আশ্বাস: পথে চলতে চলতে বাসিন্দাদের সঙ্গে এ ভাবেই কথা বলছেন মৌসম। শুক্রবার মালদহের বৈরগাছিতে। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়
চড়া রোদে ঝলসে যাচ্ছে চারপাশ। কিন্তু তাতে তাঁর কী? তিনি ছুটছেন, এ গ্রাম থেকে ও গ্রাম। একেবারে মাঠেঘাটে নেমে পড়ে কথা বলছেন বাসিন্দাদের সঙ্গে। শুনছেন তাঁদের অভাব-অভিযোগ। আবার কোনও এলাকায় ছোট মাপের সভা করছেন কর্মীদের সঙ্গে। উত্তর মালদহে এখন এ ভাবেই প্রতিদিন ছুটে বেড়াচ্ছেন এলাকার সাংসদ তথা মালদহ জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নুর।
লোকসভা ভোট ২০১৯ এ। পঞ্চায়েত ভোটও প্রায় বছরখানেক পরে। তবে কী এমন হল, যে এ ভাবে খর রোদে নিজের কেন্দ্রের এ মাথা থেকে ও মাথা দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। জেলার রাজনীতিতে এখন জোর চর্চা তা নিয়েই।
মালদহ বরাবরই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। শেষ বিধানসভা ভোটেও সেই দাপট অব্যাহত ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জেলা পরিষদ ও বেশিরভাগ পঞ্চায়েত সমিতি তাদের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় সেই দাপট অনেকটাই ফিকে হতে শুরু করেছে। অসংখ্য গ্রাম পঞ্চায়েতও চলে গিয়েছে শাসক দলের কব্জায়। ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলছে বিজেপি। ফলে জেলার রাজনীতিতে চাপ বাড়ছে। মৌসমের ছুটে বেড়ানো তারই জের বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল।
মৌসম অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি সারা বছরই মানুষের পাশে থাকি। এটা নতুন করে প্রমাণ দেওয়ার দরকার নেই। আসলে এই সরকারের আমলে জেলার বাসিন্দারা নানা সমস্যায় ভুগছেন। উন্নয়ন নেই। এ সব কথাই আমি শুনছি।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসদে অধিবেশন না থাকলে মৌসম জেলায় যে ক’দিন থাকছেন, প্রতিদিনই তাঁর ঠাসা কর্মসূচি থাকছে। গত কয়েকদিন গাজোল থেকে বামনগোলা, হবিবপুর থেকে চাঁচল, বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে অনেকটা ভোট প্রচারের ঢঙে তিনি সরাসরি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
শুক্রবারও সকালে জেলার প্রত্যন্ত হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ ব্লকের মশালদহ, দৌলতপুর, মহেন্দ্রপুর ও কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দৌলতপুরে একটি প্রাইমারি স্কুলে কর্মিসভা করেন।
মৌসম বলেন, ‘‘যে সব সমস্যা আমার সাংসদ এলাকার উন্নয়ন তহবিল থেকে করা সম্ভব তা করার চেষ্টা করব। আর যে গুলি সম্ভব নয় সেগুলি নিয়ে দলীয় কর্মীদের গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরে আন্দোলন করার পরামর্শ দেব।’’ তিনি জানাচ্ছেন, টানা আন্দোলন করেই দাবি আদায় করা হবে।
তবে মৌসমের এই জনসংযোগ কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের কটাক্ষ, ‘‘আসলে মৌসম সাহেবা বুঝে গিয়েছেন যে এই জেলায় কংগ্রেসের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। তাই নানা কৌশলে মানুষকে কব্জা করতেই এই নাটক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy