Advertisement
E-Paper

রবীন্দ্রনাথের সময় ফেসবুক থাকলে এত গান লিখতে পারতেন তো?

ট্রেন, অটো, গাড়ি— সব জায়গায় মানুষ সেলফি তুলছেন। সেলফি না তুললে যেন ষোল কলা পূর্ণ হবে না। গান গাইতে গিয়ে বহু জায়গায় মানুষ সেলফি তোলার আবদার করেন। লিখছেন ইমন চক্রবর্তী

ইমন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:০০
অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

আপনি নিশ্চয়ই ফেসবুক করেন? টুইটারে আছেন? ইনস্টাগ্রামেও? আচ্ছা কখনও লক্ষ্য করেছেন, আমরা যত না অন্য লোকের প্রোফাইল ঘাঁটি, তার থেকে অনেক বেশি নিজের প্রোফাইল দেখি। নিজের ছবি ফিল্টার করে পছন্দ মতো রোগা করে, ফর্সা করে আপলোড করি। তা হলে আর আমার আমি কোথায় থাকলাম, এ প্রশ্ন কিন্তু কখনও করি না নিজেদের।

আমরা কি মোহগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছি না? মিথ্যের মধ্যে তো বাস করছি আমরা। আর এই প্রবণতা তৈরি হচ্ছে সেলফি অবসেশন থেকে।

আমার তো মনে হয় সেলফি তোলা একটা অবসেশন। ট্রেন, অটো, গাড়ি— সব জায়গায় মানুষ সেলফি তুলছেন। সেলফি না তুললে যেন ষোল কলা পূর্ণ হবে না। গান গাইতে গিয়ে বহু জায়গায় মানুষ সেলফি তোলার আবদার করেন। দর্শকের ভালবাসাতেই আমরা অর্থাত্ শিল্পীরা এই জায়গায় পৌঁছেছি। কিন্তু আমি হয়তো অনেকটা জার্নি করে কোনও অনুষ্ঠানে পৌঁছেছি, অথবা অনেক ক্ষণ গান গাওয়ার পর মঞ্চ থেকে নামলাম, তখন সেলফি তুলতে হয়তো আমার ইচ্ছে করছে না, এটা অনেকেই বুঝতে চান না। তখন সেলফি তুলতে না চাইলেই মুখভার হয়। আমি যে একেবারেই সেলফি তুলি না, তা নয়। কিন্তু অবসেসড হয়ে পড়াটা ঠিক নয়।

আসলে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কোথাও আমাদের গতি শ্লথ হয়ে গিয়েছে। আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয় রবীন্দ্রনাথের সময় যদি ফেসবুক থাকত, তা হলে কি উনি এত গান লিখতে পারতেন? এত সৃষ্টির সময় পেতেন?

কখনও কখনও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাভয়েড করার চেষ্টা করি আমি। কিন্তু ঠিক ঘুমতে যাওয়ার আগে একবার চেক করে নিই। যদিও আমার টিম আছে, তারাই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল করে। তবুও আমি নিজেও সময় নষ্ট করি।

কিন্তু এর তো ভাল দিকও আছে। বহু অজানা তথ্য জানতে পারি। এই মুহূর্তে ঠিক মনে পড়ছে না, বেশ কিছু সাইট রয়েছে যেখানে কুকুরদের মজার মজার ভিডিয়ো থাকে। হালকা এন্টারটেনমেন্ট হয়। আবার ধরুন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সাংঘাতিক প্রতিবাদের জায়গা তৈরি করে। #মিটু তো সোশ্যাল মিডিয়ারই ফসল। আবার কয়েক দিন ধরে একটা জনপ্রিয় গানের জঘন্য একটা বিজ্ঞাপনী ভিডিয়ো ঘুরছে বাজারে। যারা এর সঙ্গে যুক্ত তারা আমারই বন্ধু, কলিগ। কিন্তু গানটার সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে আছে। সেটা নিয়ে যথেচ্ছাচার উচিত হয়নি। আমি আমার মতো করে প্রতিবাদ করেছি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে। অনেকেই তেমন প্রতিবাদ করেছেন।

আর একটা ভাল দিক হল প্রচার। কোনও অনুষ্ঠান থাকলে আগের মতো শুধু বিজ্ঞাপনের ওপর এখন আর ভরসা করে থাকতে হয় না। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফরমেশন দেওয়ার একটা বড় জায়গা তৈরি করেছে বৈকি।

শেষে যে পয়েন্টটা বলব, সেটা হল ট্রোলিং। একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে শেষ করি। আমার আর শোভনের একটা ভিডিয়ো রয়েছে ইউটিউবে। আমাদের রিলেশনশিপ নিয়ে কথা বলেছি সেখানে। সেটা সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট হওয়ার পর কিছু কমেন্ট দেখে মনে হয়েছিল, কোথায় আছি আমরা? কাদের জন্য গান গাইছি? আমি আর শোভন রিলেশনে রয়েছি, সেটা আমাদের ডিসিশন। তাতে কার কত বয়স, বা অন্য কিছু— কী যায় আসে? তাই খুব ভেবেচিন্তে কমেন্ট করা উচিত। যারা ট্রোল করে তারা বেসিক্যালি ফ্রাস্ট্রেটেড। তাদের কোনও কাজ নেই।

ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন

Digital Revolution Iman Chakraborty ইমন চক্রবর্তী Celebrities Tech
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy