শোকার্ত: এসএসকেএম-এর মর্গের সামনে কৃত্তিকার বাবা সুদীপ্ত পাল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
প্লেনে ওঠার আগে বাবার কাছে মেয়ের আবদার ছিল, হায়দরাবাদি বিরিয়ানি খাওয়ার। আদরের ‘তিন্নি’র জন্য হায়দরাবাদ থেকে ফেরার পথে বিরিয়ানি কিনবেন ভেবেছিলেন বাবা। কিন্তু তার আগেই জানলেন, মেয়ে আর নেই! পড়াশোনায় তুখোড়, বইপাগল মেয়েটা কেন এমন কাণ্ড ঘটাল, তার উত্তর জানেন না বৈষ্ণবঘাটার সুদীপ্ত ও তানিয়া পাল। বাবাকে বিরিয়ানি আনার পাশাপাশি মাকে নরম পানীয় কিনে রাখতেও বলেছিল কৃত্তিকা।
বৈষ্ণবঘাটায় থাকলেও আদরের ‘তিন্নি’ প্রতি শনি-রবিবার বারুইপুরে ঠাকুরদা বিমল পালের কাছে যেত। নাতনি যে নেই, তা শনিবার বিকেলের আগে জানানো হয়নি প্রাক্তন হেডস্যার বিমলবাবু ও তাঁর স্ত্রীকে। শুক্রবার বিকেলে টিভির লাইনও কেটে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রের খবর, নাতনির এই পরিণতি জেনে ঠাকুরদা, ঠাকুমা কথা হারিয়েছেন। এ দিন সন্ধ্যায় বারুইপুর কীর্তনখোলা শ্মশানে কৃত্তিকার শেষকৃত্য হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেখানে যেতে পারেননি কৃত্তিকার মা। পুলিশ সূত্রের খবর, শেষ চিঠিতে অন্ত্যেষ্টি ভাল ভাবে করার কথা লিখেছিল কিশোরী।
এ দিন এসএসকেএমের মর্গে গিয়েছিলেন কৃত্তিকার বান্ধবীদের মা-বাবারা। এক বান্ধবীর মায়ের কথায়, ‘‘আমাদের সিরিয়াস মম বলে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। স্কুলের পঠনপাঠন নিয়ে ওই গ্রুপের মাধ্যমেই আমাদের যোগাযোগ থাকত। শুক্রবার সকালেও কৃত্তিকার মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু কৃত্তিকা যে মানসিক অবসাদে ভুগছে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি।’’
ময়না-তদন্তের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর সুস্মিতা দামের স্বাক্ষরিত নথি আনতে গিয়েছিলেন সুদীপ্তবাবু ও তাঁর শ্যালক। কাউন্সিলর জানান, সুদীপ্তবাবু মেয়ের বইপ্রীতির কথা জানান তাঁকে। পড়াশোনা নিয়ে মেয়ের উপরে চাপ দিতেন না বলেও জানান। মার্শাল আর্টও শিখত মিশুকে ওই কিশোরী। এ দিকে শনিবারই রানিকুঠির ওই স্কুলের অভিভাবকদের তরফে যাদবপুর থানায় যোগাযোগ করে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে অনুরোধ করা হয়। আজ, রবিবার তাঁদের তরফে মৌন মিছিল হওয়ার কথা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy