প্রতীকী ছবি
কলকাতার বাইরে জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছিল পূর্ব মেদিনীপুরে। তারপর রাজ্যের অন্য কয়েকটি জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও আক্রান্তের চিকিৎসায় করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার নজিরও বাড়ছিল এই জেলায়। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় সাফল্যের জেরে এক সময় রেড জোন থেকে গ্রিন জোনে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেদের ঘরে ফেরা শুরু হতেই ফের জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। যার জেরে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রবিবার ১০০ ছুঁয়ে ফেলল।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শনিবার জেলায় একদিনেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩ জন। রবিবার জেলায় আরও এক করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছে। শনিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৬ জন। রবিবার ফের চারজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সংখ্যা দাঁড়াল একশোয়। পূর্ব মেদিনীপুরে দুটি স্বাস্থ্য জেলা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা। শনিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৯১ জন পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা এলাকার ও বাকি ৫ জন নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা এলাকার। আক্রান্তদের বেশিরভাগই তমলুক, হলদিয়া ও এগরা মহকুমা এলাকার বাসিন্দা। গত ২৮ মার্চ জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিস মিলেছিল এগরায়। তারপর তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক, হলদিয়া শহর, গ্রামীণ এলাকা ও পাঁশকুড়া-সহ বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে ২৪ মে পর্যন্ত জেলায় মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৩ জন। এঁদের মধ্যে ৩১ জন চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু গত ২৫ মে থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ২৫মে জেলায় একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ১০ জন। এরপর ৩০ মে পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৬ জন। রবিবার নতুন করে চারজনের আক্রান্ত হওয়ার খবরে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা একশো ছুঁয়ে ফেলায় উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং বাসিন্দারা।
জেলায় নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণ হিসাবে ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদেরই দায়ী করছেন জেলাবাসী। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের মতে, ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার জেরেই এক ধাক্কায় জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। তাই ভিন্ রাজ্য ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিভৃতবাসে রেখে দ্রুত তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষায় জোর দেওয়া হয়েছে। যাতে করোনা আক্রান্তদের চিহ্নিত করে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রবিবার করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এক যুবকের বাড়ি তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের রঘুনাথপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকায়। ওই যুবক কয়েকদিন আগে দিল্লি থেকে বাড়ি ফেরেন। স্থানীয় একটি হাইস্কুলের কোয়রান্টিন সেন্টারে ছিলেন। করোনা পরীক্ষার জন্য কয়েকদিন আগে তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। শনিবার রাতে তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এদিন রাতেই ওই যুবককে পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত যুবকের সংস্পর্শে আসা চারজনকে রবিবার সকালে চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy