Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
পরধর্ম নিন্দা বর্জনীয়
Mythology

মহাভারত, গীতা, অশোক, শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দে একই বার্তা

বাংলার ভোটদাতারা কী করে এই প্রলাপভাষণ শুনে গেলেন যে মূর্তিপূজাবিরোধী, আর্যসমাজভক্তরা ক্ষমতায় থাকলে বাঙালি আরও ভাল করে দুর্গাপূজা করার মতো ‘অনৈতিক’ কাজ করতে পারবেন?

কর্মযোগ: কুরুক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের মুখে গীতার বাণী শুনছেন অর্জুন।

কর্মযোগ: কুরুক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের মুখে গীতার বাণী শুনছেন অর্জুন। ছবি সৌজন্য: উইকিমিডিয়া কমন্স।

অরিন্দম চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৫
Share: Save:

বঙ্গাক্ষরে ‘রাম’ আর ‘বাম’-এর মধ্যে একটি বিন্দুর ব্যবধান। সীতার চরিত্রে সন্দিহান মুষ্টিমেয় সংখ্যালঘু প্রজাদের তোষণ করতে গিয়ে গর্ভবতী অবস্থায় চিরদুঃখিনী সীতাকে নির্বাসন দিয়ে বসলেন আদর্শ রাজা ‘নরচন্দ্রমা’। সেই সীতাহীন রামচন্দ্রের জয়ধ্বনি ভারতভক্তির একমাত্র কীর্তনীয় মন্ত্র হয়ে ওঠার অনেক আগে থেকেই স্বদেশি, এমনকি সহিংস, স্বাধীনতা সংগ্রামীদেরও স্লোগান ছিল ‘বন্দে মাতরম্’। যে বঙ্কিমচন্দ্র এই দেশমাতৃকার মন্ত্রের ঋষি ছিলেন তিনিই কিন্তু যৌবনে সাম্য বলে একটি রাজনৈতিক বই লিখেছিলেন (জীবনসায়াহ্নে তিনি অবশ্য সেই বইয়ে প্রচারিত জাঁ জাক রুসোর সাম্য-স্বাধীনতা-মৈত্রীর মতাদর্শ বিষয়ে কুণ্ঠা প্রকাশ করেছিলেন)। কিন্তু, তখন থেকে আজ পর্যন্ত শতাধিক বছর যাবৎ ‘সাম্যবাদ’ শব্দটা কমিউনিজ়মের প্রতিশব্দ হিসেবে বহুল প্রচারিত। আজকাল অভিধানে দেখি ‘গণসাম্যবাদ’। এখনকার স্বৈরাচারী, পুঁজিপতিপূজক রাষ্ট্রশক্তি আমাদের মস্তিষ্ক ধুয়ে ফেলছে এ কথা প্রচার করে যে, যারাই সাম্যবাদী, তারাই বামপন্থী, অতএব অধার্মিক, অতএব অ-দেশপ্রেমিক, অতএব দেশদ্রোহী, এবং সম্ভবত সন্ত্রাসবাদী।

ঠিক যেমন এক কালে ইংরেজ শাসককুল ‘বন্দে মাতরম্’ স্লোগান কীর্তনকে সন্ত্রাসবাদের অকাট্য সাবুদ হিসেবে ধরত। ‘সাম্য’ শুনলেই যাঁরা বামাচারের গন্ধ পান তাঁদের সংস্কৃত ভাষার একটা সহজ নিয়ম বলি। নিয়মটা এই: ‘ইকুয়াল’ (সমান) থেকে যেমন ইংরেজিতে ‘ইকুয়ালিটি’ এসেছে, তেমনই ‘সম’ থেকে ‘সাম্য’, ‘সমতা’, ‘সমত্ব’— এই তিনটি সমানার্থক শব্দ বেরিয়েছে। আর সাম্যবাদে ‘আতঙ্কিত’ যোগ ও গীতাপ্রচারক রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী, ষড়যন্ত্রী ও রাজগুরুরা বিলক্ষণ জানেন যে গীতা-তে যোগের সংজ্ঞা ‘সমত্বকেই বলে যোগ’ (সমত্বং যোগ উচ্যতে, শ্রীমদ্‌ভগবদ্‌গীতা, ২.৪৮)।

কেউ বলতে পারেন, সুখে দুঃখে, জয়ে পরাজয়ে (ভোটে বা যুদ্ধে), শত্রুতে (চিনে) মিত্রে (আমেরিকায়) সমান মনোভাবের যে ‘সমত্ব’ সেটা দার্শনিক, আধ্যাত্মিক, জ্ঞানজগতের বিষয়— কর্মজগতে ক্ষত্রিয়ের সমাজজীবনের জন্য নয়। কিন্তু সাম্যযোগের উপদেশ দুই সেনাবাহিনীর মাঝখানে রথ স্থাপন করে কূট রাজনীতিবিশারদ শ্রীকৃষ্ণই ক্ষত্রিয়শ্রেষ্ঠ অর্জুনকে দিয়েছিলেন। তবে কিনা শব্দপ্রয়োগ সম্পর্কে বিষয়ে সাবধান থাকাই উচিত। ‘জাতীয়তাবাদ’ আর ‘জাতিবাদ’কে গুলিয়ে ফেলা অনুচিত। নয়তো ‘স্বয়ংসেবক’ কথাটার মানে দাঁড়িয়ে যেতে পারে ‘যে কেবল নিজেরই সেবা করে’।

গীতার ষষ্ঠ অধ্যায় ধ্যানযোগ বা অভ্যাসযোগে আবার এমন ভাবে যোগীর লক্ষণ বলা হয়েছে যে, তাতে শুধু তাত্ত্বিক ভাবে ব্রাহ্মণে, গরুতে, হাতিতে, কুকুরভোজী ও কুকুরে সমদর্শী হওয়ার কথা বলা হয়নি, বিরুদ্ধবাদীদের প্রতিও সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠার প্রাত্যহিক প্রয়াস করতে বলা হয়েছে। সেই অভ্যাস যিনি করেন, ‘আত্ম-উপমা’ দিয়ে অন্যের কেমন দুঃখ লাগবে তা টের পেয়ে যিনি কখনও অপমানিত বা আক্রান্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে অপমান বা আক্রমণ করেন না, তাঁকেই কেবল ‘যোগী’ পদবাচ্য বলা হয়েছে। নগ্নরোমশবক্ষ আয়ুর্বেদিক ঔষধ-সাবানব্যবসায়ী আর হাঁটু-দেখানো ডেনিম-পরা যুবতী, আমার দল আর বিরোধী দল— সবাইকে সমান শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখতে না পারলে, উদরের নিমিত্ত কাষায় (গৈরিক) বস্ত্র ধারণ করলে, গীতা-র মতে সেই ধর্মধ্বজীকে ‘যোগী’ বলা যাবে না!

আজকাল গণতান্ত্রিক বহুজনের দ্বারা নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান রাজাগজার মতো পাগড়িমুকুট পরে মহাভারত থেকে “যে ধর্ম পালন করে, ধর্ম তাকে রক্ষা করে” উদ্ধৃত করে বক্তৃতা দেন। এই কথাটি কিন্তু মহাভারতের বনপর্বে দ্রৌপদী যুদ্ধবিরোধী যুধিষ্ঠিরকে বিদ্রুপ করার জন্য বলেছিলেন। মহাভারতের ধর্ম হিন্দু, বৌদ্ধ বা জৈন ধর্ম নয়। মহাভারতের মতে ধর্ম হল অহিংসা বা ‘অনৃশংসতা’। কৃষ্ণ, ভীষ্ম এঁরা বিশেষ ক্ষেত্রে যুদ্ধ করাকে ধর্ম বলছেন। অথচ, অহিংসাকেই সত্য বলছেন। সত্যের প্রথম আকার হল অহিংসা, এ কথা পতঞ্জলির যোগসূত্র এবং মহাভারত বার বার বলেছে। শুধু সাভারকরের দ্বারা বহুনিন্দিত বুদ্ধ তথাগতই বলেছেন, এমন নয়। এই ধর্মের মূল কথা, “যা নিজের কাছে অসহ্য প্রতিকূল তা অন্যের প্রতি না করা।” যুধিষ্ঠির শান্তিপর্বে (১৬৪ অধ্যায়ে) পিতামহ ভীষ্মকে জিজ্ঞেস করলেন: “আপনি বলেন অনৃশংসতাই ধর্ম, তা হলে খুলে বলুন নৃশংস কে? নৃশংসতার মানে কী?” উত্তরে ভীষ্ম বললেন, “যাদের গর্হিত কাজে অদম্য স্পৃহা, যারা শঠ, সমস্ত সম্মান ও বিত্ত যারা ভাগ না করে একাই ভোগ করতে চায়, যারা নিজেদের বর্গ, শ্রেণি, জাতি সম্প্রদায়কে প্রশংসা করে (বর্গপ্রশংসী) এবং দুর্বল অনাহারক্লিষ্ট দীনহীনদের চোখের সামনে চর্ব্য চোষ্য লেহ্য পেয় অতিভোজন করে তাদের ‘নৃশংস’ বলে।” বার বার মহাভারত ক্ষমতালোভী, লোকদেখানো যোগবিজ্ঞাপনদাতা আত্মম্ভরী প্রচারকদের ‘ধর্মধ্বজী’, ‘ধর্মবণিক’ বলে নিন্দা করেছে। মহাভারতের মূল শিক্ষাকে অবহেলা করাই এই নৃশংসদের কাজ।

ইন্ডিয়া ডট কম নামে একটি দেশভক্ত ওয়েবসাইটে ২০১৬-র ২২ অক্টোবরে সংবাদে প্রকাশ যে অমিত শাহ বলেছেন, ভারতের আধ্যাত্মিক ধার্মিক ঐতিহ্যকে অবলম্বন করেই মোদী সরকার জগৎসভায় ‘সুপারপাওয়ার’ হিসেবে ভারতকে প্রতিষ্ঠা করবে। এবং এই ধর্ম হচ্ছে আর্যসমাজ ও স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী ব্যাখ্যাত বৈদিক ধর্ম। সত্যার্থ প্রকাশ নামক মূল গ্রন্থে স্বামী দয়ানন্দ কিন্তু দ্ব্যর্থহীন ভাষায় রাম, কৃষ্ণ, দুর্গা এই সব দেবদেবীর মূর্তিপূজাকে শুধু ‘অবৈদিক’ নয়, ‘অনৈতিক’ বলেছেন। দয়ানন্দের মতে উপনিষদগুলি বেদের অংশ নয়, মহাভারত, রামায়ণ তো নয়ই। সত্যার্থ প্রকাশে এ কথা স্পষ্ট লেখা আছে যে মূর্তিপূজা করলে পাপ হয়। বাংলার ভোটদাতারা কী করে এই প্রলাপভাষণ শুনে গেলেন যে মূর্তিপূজাবিরোধী, আর্যসমাজভক্তরা ক্ষমতায় থাকলে বাঙালি আরও ভাল করে দুর্গাপূজা করার মতো ‘অনৈতিক’ কাজ করতে পারবেন?

মূর্তিপূজা ও রামমন্দির প্রতিষ্ঠার প্রতি আর্যসমাজের যতটা ঘৃণা, হিন্দুত্বের মূল তত্ত্ব লেখক বিনায়ক দামোদর সাভারকর ততটাই তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করেছেন বৌদ্ধ ধর্ম ও অহিংসার বিরুদ্ধে। জীবনে শেষ ভাগে যেমন অম্বেডকর বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হন, জীবনের শেষ ভাগে সাভারকর নিরীশ্বর নাস্তিক হয়ে যান (সাভারকর: দ্য ট্রু স্টোরি অব দ্য ফাদার অব হিন্দুত্ব/ বৈভব পুরন্দর) এই সাভারকরের মতাদর্শেই বিজেপি ও মোদী সরকার উদ্বুদ্ধ। এঁর প্রভাবে জন্মসূত্রে গ্রিক মহিলা সাবিত্রীদেবী হিন্দুদের প্রতি সাবধানবাণী বইটি লেখেন। তাতে প্রথম মুসলমানদের বংশবৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় হিন্দুদের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য বর্ণাশ্রম প্রথা ভেঙে ভিন্ন বর্ণের ও জাতির বিবাহ ও সন্তান উৎপাদনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই বই কালীঘাটে ‘হিন্দু মিশন’ থেকে ১৯৩৯ সালে প্রকাশিত হয়। এই সাবিত্রীদেবী ছাপার অক্ষরে হিটলারকে বিষ্ণুর অবতার বলে স্তুতি করতেন।

সাভারকর আর এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকে সহ্য করতে পারতেন না। তিনি হলেন সম্রাট অশোক, যাঁর অশোকচক্র ভারতের জাতীয় পতাকার মধ্যমণি। বিশেষত, কলিঙ্গযুদ্ধের পর বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষিত হয়ে তিনি অহিংসা প্রচার করে ভারতকে চিরতরে দুর্বল এবং পরাধীন জাতিতে পরিণত করে গিয়েছেন— হিন্দুত্ব বইতে সাভারকরের এই হল বক্তব্য।

মহাভারতে শান্তিপর্বে ১৪২তম অধ্যায় চাঁছাছোলা ভাষায় বলেছে, “পরের বিদ্যাকে নিন্দা করে নিজের বিদ্যাকে (মত, বিশ্বাস, জীবনাদর্শ) যারা বাক্অস্ত্র (নির্বাচনী প্রচারের হুমকির ভাষা স্মরণ করুন) দিয়ে স্থাপন করে, তারা বিদ্যা ব্যবসায়ী রাক্ষসের মতো। ধর্ম তাদের ছেড়ে যাবেই।”

সম্রাট অশোক গিরনারের বারো নম্বর শিলালেখে যে কথাগুলি উৎকীর্ণ করে গিয়েছেন, তা শুধু বৈদিক বা বেদবিরোধী বৌদ্ধ-জৈনদের জন্য নয়, যবন ও বিধর্মী ভারতীয় প্রজাপুঞ্জ, ও আগামী ২,৫০০ বছর ধরে ভারতকে মানুষের ধর্মশিক্ষা দেওয়ার জন্য। ব্রাহ্মী, খরোষ্ঠী, গ্রিক ও আরামায়িকে (জিশু খ্রিস্টের মাতৃভাষা) লিখিত সেই বার্তার সারমর্ম হল, “দেবতাদের প্রিয় রাজা প্রিয়দর্শী অশোক সমস্ত পরস্পরবিরোধী ধর্মসম্প্রদায়, সন্ন্যাসী ও গৃহস্থদের পুরস্কার ও সম্মান দিয়ে থাকেন। কিন্তু দান ও সম্মানের চেয়েও বেশি গুরুত্ব তিনি দেন যার উপর তা হল প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নিজ নিজ ধর্মের মূল তত্ত্ব ও সিদ্ধান্তগুলির ওপর মুক্ত, যুক্তিপূর্ণ বিচার বিতর্কের মাধ্যমে সব ধর্মধারার সমান ভাবে পরিপুষ্টি। রাজা কড়া নজর রাখবেন যাতে কেউ নিজধর্মের প্রশংসা ও পরধর্মের নিন্দা না করে। নিজধর্মের প্রশংসা ও পরধর্মের নিন্দার দ্বারা ধর্মবিশ্বাসীরা তাঁদের নিজের ধর্মেরই ক্ষতি করেন।” এই শিলালেখ যেন হুবহু মহাভারতের পরবিদ্যা নিন্দা ও স্ব-বিদ্যার বড়াই করাকে রাক্ষসদের কাজ বলে, অধর্ম বলে চিহ্নিত করারই প্রতিধ্বনি।

‘সমাজতন্ত্র’ (সোশ্যালিজ়ম) বিষয়ে সপ্রশংস, শূদ্রজাগরণের আশার আলোকদিশারি স্বামী বিবেকানন্দ শুধু নন— ‘যত মত তত পথ’-এর ঋষি, আধুনিক ভারতের অবতারবরিষ্ঠ বিশ্বধর্ম সমন্বয়সাধক শ্রীরামকৃষ্ণও স্পষ্ট ভাষায় এই নিজধর্মে অন্ধ ‘নৃশংস’ প্রশংসা আর পরদেশ পরধর্মের নিন্দাকে বার বার বর্জন করতে বলেছেন। বলেছেন, দয়া আমাদের মুক্ত করে, মায়া আমাদের বন্ধনের কারণ, “কেবল আমার জিনিস্, আমার পরিবার, আমার জিনিস্‌কে ভালবাসার নাম মায়া। সবাইকে ভালবাসার নাম দয়া। শুধু (নিজের) দেশের লোকগুলিকে ভালবাসি এর নাম মায়া; সব দেশের লোককে ভালবাসা সব ধর্মের লোককে ভালবাসা— এটি দয়া থেকে হয়।” (কথামৃত, ১৮৮৪, ১৫ জুন)। আমরা যেন জ্বালাময়ী বক্তৃতার ‘মায়া’য় মুগ্ধ হয়ে গীতা, মহাভারত, অশোক ও রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের দয়াধর্মকে ভুলে না যাই। ত্রিশূল হাতে অহিন্দুদের ভয় দেখালে শৈব হওয়া যায় না। কাশ্মীরের মহাদার্শনিক শৈবাচার্য অভিনবগুপ্ত বলেছেন, সৎ তর্ক হল শ্রেষ্ঠ যোগ। বিতর্কের কণ্ঠরোধ করে ধর্ম বা যোগ হয় না।

দর্শন বিভাগ, হাওয়াই ইউনিভার্সিটি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Communal harmony Mythology
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE