরের বন্ধু, তাঁর ছবির কার্যনির্বাহী প্রযোজক অদিতি সরকারের বাড়ির বারান্দা থেকে নীচের হাঁকডাকওলা মহানগরকে দেখায় বরং জীবন খুঁজে পান বেশি। ডাক এসেছিল ধর্মশালা চলচ্চিত্র উৎসব থেকেও, যেতে পারেননি। ১৩ নভেম্বর নন্দন-এ তাঁর ছবি শুরুর আগে সুস্থ দেহে পৌঁছনোর আপ্রাণ চেষ্টা এখন।

প্রথম বিশ্বকে কখনও ছেড়ে কথা বলেননি

তাঁর ছবি ভাল লাগার কথা তাঁকে জানিয়েছিলেন মৃণাল সেন— স্মৃতিতে ফিরছিলেন স্‌ক্লনডর্ফ। ফোলকের স্‌ক্লনডর্ফ। নভেম্বরের এক রৌদ্রস্নাত সকালে ম্যাক্সমুলার ভবনের গ্যোটে ইনস্টিটিউটে কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে। এ বারের কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবের বিশিষ্ট অতিথি তিনি। এ-শহরের মানুষজন, বিশেষত পঞ্চাশোর্ধ্বরা তাঁকে এবং তাঁর ছবি নিয়ে বেশ ওয়াকিবহাল জেনে রীতিমতো বিস্মিত তিনি, মুগ্ধ তো বটেই। সত্যজিতের অপু-ট্রিলজি’র প্রসঙ্গে ফিরে গেলেন অশীতিপর জার্মান মানুষটি (জ. ১৯৩৯)। জার্মানিতে জন্মালে কী হবে, ছেলেবেলায় চলে যেতে হয়েছিল ফ্রান্সে। সেখানেই ছবি তৈরিতে হাতপাকানো শুরু লুই মাল-এর কাছে। সড়গড় হতেই লুই মাল তো বটেই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু (আর-এক দুঁদে ছবি-করিয়ে) বের্ত্রঁ তাভেরনিয়ে পরামর্শ দিলেন পশ্চিম জার্মানিতে ফিরে গিয়ে ছবি বানাতে। ‘‘আমি প্রায় ফরাসি সাবমেরিনের মতো ঢুকে পড়লাম জার্মানিতে।’’ হাসতে-হাসতে বললেও কথাটা ফেলবার নয়, ষাটের দশকের গোড়া থেকেই ‘নিউ জার্মান সিনেমা’ আন্দোলনের অন্যতম উদ্গাতা তিনি, সে দেশটা-সহ প্রথম বিশ্বের সমাজ-ব্যবচ্ছেদ করে একের পর এক ছবি করে গিয়েছেন। কান-এ সেরা-র শিরোপা ও অস্কার পাওয়া তাঁর ‘টিন ড্রাম’-এ শুধু আটকে না থেকে তাঁর ছবিগুলিকে ফিরে দেখলেই বোঝা যাবে এই মুহূর্তের সমাজ-রাজনীতিতে কী অসম্ভব প্রাসঙ্গিক তিনি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE