বেহাল: দিনবাজারের করলা নদীর উপরের সেতুর গায়ে জমেছে আগাছা। নিজস্ব চিত্র
পূর্ত দফতর জানাচ্ছেন, সেতুগুলি দেখবে জেলা পরিষদ। আর জেলা পরিষদ জানাচ্ছে, নির্ঘাত পুরসভার সেতু দেখার কথা। অন্যদিকে পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, সেতু দেখাশোনার পরিকাঠামোই তাদের কাছে নেই। কেউ কোনওদিন সেই ভারও দেননি। জলপাইগুড়ি শহরে করলা নদীর উপর রয়েছে ছ’টি সেতু। বিশ্ববাংলা স্টেডিয়ামের পাশে থাকা সেতুটি দেখাশোনা করে এসজেডিএ। অন্য পাঁচটি সেতুর দায়িত্বে কে তা জানতে চাইলেই এভাবেই এক দফতর দেখিয়ে দিচ্ছে অন্য দফতরকে। সেতুগুলি কার দায়িত্বে রয়েছে তার কোনও নথি প্রশাসনের কাছে নেই।
এক একটি সেতু নির্মাণের পরে ত্রিশ-চল্লিশ বছর পেরিয়ে গিয়েছে, তাও কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি বলে অভিযোগ। সুভাষ সেতু নামে পরিচিত বাবুপাড়া লাগোয়া সেতুটি তৈরি হয়েছিল ১৯৭০ সালে। সেতুর স্তম্ভ একদিকে হেলে গিয়েছে, একাধিকবার রেলিং ভেঙে গেলেও উদ্বোধনের ফলক এখনও স্পষ্ট। তাতে উদ্বোধনের তারিখের সঙ্গে জ্বলজ্বল করছে পূর্ত বিভাগ কথাটি। বাসিন্দাদের দাবি, ইদানিং সেতু দিয়ে চারচাকা গেলেও ভীষণভাবে কাঁপতে থাকে। সেতুর নীচে কংক্রিটের পাটাতন ফাটিয়ে গাছের শিকড় ঢুকেছে। কিন্তু প্রশাসনিক তথ্য বলছে সেতুতে শুধু রং করা হয়েছে, নির্মাণের পরে কোনও সংস্কার হয়নি। জলপাইগুড়ির পূর্ত বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার কেশব গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “ওই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের নয়। জেলা পরিষদের। শহরের মধ্যে আমাদের কোনও সেতু নেই।”
এ দিকে জেলা বাস্তুকার সুদর্শন সাহার দাবি, “সেতুটি তো আমাদের নয়। একসময়ে ওই রাস্তা আমাদের ছিল। সেটি এখন পুরসভাকে হস্তান্তর করা হয়েছে। শহর এলাকায় জেলা পরিষদের কোনও সেতু নেই।” পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বিষয়টি জানেন। তিনি বলেন, “পুরসভার কি সেতু রক্ষণাবেক্ষণের পরিকাঠামো আছে? জেলা পরিষদ আর পূর্ত দফতর দাবি করে সেতু তাদের নয়। আমরা বাধ্য হয়ে মাঝেমধ্যে রং করি, আর ছোট মাপের কোনও ক্ষতি হলে ঠিক করে দিই।”
সুনীতিবালা সদর গার্লসের পাশে করলা সেতু রয়েছে। সেটি দোলনা সেতু নামে পরিচিত। সত্তরের দশকে তৈরি সেতুর লোহার পাটাতন সরে গিয়েছে। দিনবাজার এবং মাসকলাইবাড়িতে করলার উপর সেতু রয়েছে ভারী যান চলাচলের জন্য। সেতুগুলি নড়বড়ে হয়েছে। অসংখ্য ফাটল ধরেছে। গত তিন দশকে সেগুলি সংস্কার হয়েছে এমন তথ্য প্রশসানের কাছে নেই। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “কোন দফতরের দায়িত্বে তাই তো জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy