পুণেতে বাঁকুড়ার যাঁরা আটকে রয়েছেন, তাঁদের নামধাম। ছবি-লেখক।
পদ্মলোচন পাল, রামনগর, ইয়েরওয়াড়া, পুণে-৬, মহারাষ্ট্র, ইমেল-padmalochanpal93@gmail.com
চিঠি-৫: রেশন পাচ্ছি না, পুরসভার চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর কেউই কিছু করলেন না!
আমি পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার নবদ্বীপ পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আমাদের রেশন কার্ডের ফর্ম পৌরসভায় জমা দেওয়ার পরেও রেশন কার্ড আসেনি। তাই আমি যখন রেশন আনতে যাই, ডিলার বলে পৌরসভায় যোগাযোগ করতে। আমি সেখানেও যাই এবং জমা দেওয়ার রিসিভড কপি দেখাই। ওঁরা বলেন, কাউন্সিলরের কাছে যেতে। যাঁর নাম চৈতালি গুই। আমি সেখানেও যাই এবং কাউন্সিলর জানান যে, তিনি অফিস থেকে জানবেন। কিন্তু তার পরের দিন রবিবার হওয়ায়, তিনি আমাকে বলেন যে আমাকে সোমবার ফোন করে নেওয়া হবে। তার পর আমার থেকে ফোন নম্বর আর জমা দেওয়ার রিসিভড কপির নম্বর লিখে নেন তিনি। তার পর সোমবার উনি কোনও ফোন করেননি। আমি বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার যাই ওঁর বাড়ি। উনি আমাকে জানান, আমাদের নাকি কোনও ফর্ম অফিস থেকে জমা পরেনি। তখন আমি ওঁকে বলি এটা তো আমাদের দিক থেকে কোনও ভুল নয়। আমি তো ২/৩ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে জমা দিয়েছি এবং তার রিসিভড কপিও রয়েছে।
যেখানে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁরাও রেশন পাবেন, তখন উনি বলেন, আমি দেখছি কি করা যায়। আর আমাকে একটা টোকেন দেওয়া হয়। বলা হয়, পৌরসভায় গিয়ে টোকেন দেখালে চাল দেবে। আমি ওঁকে বলি আমার এটার দরকার নেই। আমার যেটা দরকার সেই রেশনের ব্যবস্থা করে দিন। উনি ভরসা দেন যে উনি দেখছেন। তার পর কিছু দিন হওয়ার পর, আজ আমি আমার বাবাকে পাঠাই ওঁর কাছে এবং উনি বলেন চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে যেতে। আমার বাবা সেখানেও যান। চেয়ারম্যান সব দেখে বলেন, এখন করা যাবে না। আমার বাবা তখন ওঁকে বলেন, আমাদের দিক থেকে তো কোনও দোষ নেই, তা হলে আমার রেশন কেন পাব না? উনি সাফ জানিয়ে দেন, কোনও কিছুই করা যাবে না।
তা হলে আপনারাই বলুন, এই অসময়ে যদি আমাদের জনপ্রতিনিধিকে পাশে না পাই তা হলে আমরা কাদের ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি করে ছিলাম? শুধু আমি নয় এ রকম অসুবিধায় রয়েছে আমাদের মতো প্রচুর নিম্নমধ্যবিত্ত লোক, যাঁরা নবদ্বীপে থাকেন। ওঁরা ভোট হয়ে গেলে সকলকে ভুলে যান! এই সঙ্কটময় মুহূর্তে আপনাদের একান্ত সহযোগিতা কামনা করছি।
রাম চন্দ্র ঘোষ, নবদ্বীপ, নদিয়া
চিঠি-৬: সাহিবাবাদে ২৪ তারিখ পর্যন্ত হস্টেল ভাড়া দেওয়া আছে, তার পর কী হবে জানি না
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের সাহিবাবাদে ট্রেনিং করতে এসেছিলাম এক মাসের জন্য। গত ২১ মার্চে ট্রেনিং শেষে এখানেই আটকে পড়েছি। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা, মা একা থাকেন। প্রথমে যেখানে ছিলাম সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল না, ট্রেনিং সেন্টারেই খেতে যেতাম। এই লকডাউনের জন্য সেই কোম্পানিও বন্ধ আছে। তাই একটি হস্টেলে চলে আসি। এখন থাকা, খাওয়ায় অসুবিধা না হলেও হস্টেল ভাড়া অনেকটাই বেশি। যা এর পরে আমার দেওয়া সম্ভব হবে না। আমার টাকাপয়সাও শেষ। এই মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত হস্টেল ভাড়া দেওয়া আছে। তার পর কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার বাড়ি ফেরাটা খুব দরকার।
শেখ সামিম, মোবাইল- ৯৭৪৮৩৮২৮৮৫
চিঠি-৭: স্বামী একলা আছেন, আমিও খুব অসুস্থ, যে ভাবেই হোক আমাকে দিল্লিতে ফেরান
বেঙ্গালুরুতে বাবার অস্ত্রোপচারের পর গত ১৫ মার্চ আমি পিত্রালয়ে আসি। দিল্লিতে ফেরার জন্য আমার বিমানের টিকিট কাটা ছিল গত ২৪ মার্চের। কিন্তু লকডাউন চালু হওয়ায় সেই টিকিট বাতিল করতে হয়। দিল্লিতে স্বামী একলা আছেন। উনি অসুস্থ। আমিও মানসিক অবসাদের রোগী। আমি দিল্লিতে না ফিরতে পারলে দু’জনেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়ব। আমার চিকিৎসার কাগজপত্রও আমার সঙ্গে নেই। যেখানে আছি, সেখানে মানসিক রোগের চিকিৎসার ভাল ব্যবস্থাও নেই। আমাকে যে ভাবেই হোক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিল্লিতে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।
সুরানিতা কাঞ্জিলাল, ইমেল- suranita.math@gmail.com
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)