মারিয়া কোরিনা মাচাদো নোবেল পেলেন, আর তার পর দিনই নরওয়ে থেকে দূতাবাস গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ভেনেজ়ুয়েলা। অবশ্য, না চটাই আশ্চর্যের, কারণ মাদুরো সরকারের প্রধানতম বিরোধী হলেন মাচাদো। প্রেসিডেন্টকে স্বেচ্ছাচারী একনায়ক বলেই উল্লেখ করেন তিনি। গত বছর অগস্ট থেকে আত্মগোপন করে আছেন মাচাদো। নোবেল কমিটিও পুরস্কারের কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় তাঁর লড়াই, এবং দেশকে শান্তিপূর্ণ ভাবে একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে আসার চেষ্টার কথা। এর পরেও রাষ্ট্রক্ষমতা না-চটে পারে! নরওয়ের সরকার অবশ্য বলেছে যে, নোবেল পুরস্কার কাকে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে সরকারের কোনও হাত নেই। এবং, তারা ভেনেজ়ুয়েলার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। গত কয়েক বছরে মাদুরো সরকার এবং মাচাদোর মধ্যে আলোচনা বজায় রাখার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকাও নিয়েছে নরওয়ে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রধানতম বিরোধীর নোবেলপ্রাপ্তি সহ্য করার মতো মনের জোর মাদুরো সরকারের নেই। কোনও দেশের সরকারেরই আছে কি?
বিতর্কিত: নির্বাচনী প্রচারে মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: পিটিআই।
অ-রাজক
ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মাডাগাস্কারে জেন-জ়ি বিপ্লব চলছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে দেশের ছাত্র-যুব সম্প্রদায় পথে নেমেছিল, জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবার বেহাল দশার প্রতিবাদে। তিন সপ্তাহের মধ্যে তা পরিণত সরকার-বিরোধী আন্দোলনে, প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোলিনা-র অপসারণের দাবিতে। প্রেসিডেন্ট শক্ত হাতে দমন করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দেশের সেনা ও পুলিশের একটা বড় অংশ যুব-জনতার বিপ্লবে সঙ্গী হওয়ায় শেষটায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেঁচেছেন। আপাতত মালাগাসি সেনার হাতে দেশ। তারা জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ‘নিয়োগ’ করে থিতু সরকার গড়া হবে শীঘ্র।
দাপট বটে!
এ মাসের গোড়াতে আফ্রিকান রাষ্ট্র মালি-র নিবাসীদের উপরে পর্যটন বা বাণিজ্য ভিসা আবেদনের আগে দশ হাজার আমেরিকান ডলার জমা করার নীতি চালু করেছে আমেরিকা। বস্তুত, আফ্রিকার যে সাতটি রাষ্ট্রের উপরে তারা ‘ভিসা বন্ড পাইলট প্রোগ্রাম’ চালু করেছে, মালি তার অন্যতম। মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার হার উচ্চ-সহ বিবিধ কারণবশত পদক্ষেপটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু বিষয়টি মোটেই ভাল চোখে দেখেনি মালি সরকার। জানা গিয়েছে, ভিসার ক্ষেত্রে এ বার আমেরিকানদের উপরে ওই একই নীতি চালু করল তারা। সে দেশের সরকারের কথা, পারস্পরিকতার নীতি মেনেই এমনটা করা হয়েছে। আফ্রিকার সাতটি রাষ্ট্রের মধ্যে মালিই প্রথম আমেরিকার ‘ইট’-এর বদলে ‘পাটকেল’টি ছুড়ল।
মরণোত্তর
নিহত দক্ষিণপন্থী চার্লি কার্ককে মরণোত্তর আমেরিকার সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার, ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ প্রদান করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কার্ক ছিলেন আধুনিক রাজনীতির যুগের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দক্ষিণপন্থী প্রবক্তাদের এক জন, যিনি ২০২৪ -এর নির্বাচনের আগে রক্ষণশীলদের একটি তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে জড়িত হতে এবং ট্রাম্পের প্রার্থিপদকে সমর্থন করতে উৎসাহিত করেছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটির একটি অনুষ্ঠানে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন তিনি। তীব্র মেরুকরণে বিশ্বাসী কার্ক প্রায়শই সমকামী এবং রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতেন। তাঁকে সম্মান জানিয়ে ট্রাম্প কী বার্তা দিলেন, বুঝতে আদৌ সমস্যা নেই।
বার্তা: ট্রাম্প ও এরিকা কার্ক। ছবি: রয়টার্স।
সোজা রাস্তা
‘এ নাইন’ হাইওয়েটি স্কটল্যান্ডের দীর্ঘতম, গুরুত্বপূর্ণ এবং লেন বাড়া-কমার কারণে বেশ দুর্ঘটনাপ্রবণ। বিশেষত প্রাণ খোয়াচ্ছেন ভিন দেশিরা, যাঁরা কোন দিক ঘেঁষে যাবেন, কোত্থেকে গাড়ি এসে পড়তে পারে, বাঁক ইত্যাদিতে সড়গড় নন। স্থানীয় হোটেলমালিকের আবিষ্কৃত ‘টুরিস্ট’ লেখা প্লেট এখন গাড়িতে লাগাচ্ছেন পর্যটকরা। স্টিকারটি দেখলে সামনের গাড়িচালক সতর্ক হবেন, জায়গা দেবেন। ইন্টারনেটে স্কটিশ ‘টি-প্লেট’ জনপ্রিয়, অর্ডার আসছে আমেরিকা, ভারত, পাকিস্তান থেকেও। শেষের দুই দেশ বলতেই পারে, সুরক্ষার টোটকা হিসাবে বিশালদেহী চার চাকার উপরে কত ভাবের কথাই তো লেখা হল, তবে এমন সিধে রাস্তায় যাওয়ার কথা কিন্তু ভাবা হয় নাই!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)