Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
রবিবার ছুটির মেজাজে তিন জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবাও

ডাক্তারবাবু কই! খোঁজে হাসপাতাল

রবিবার ছুটির দিন। হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে শুধু ওই সার্জিক্যাল বিভাগই নয়, গাইনি, চক্ষু, দন্ত থেকে পোস্টমর্টেমের দায়িত্বে থাকা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ একাংশ চিকিৎসকের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ। রোগীর পরিজন থেকে শুরু করে হাসপাতালের কর্মীরাও তাই রবিবারে ডাক্তারবাবুদের খোঁজে সারা হয়ে যান।

ফাঁকা: ছুটির দিন দুপুরে  বালুরঘাট হাসপাতালে প্যাথোলজি বিভাগ বিলকুল ফাঁকা। অন্য দিনও বেলা ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তারপরে রোগীর পরিজনরা পড়েন সমস্যায়। নিজস্ব চিত্র।

ফাঁকা: ছুটির দিন দুপুরে  বালুরঘাট হাসপাতালে প্যাথোলজি বিভাগ বিলকুল ফাঁকা। অন্য দিনও বেলা ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তারপরে রোগীর পরিজনরা পড়েন সমস্যায়। নিজস্ব চিত্র।

অনুপরতন মোহান্ত
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০৭:৫০
Share: Save:

রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা। বালুরঘাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে তপন থানার মালঞ্চা এলাকার বাসিন্দা বিনয় বর্মনের আক্ষেপ, দুর্ঘটনায় জখম হয়ে তাঁর এক আত্মীয় শনিবার এখানে ভর্তি হন। রাতে একবার ডাক্তারবাবু দেখে গিয়েছেন। তারপরে রবিবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও ওই রোগীকে এখনও কোনও ডাক্তারবাবু দেখতে আসেননি বলে তাঁর অভিযোগ।

রবিবার ছুটির দিন। হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে শুধু ওই সার্জিক্যাল বিভাগই নয়, গাইনি, চক্ষু, দন্ত থেকে পোস্টমর্টেমের দায়িত্বে থাকা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ একাংশ চিকিৎসকের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ। রোগীর পরিজন থেকে শুরু করে হাসপাতালের কর্মীরাও তাই রবিবারে ডাক্তারবাবুদের খোঁজে সারা হয়ে যান। হাসপাতালের এক কর্মী জানান, ‘‘আমাদের মুশকিল কী বলুন তো! রোগীর পরিজনেরা আমাদের দোষ দেন। যেন আমরাই দায়ী।’’

রবিবার হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক এবং প্যাথলজি বিভাগ বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ। অথচ ওই দু’টি বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা থাকার কথা। জরুরি প্রয়োজনে ফোন করে ব্লাডব্যাঙ্কের কর্মীকে ডেকে আনা হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোজ দুপুর ২টার পর থেকে প্যাথলজি বিভাগের কর্মীদের দেখা মেলে না বলে অভিযোগ। এক্স-রে বিভাগও বন্ধ থাকে। রোগীর আত্মীয়রা বাধ্য হন টাকা খরচ করে বেসরকারি ক্লিনিকে ছুটতে।

শুধু রবিবারই নয়। বালুরঘাট হাসপাতালে একাংশ চিকিৎসকের ছুটি শুরু হয় বৃহস্পতিবার, কারও শুক্রবার থেকে। সপ্তাহে চার দিন ডিউটি করে তাঁরা বৃহস্পতিবার রাতে ট্রেন ধরে বালুরঘাট ছেড়ে কেউ কলকাতা, কেউ অন্য জেলায় বাড়িতে চলে যান। কেউ প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন বলে অভিযোগ। ফের সোম ও মঙ্গলবার বালুরঘাটে পৌঁছে হাসপাতালের কাজে যোগ দেন বলে অভিযোগ।

বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরোর মতো অবস্থা বালুরঘাটের ১০ তলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের। সেখানে বহিরাগতদের প্রবেশ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ফলে সেখানে ডায়ালেসিস করাতে গিয়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও চাপা পড়ে যায়। দু’সপ্তাহ আগে পতিরামের ৪৬ বছরের এক মহিলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ডায়ালেসিস করাতে গিয়ে মারা যান বলে অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডায়ালেসিস ওয়ার্ডে কোনও নেফ্রোলজিস্ট নেই। নেই কোনও টেকনিশিয়ান। অদক্ষ কর্মী দিয়ে ডায়ালেসিস ওয়ার্ড চালাতে গিয়ে হামেশা চিকিৎসা বিভ্রাটের অভিযোগ উঠছে। রোগী মৃত্যুর ঘটনাও এড়ানো যাচ্ছে না।

হাসপাতালের সুপার তপন বিশ্বাস ফোন ধরেননি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসকদের ৬ দিনে ৪০ ঘন্টা ডিউটি করতে হবে। সুপারই ডিউটি রোস্টার তৈরি করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctors Crisis Balurghat hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE