প্রস্তুতি: ভোট প্রচারের আগে চলছে কাজ। রায়গঞ্জের আদিবাসী গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র
রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির খাসতালুক বলে পরিচিত কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ২৭০টি বুথে দলীয় প্রার্থীকে লিড দিতে আসরে নেমে পড়েছেন তৃণমূল নেতারা। এর মধ্যেই ওই বিধানসভা কেন্দ্রের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডে বুথভিত্তিক অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ১৫০টির বেশি বুথে অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় তৈরি করে সেখান থেকে নির্বাচনী প্রচার চালানোর কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, গত শুক্র ও শনিবার শহরের ১, ২, ৩, ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় চালু করেছেন কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। পাশাপাশি, বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় বুথভিত্তিক ওই কার্যালয় তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সহকারী মেন্টর অসীম ঘোষের অবশ্য দাবি, গত কয়েক বছর ধরে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নের জেরে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় কংগ্রেসের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এই বিধানসভার ২৭০টি বুথেই তৃণমূলের শক্তিশালী। তিনি বলেন, ‘‘রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ২৭০টি বুথে দলের লিড দেওয়ার জন্য প্রতিটি বুথে অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় চালু করার কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, প্রতিটি পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভিত্তিক একটি করে প্রধান অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।’’
কালিয়াগঞ্জের পুরপ্রধান, তৃণমূলের কার্তিকচন্দ্র পালের দাবি, ‘‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলের তরফে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকার ২৭০টি বুথে অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় চালুর কাজ শেষ করা হবে। সেই সব কার্যালয় থেকে তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পকে সামনে রেখে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাবেন। তৃণমূলের কালিয়াগঞ্জ ব্লক ও শহর কমিটির নেতারা পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভিত্তিক প্রধান অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় থেকে সমস্ত বুথের নির্বাচনী প্রচারের উপর নজর রাখবেন।’’
কালিয়াগঞ্জের ১৪ নম্বরের শ্রীকলোনি এলাকায় রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির বাড়ি। প্রিয়বাবুর স্ত্রী দীপা জেলায় এলে ওই বাড়িতে থাকেন। অতীতে একাধিক বার লোকসভা নির্বাচনে প্রিয় ও দীপা ওই বাড়ি থেকেই নির্বাচনে প্রচার চালিয়ে জয়ী হয়েছেন। ২০১৫ সালে পুর নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের ১৫টিতে জয়ী হয়ে পুরসভার ক্ষমতা পুনর্দখল করে কংগ্রেস। পরবর্তীতে অবশ্য কংগ্রেসের বেশিরভাগ কাউন্সিলর শাসকদলে যোগ দেওয়ায় পুরসভার দখল নেয় তৃণমূল। পরের বছর বিধানসভা নির্বাচনেও কালিয়াগঞ্জ কেন্দ্রে প্রায় ৪৬ হাজার ভোটে জয়ী হয়ে তৃতীয় বার বিধায়ক নির্বাচিত হন কংগ্রেসের প্রমথনাথ রায়। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র একটির ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল।
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের অবশ্য দাবি, কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রিয়বাবুর রাজনৈতিক আবেগ ও দীপার জনসংযোগ জড়িয়ে। তাই শেষপর্যন্ত দীপাই ওই বিধানসভা-সহ রায়গঞ্জ লোকসভার সমস্ত বুথে লিড পাবেন।
অসীমবাবুর পাল্টা দাবি, অতীতের গল্প প্রচার করে কংগ্রেস কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করতে পারবেন না। উন্নয়নের স্বার্থে লোকসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের সাধারণ মানুষ সমস্ত বুথে তৃণমূল প্রার্থীকেই লিড দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy