প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে ন’বছরের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার কাটোয়ার ঘটনা। এমন অভিযোগের পরে স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ।
ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, প্রায় দিনই স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা আসার আগে তাঁর মেয়ের ক্লাসে গিয়ে অভিযুক্ত অভিভাবক গল্প করতেন। মঙ্গলবারও সেই একই ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, সেই সময়ে ক্লাসের অন্য পড়ুয়ারা স্কুলের মাঠে খেলছিল। পুলিশে ছাত্রীর বাবার লিখিত অভিযোগ, সেই সময়ে তাঁর মেয়ের শ্লীলতাহানি করেন অভিযুক্ত। ওই দিন বিকেলে ছাত্রী বাড়ি গিয়ে কান্নাকাটি করলে অভিভাবকেরা কারণ জিজ্ঞাসা করেন। সেই সময়েই মেয়ে ঘটনার কথা জানায়, জানান ছাত্রীর বাবা। তাঁর আরও অভিযোগ, গত বছর পুজোর সময় থেকে কখনও আঁকা ছবি নিয়ে আসার নাম করে, কখনও বা আইসক্রিম খাওয়ানোর নাম করে মেয়েকে ডাকতেন অভিযুক্ত।
ঘটনার কথা চাউর হওয়ার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে অভিযুক্ত দোষ স্বীকারও করেন বলে দাবি অভিযোগকারী অভিভাবকের। এর পরেই বিকেলে অভিযুক্তের বাড়ি ঘেরাও করেন পড়শি ও অভিভাবকদের একাংশ। কাটোয়া থানার পুলিশ জানায়, বুধবার কাটোয়া আদালতে ওই ছাত্রীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। তবে বিকেল পর্যন্ত অভিযুক্ত অভিভাবক অধরা।
এই অভিযোগের পরে অভিভাবকদের একাংশের প্রশ্ন, স্কুল চলাকালীন ক্লাসের ভিতরে কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরে শিখা হরিজন, সুজাতা হরিজন, বিকাশ মণ্ডলদের নামে কয়েক জন অভিভাবকদের প্রশ্ন, ‘‘স্কুলে কী ভাবে ওই ব্যক্তি ঢুকেছিলেন? ছুটির সময়ে অভিভাবক না দেখেই পড়ুয়াদের ছেড়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার স্কুলে বৈঠকের সময়ে কর্তৃপক্ষ কেন পুলিশ ডাকেননি।’’ সেই সঙ্গে তাঁদের দাবি, স্কুলের প্রতিটি ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হোক। স্কুল চলাকালীন মূল দরজা বন্ধ রাখারও দাবি ওঠে। দোতলায় ওঠার সিঁড়িটিও নজরের বাইরে বলে দাবি তাঁদের।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, সকালে ওই স্কুলের একটি ঘরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চলে। সাড়ে ৯টার মধ্যে অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলেও স্কুলের মূল দরজা ও ওই ঘরের দরজা খোলা থাকে। সেই সময়েও বহিরাগতেরা ঢুকে পড়তে পারে বলে অনুমান ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার। তবে তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে অভিভাবকদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে পরিচালন সমিতির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
কাটোয়া পশ্চিম চক্রের স্কুল পরিদর্শক (এসআই) ফ্যান্সি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পাইনি। যা শুনেছি, তার পরে স্কুলের নিরাপত্তা বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy