Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Polystyrene

ঝাড়গ্রামের ভূমিপুত্রের আবিষ্কার, থার্মোকল থেকে মজবুত হেলমেট

তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তূরের অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও গবেষণা করেন শান্তনু। তাঁর গবেষণাগারে তিনি থার্মোকল বর্জ্য প্রথমে গুঁড়ো করেন।

কোয়েম্বত্তূরে অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের গবেষণাগারে থার্মোকল রিসাইক্লিং করছেন বিজ্ঞানী শান্তনু ভৌমিক। নিজস্ব চিত্র

কোয়েম্বত্তূরে অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের গবেষণাগারে থার্মোকল রিসাইক্লিং করছেন বিজ্ঞানী শান্তনু ভৌমিক। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৫২
Share: Save:

ওজন কম। কিন্তু পলকা নয়। মাথায় পরলে অস্বস্তি হবে না। সুরক্ষাও মিলবে পুরো। ঝাড়গ্রামের ভূমিপুত্র বিজ্ঞানী শান্তনু ভৌমিকের দাবি, এমনই এক হেলমেট আবিষ্কার করেছেন তিনি। থার্মোকল বর্জ্য পুন‌র্ব্যবহারযোগ্য করে তৈরি হয়েছে এই হেলমেট।

তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তূরের অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও গবেষণা করেন শান্তনু। তাঁর গবেষণাগারে তিনি থার্মোকল বর্জ্য প্রথমে গুঁড়ো করেন। পরে সেই গুঁড়ো তাপ দিয়ে গলিয়ে তার সঙ্গে আরও কিছু বিশেষ উপাদান মিশিয়ে হেলমেট তৈরির উপকরণটি আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি ওই বিজ্ঞানীর। এই আবিষ্কারটি স্বামী বিবেকানন্দের নামে উৎসর্গ করেছেন তিনি। বিজ্ঞানী জানালেন, তাঁর উপকরণ দিয়ে হেলমেট তৈরি করা হলে একটি হেলমেটের ওজন হবে পাঁচশো গ্রাম। এ ছাড়া সেই হেলমেট দু’মিটার দূর থেকে ৬ কিলোগ্রাম আঘাত সহ্য করতে পারবে। দু’মিটার উপর থেকে ছ’কিলোগ্রাম ওজন সজোরে ফেলে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, হেলমেটে একটুকুও চিড় ধরেনি। দু’মাসের গবেষণায় মিলেছে সাফল্য। আবিষ্কারের পেটেন্ট নেওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদনও করেছেন শান্তনু। পুনের একটি শিল্প সংস্থাকে বিশেষ হেলমেট তৈরির প্রযুক্তি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন তিনি। বিজ্ঞানী জানালেন, ২০২১ সালের গোড়ায় ওই হেলমেট বাজারে আসছে। হেলমেটে থাকবে স্বামীজির ছবি। স্বামীজির নামেই নামকরণ হবে হেলমেটের।

অনেক মোটরবাইক আরোহী ভারী ওজনের হেলমেট পরতে চান না। ফলে দুর্ঘটনায় ঘটে প্রাণহানিও। শান্তনুর আবিষ্কৃত হেলমেট বাজারে এলে হয়তো আরও কিছু প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে, এমনটা আশা ট্রাফিক পুলিশকর্মীদের একাংশের।

২০১৭ সালে সেনা বাহিনীর জন্য হালকা ওজনের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট বানিয়ে সাড়া ফেলেন শান্তনু। ওই বুলেট প্রুফ জ্যাকেটটি নেতাজির নামে উৎসর্গ করেন তিনি। এছাড়াও প্লাস্টিক বর্জ্যকে ব্যবহার করে স্বল্প খরচে আসবাবপত্র ও গৃহসজ্জার উপকরণ তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কারের জন্য পেয়েছেন ইউনেসকো-র ‘লিডারশিপ অ্যান্ড এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড’। চলতি বছরের জুলাইয়ে অনলাইনে ইউনেসকোর-র পিস মিশনে প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে তাঁর আবিষ্কার নিয়ে বক্তৃতা করেছিলেন শান্তনু। তারপরেই ইউনেসকোর ওই পুরস্কার পান তিনি।

বিজ্ঞানীর বাবা-মা ঝাড়গ্রাম শহরে থাকেন। শান্তনু একাধারে বিজ্ঞানী, শিল্পী, সুগায়ক ও অধ্যাত্মদর্শনের পণ্ডিত। ২০১৩ সালে বিদেশে গবেষণা ও বিপুল অঙ্কের বেতনের চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি অধ্যাত্ম-গুরু ‘মাতা অমৃতানন্দময়ী’র ডাকে সাড়া দিয়ে অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Polystyrene Helmet Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE