নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে চিন। সেখানে অবস্থিত, কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ, প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপপুঞ্জ স্কারবোরো শোল-এ এ বার জাতীয় প্রকৃতি সংরক্ষণ কেন্দ্র বানানোর পরিকল্পনা তাদের। বোঝাই যাচ্ছে, এ আসলে আঞ্চলিক দাবি জোরদার করার ফন্দি, যার প্রতিবাদ করেছে ফিলিপিনস। দক্ষিণ চিন সাগর কৌশলগত এক জলপথ, যা বেয়ে বিশ্বের ৬০ শতাংশেরও বেশি সামুদ্রিক বাণিজ্য পরিবহণ হয়। ২০১৬-য় আন্তর্জাতিক রায় তাদের বিরুদ্ধে গেলেও, এ-যাবৎ প্রায় পুরো সাগরটিই নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চিন। শুধু তা-ই নয়, ২০১২-য় স্কারবোরো শোল-ও দখল করে তারা। দ্বীপপুঞ্জটি ফিলিপিনসের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত হলেও বর্তমানে তা বেজিং-ম্যানিলা দ্বৈরথের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঈপ্সিত: জীববৈচিত্রপূর্ণ স্কারবোরো শোল-এর অধিকার পেতে মরিয়া চিন ও ফিলিপিনস।
প্রত্যাখ্যাত
‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’। ব্রিটেন সরকারের নতুন ‘প্রকল্প’, ছোট নৌকায় চেপে দলে দলে আসতে থাকা বিদেশি অভিবাসীদের জন্য। কে যাবেন, কে-ই বা আসবেন— কোথায়? ইংলিশ চ্যানেলের ও-পারে উত্তর ফ্রান্সেও অভিবাসীদের ভিড়, তাঁদের মধ্যে যাঁরা ব্রিটেনে আশ্রয় চান তাঁদের এক জন আসবেন, আর ব্রিটেন থেকে এক জন অভিবাসীকে পাঠানো হবে ফ্রান্সে। যদি যেতে না চান, টেনেহিঁচড়ে তোলা হবে প্লেনে। হচ্ছেও তা-ই। আফগানিস্তান, লিবিয়া, সুদান, ইয়েমেন, এরিট্রেয়া-র মতো গৃহযুদ্ধ-গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রক্তাক্ত দেশগুলো থেকে কোনও মতে প্রাণ নিয়ে সমুদ্রে ভেসে পড়া হাজারো মানুষের ঠিকানা এখন ব্রিটিশ ডিটেনশন সেন্টার। গত সপ্তাহেই ইংল্যান্ডে হয়েছে বিরাট অভিবাসী-বিরোধী মিছিল, ফ্রান্সেও অবস্থা সুবিধের নয়। বারংবার ‘শরণার্থী’ হচ্ছেন ওঁরা, ‘শরণ’ মিলছে না।
হিসাবহীন
২০১০ সাল থেকে আমেরিকায় নিয়ম ছিল, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, বড় কারখানা বা তেল পরিশোধন কেন্দ্রগুলিকে জানাতে হবে, তারা বছরে কতখানি দূষণ ঘটাচ্ছে। আট হাজারেরও বেশি সংস্থা এই নিয়মের আওতায় পড়ত। ট্রাম্প প্রশাসন এ বার এই ব্যবস্থাটিকে তুলে দেওয়ার পথে। সে দেশের সরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি বলেছে, এই নিয়মটা নেহাতই আমলাতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থা— এতে সংস্থাগুলোর খরচ বাড়া ছাড়া আর কোনও লাভ নেই। তাতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার খরচও বাড়ে। অতএব, এ বার থেকে দূষণের হিসাব দেওয়ার দায় নেই, ফলে দূষণ নিয়ন্ত্রণেরও দায় নেই। পৃথিবীর ক্ষতি? ট্রাম্পের তাতে কী?
মাথা নোয়াব না
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির আঁচ বাকি বিশ্বের সঙ্গে পড়েছে ব্রাজ়িলেও। যদিও তাদের উপরে চাপানো ৫০ শতাংশ শুল্কের পদক্ষেপকে বহুলাংশে রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসাবেই দেখছেন ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগে সম্প্রতি দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোকে ২৭ বছর ৩ মাসের কারাবাসের নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। আর তাতে যে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বন্ধু ট্রাম্প একেবারেই না-খুশ, এই বিষয়ে তাঁর ক্ষোভপ্রকাশ থেকেই তা স্পষ্ট। আশঙ্কা, এর পরে ব্রাজ়িলের উপরে চাপতে পারে আরও শুল্ক। এই অবস্থায় আমেরিকার এক জনপ্রিয় সংবাদপত্রে প্রবন্ধ লিখে প্রেসিডেন্ট লুলা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আমেরিকার সঙ্গে আগামী দিনেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে তাঁরা আগ্রহী— তবে তাঁদের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের মূল্যে নয়।
সংঘাত: লুলা দা সিলভা তাঁরা আগ্রহী তবে তাঁদের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের মূল্যে নয়।
গোপাল-রাখাল
নাবালকদের আত্মহত্যায় প্ররোচনা, যৌন হয়রানি-সহ কুপ্রস্তাব দিচ্ছে চ্যাটবটগুলি— মামলা জমছে আমেরিকায়। সাতটি প্রযুক্তি সংস্থার চ্যাটবটকে তদন্তে ডেকেছে দেশটির বাণিজ্যক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বট তৈরির প্রক্রিয়া, শিশুসুরক্ষা, সন্তান কোন বট-সঙ্গে পড়েছে অভিভাবকদের জানানো হয় কি না জানতে চেয়েছে। মেটা-র দাবি, সুবোধ বট ছাড়া বখাটে বটেদের কাছে ঘেঁষতেই দেয় না ছোটদের, বিপজ্জনক প্রশ্ন এড়াতেও শেখায়। ওপেনএআই বলছে, তারা চ্যাটজিপিটি-কে নিরাপদ রাখতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু, গোপাল-চ্যাটবটের কাছে হোমওয়ার্কের চেয়ে রাখাল-চ্যাটবটের সঙ্গে স্কুল পালিয়ে নরক গুলজারের আকর্ষণ— এ লড়াইয়ে পাল্লা কোন দিকে ঝুঁকে, বোঝা কঠিন কি?
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)