স্ত্রীর সঙ্গে সুদীপ। ছবি-ফেসবুক।
আমার স্ত্রী সঞ্চারী যেহেতু একমাত্র মেয়ে, তাই আমার শাশুড়ি নন্দিতা চক্রবর্তীর আমি আদরের জামাই। ফলে আর কিছু হোক বা না হোক, আমার শাশুড়িমা জামাইষষ্ঠী অদ্ভুত এক আনন্দ নিয়ে পালন করেন। জামাইবরণ থেকেপাঁচরকম ফল-মিষ্টি, সব থাকে। ফল বলতে সিজনের নতুন পাঁচরকম ফল থাকা চাই। নানা রকম পদ তিনি রান্না করেন। অন্তত দু’রকম মাছের পদ, মাংস, ডাল, তরকারি, পাঁচ রকম ভাজা।এসব তো থাকেই, তার সঙ্গে উপহারও থাকে। আমার বিয়ের পর থেকে এ ভাবেই আমার শাশুড়ি দিনটি উদযাপন করছেন।
কিন্তু সত্যি বলতে কি, দিনটি পালনের জন্য আমার শাশুড়িমা এত পরিশ্রম করেন, সব রীতিনীতি নিখুঁত ভাবে মানার জন্য এত ব্যাকুল হয়ে পড়েন যে আমার কিছুটা অস্বস্তিই লাগে। ভূরিভোজ আর পরিবারের সবার সঙ্গে আড্ডা, সব মিলিয়ে জমে যায় জামাইষষ্ঠী।
আরও পড়ুন- উনিশ বছর বয়সে জামাই সেজে জামাই ষষ্ঠী পালন করতে খুব মজা পেয়েছিলাম
তবে সত্যি বলতে কি, এ বারে জামাইষষ্ঠীর দিনটাও আমার মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। আমার শাশুড়িমায়ের মনে ছিল। উনিই মনে করিয়ে দিলেন। বলাই বাহুল্য, এ বারটা আলাদা। গত ১৮ মার্চ থেকে আমিও সবার মতোই বাড়িতে বসে। কোনও কাজ নেই, রোজগার নেই। আগামি দিনগুলো নিয়ে গ্রাস করছে দুশ্চিন্তা। সবে লকডাউনের মধ্যে কিছু কিছু বিষয় শুরু হচ্ছিল, রেকর্ডিং স্টুডিয়োগুলো খুলছিল।একটা আশার আলো দেখা যাচ্ছিল যে আলাপ-আলোচনা করে অন্তত টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির শুটিং শুরু হবে। এর মধ্যে এল আমপান ঝড়। সব কিছু যেন এলোমেলো করে দিয়ে চলে গেল।
আরও পড়ুন: লকডাউনের বাজারে পরবাসের পাতানো জামাই
সত্যি কথা বলতে কি, এ বারে হাজারটা পদ সাজিয়ে, খেয়েদেয়ে জামাইষষ্ঠী পালনের ইচ্ছেটাও কেমন যেন হারিয়ে গিয়েছে। চারদিকে এত অসহায় মানুষের কান্না, হাহাকার... আগামী দিনে কী হবে সব ক্ষেত্রেই অনিশ্চয়তা। তাই এই মুহূর্তে এ সব বাদ রেখে পৃথিবী স্বাভাবিক হওয়ার প্রতীক্ষায় আমরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy