Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata news

কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির টোপ, ১০ লাখ টাকা খোয়ালেন রেলকর্মী

বিকাশচন্দ্র বর্মন নামে ওই রেলকর্মী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, অগস্ট মাসে তাঁর মোবাইলে একটি ফোন আসে

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ১৫:০৮
Share: Save:

ম্যানেজমেন্ট কোটায় যাদবপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে মেয়েকে ভর্তি করাতে গিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা খোয়ালেন আলিপুরদুয়ারের এক রেল কর্মী। শনিবার তিনি যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও, এখনও অভিযুক্তরা পলাতক।

বিকাশচন্দ্র বর্মন নামে ওই রেলকর্মী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, অগস্ট মাসে তাঁর মোবাইলে একটি ফোন আসে। সেই ফোনে কোনও একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি তাঁর মেয়েকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার প্রস্তাব দেন। বিকাশবাবুর মেয়ে সর্বভারতীয় এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও, খারাপ র‌্যাঙ্কিংয়ের জন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছিলেন না।

বিকাশ পুলিশকে জানিয়েছেন, ফোনে ওই ব্যক্তির মাধ্যমে তিনি শিলিগুড়ির আরোহী এডুকেশনাল এজেন্সি নামে একটি সংস্থার কথা জানতে পারেন। ওই সংস্থায় যোগাযোগ করলে সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁর মেয়েকে বেঙ্গালুরুর একটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তাঁকে জানানো হয়, সব মিলিয়ে খরচ প্রায় ৩৫ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন: পর্ণশ্রীতে বাড়ির কাছেই মহিলার গলাকাটা দেহ, আটক স্বামী-মেয়ে-জামাই

যাদবপুর থানার তদন্তকারীদের তিনি জানিয়েছেন, ওই সংস্থাকে তিনি বলেন যে বেঙ্গালুরু নয়, কলকাতার কোনও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করাতে চান নিজের মেয়েকে। অভিযোগ, এর পরই তাঁকে যাদবপুরের ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ‘হচ্ছেটা কী কাশ্মীরে? কত দিন চলবে এই জাতীয়তাবিরোধী কাজ?’ টুইটে তোপ প্রিয়ঙ্কার

বিকাশ জানিয়েছেন, ১৪ এবং ১৫ অগস্ট তিনি ওই সংস্থার মাধ্যমে অপরূপা দাস, ঋষি শুক্ল এবং আদিত্য সিংহ নামে তিন ব্যক্তির হাতে দেড় লাখ টাকা তুলে দেন। বিকাশবাবুর দাবি, ওরা নিজেদের মেডিক্যাল কলেজের আধিকারিক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। ওই তিনজন এর পর তাঁকে ২৩ তারিখ মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় আসতে বলেন। জানানো হয়, বাকি আট লাখ টাকা দেওয়ার পর সরাসরি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হবে তাঁর মেয়েকে।

ওই রেল কর্মীর অভিযোগ, শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজের আধিকারিক বলে পরিচয় দেওয়া তিন জন ছাড়াও আরেক ব্যক্তি ছিলেন। এ েছাড়া সেদিন আধিকারিকের সঙ্গে মোহিত নামে এক ব্যক্তিও উপস্থিত হন গোলপার্কের একটি গেস্ট হাউসে। মোহিত নামে ওই ব্যক্তিকে বাকিরা মেডিক্যাল কলেজের একজন চিকিৎসক তথা শীর্ষ আধিকারিক হিসাবে পরিচয় করান। ওই পাঁচজনের উপস্থিতিতে একটি অ্যাপ ক্যাবে নগদে আরও ৮ লাখ টাকা তুলে দেন বিকাশবাবু।

তদন্তকারীদের বিকাশ জানিয়েছেন, ওই পাঁচজন টাকা হাতে পাওয়ার পর তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ওই মেডিক্যাল কলেজের সামনে অপেক্ষা করতে বলেন। সেই মতো তাঁরা মেডিক্যাল কলেজের সামনে বেশ কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও কেউ না আসায় সন্দেহ হয়। তিনি মেডিক্যাল কলেজে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাঁর মেয়ের ভর্তির আদৌ কোনও ব্যবস্থা হয়নি। তখন তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এর পরই তিনি যাদবপুর থানায় ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।

শনিবার বিকাশবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ এবং ১২০ ধারায় প্রতারণার মামলা রুজু করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর ওই মেডিক্যাল কলেজের কোনও কর্মীর যোগাযোগের সম্ভবনা উড়িয়ে দেননি তদন্তকারীরা। পাঁচজনই যে নাম পরিচয় ভাঁড়িয়ে বিকাশবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, নিশ্চিত পুলিশ। এখনও অভিযুক্তরা ফেরার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Jadavpur Fraud যাদবপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE