মুখ্যমন্ত্রীর সফরের মুখে গত শুক্রবারেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকে শুরু হয়েছিল। বোর্ড গঠন পর্ব মেটার পরেও তা থামার লক্ষণ নেই। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের মুখে গত শুক্রবারেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নিত্য গোলমালে কখনও ব্যবসা শিকেয় তুলতে হচ্ছে। কখনও আবার ঝুঁকি নিয়ে বেরতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে মোটেই ভাল নেই সীমান্ত মহকুমা। তাই এ বারের মুখ্যমন্ত্রী ওইসব গোলমাল বন্ধের ব্যাপারে কড়া বার্তা দেবেন বলেও আশায় বুক বাঁধছেন তাঁদের অনেকেই।
এই পরিস্থিতি ঘিরে উদ্বেগ বেড়েছে দিনহাটার শাসক তৃণমূল ও তাঁদের শাখা সংগঠন যুব শিবিরেও। দলের অন্দরের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সব খবর রয়েছে। তাই নেতাদের মধ্যে কেউ রোষের মুখে পড়তে পারেন সে আশঙ্কাও রয়েছে। কারণ মাস তিনেক আগে চ্যাংরাবান্ধা সফরে এসেও গোলমাল বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেও পুলিশ দিনহাটা ও সিতাইয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করে। কার্বাইন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়ে গ্রেফতার হন তৃণমূলের বড় আটিয়াবাড়ির এক নেতা নরেশ দেবনাথ। তার কিছু দিন পরেই অবশ্য দিনহাটা কলেজের এক ছাত্র অলোকনিতাই দাসকে বেধড়ক মারধর করায় মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনাতেও উদয়ন গুহ ঘনিষ্ঠ এক কাউন্সিলর ও টিএমসিপির তৎকালীন জেলা সভাপতির নাম জড়ায়। অভিযুক্ত কাউন্সিলর ও টিএমসিপির ওই জেলা সভাপতিকে বহিষ্কারও করা হয়। তারপরেও অবশ্য গোলমাল লেগেই রয়েছে। এসব নিয়ে তাই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে দিনহাটা মহকুমার পদস্থ নেতাদের।
দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন শুনব। আমাদের সবাইকে আরও ঐক্যবদ্ধভাবে চলতে হবে।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “উনি দলের জন্য যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতে সার্বিক ভাবে দলের শক্তি বাড়বে।” তবে তৃণমূল ও যুব দুই শিবিরের কেউই গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ মানতে চায়নি। প্রায় এক সুরে তাদের দাবি, দুষ্কৃতীরা গোলমাল করে দল, সংগঠনকে কালিমালিপ্ত করছে।
যদিও ওই বক্তব্য মানতে নারাজ বিরোধীরা। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতি রাভা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সফরে যা-ই বার্তা দিন এসব কমবে না। ক্ষমতা কেউ ছাড়তে চাইছে না। সিন্ডিকেট রাজ চালাতে ওই তৎপরতা।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে জেলায় দিনহাটার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। মুখ্যমন্ত্রীর সফরে বার্তা দিলেও তা আদৌ মিটবে না বলেই মনে হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy