Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: মৌলবাদী একনায়ক

প্রমথনাথ বিশী সম্পর্কিত চিঠিগুলি পড়ে (২৬-৬), আমার অভিজ্ঞতা যোগ করি।

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান।

পলাশ পাল ‘গণতন্ত্রের পথে, তারই মুখোশে’ (২০-৭) নিবন্ধে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরডোয়ানকে (ছবিতে) গণতন্ত্রের মুখোশ পরা একনায়ক বলে চিহ্নিত করেছেন। ঠিকই। তুরস্কের বর্তমান শাসকের সর্বনেশে দিকটা সম্পর্কে আরও কিছু বলি। আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা ও দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা কামাল আতাতুর্কের উদার গণতান্ত্রিক কাঠামোয় গড়া দেশের খোলনলচে বদলে দিয়ে, প্রেসিডেন্ট এরডোয়ান তুরস্ককে আর পাঁচটা ইসলামিক রাষ্ট্রের ধাঁচে ফেলার চেষ্টা করছেন। চালু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নিজের কব্জায় আনতে সর্ব স্তরে নিজের পছন্দমতো লোক বসিয়ে দিতে পেরেছেন।

কামাল আতাতুর্ক ছিলেন সেকুলার ও জাতীয়তাবাদী নেতা। সেখানে এরডোয়ান তুরস্কের চালু আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থাকে ধর্মীয় শিক্ষার অন্ধকূপে নিক্ষেপ করতে উদ্যোগী হয়েছেন। বছর ছয়েক আগে, এরডোয়ান তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী, ঘোষণা করলেন যে তাঁর ইচ্ছে দেশের নতুন প্রজন্ম ধার্মিক হয়ে উঠুক! কেউ যেন আশা না করে যে একটা রক্ষণশীল ও গণতান্ত্রিক দল যুবসম্প্রদায়কে নাস্তিক হতে মদত দেবে। এমনকি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরডোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মুহারেম ইঞ্চে ধর্মীয় স্কুল স্থাপন করার বিরোধিতা করার সাহস দেখাননি। পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক হয়েও ইঞ্চে নিজেও যে ধর্মীয় স্কুলে পড়েছেন, তা বলে বেশ গর্ব বোধ করেন। এরডোয়ানের সেকুলার পাবলিক স্কুলের নতুন নামকরণ হয়েছে। ইমাম হাতিপ স্কুল।

অবশ্য ১৫ বছর আগে ৪৫০টা থেকে বেড়ে ৪৫০০টা স্কুল হয়েছে। তা ছাড়া শিক্ষাখাতে সরকারি অনুদানও অনেক বেড়েছে। ইস্তানবুলের ইউরোপের দিকের জেলা বেসক্যাটাস-এ, মা-বাবারা সন্তানদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ ও বৈজ্ঞানিক শিক্ষা চালু রাখার দাবিতে পথে নেমেছেন। কিন্তু সে দাবিতে কে-ই বা কান দেয়!

এরডোয়ান নিজে যে ধর্মীয় স্কুলে পড়েছেন, সেখানে গত বছর এক অনুষ্ঠানে গিয়ে পুরনো কথা বলেছেন যে কী ভাবে সেই স্কুলের শিক্ষকরা তাঁকে বলতেন, এখানে পড়তে এসেছ কেন, মৃত ব্যক্তির গা ধোয়ার কাজ ছাড়া আর কিছু জুটবে না। প্রায় হাজার দুয়েক স্কুলের প্রিন্সিপালকে তাড়িয়ে দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। কাদের? না, যাঁরা ধর্মীয় স্কুলে পড়েছেন শুধুই তাঁদের। তাই এরডোয়ানকে শুধু একনায়ক না বলে মৌলবাদী রাষ্ট্রনায়ক বললেই বরং সঠিক হত!

বরুণ ভট্টাচার্য

কলকাতা-৩৯

প্রমথনাথ

প্রমথনাথ বিশী সম্পর্কিত চিঠিগুলি পড়ে (২৬-৬), আমার অভিজ্ঞতা যোগ করি। ১৯৬৪-৬৬’র সেশনে আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী হওয়ার সুবাদে, প্রমথবাবুর সংস্পর্শে আসার সুযোগ পাই; ক্রমে ক্রমে ওঁর অপার স্নেহময় মানসিকতায় আমাদের সম্পর্কটা পারিবারিক সূত্রে গাঁথা হয়ে পড়ে। এই সম্পর্ক আমৃত্যু বজায় ছিল। উনি আমাদের দমদমের বাড়িতে মাঝে মাঝেই আসতেন। এক বার আমি ঠিক করেছিলাম, ২৫ বৈশাখ সকালে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অনুষ্ঠানে যাব। কিন্তু হঠাৎ করেই আগের দিন আমাকে উনি জানালেন, আমাদের বাড়িতে আসতে চান। আমি একটু কিন্তু-কিন্তু করে আমার ইচ্ছেটা জানাতে, উনি বললেন, ‘‘দেখো, মৃত কবির চেয়ে জীবন্ত কবির দাবি বেশি।’’ আমি তৎক্ষণাৎ ওই দিনের প্রোগ্রাম বাতিল করে দেওয়ায়, উনি সারাটা দিন আমাদের সঙ্গে কাটিয়ে কত যে মজার মজার গল্প বললেন! শেষে মনে হল, ভাগ্যিস যাইনি!

বীথিকা চক্রবর্তী

কলকাতা-৭৪

বাজে কথার ফুল

মনে আছে, এক দিন ক্লাসে এসে সমস্ত পিরিয়ড ধরে প্রমথনাথ বিশী শুধু খোশগল্প করে গেলেন। সবই পাঠ্য বিষয়ের বহির্ভূত। আমরা ছাত্ররা বেশ উপভোগ করলাম। পিরিয়ডের শেষে আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘বলো, কী শিখলে?’’ আমরা সব মুখ-চাওয়াচায়ি করছি। তিনি বললেন, ‘‘ছাত্রজীবনের শেষে অনেকেই হয়তো শিক্ষকতা করবে। তখন যে দিন ক্লাসে পড়াতে ভাল লাগবে না, সে দিন সারা ক্ষণ এমনি গল্প করে কাটিয়ে দেবে। শ্রদ্ধেয় রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন, ‘বাজে কথার ফুলের চাষ।’’

অমরনাথ ঢোল

কলকাতা-২৬

বিচক্ষণ মোদী

আজ থেকে প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগে রবীন্দ্র সরোবরে একটি কিশোর কুমার নাইট জলসা হয়েছিল, সেখানে মধ্যরাত্রিতে পিছনের দিকে সামান্য গোলমাল শুরু হয়। তৎক্ষণাৎ গোলমাল থামাতে পুলিশ কিছু ব্যবস্থা করেছিল, কিন্তু হঠাৎ কিশোরকুমার অনুষ্ঠান বন্ধ করে সাজঘরে চলে যান। সঙ্গে সঙ্গে আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে, ভাঙচুর, লাইট নেভানো, মহিলাদের শ্লীলতাহানি... তখন এক জন পুলিশ অফিসার খেদ করে বলেছিলেন, যদি কিশোরকুমার অনুষ্ঠান চালিয়ে যেতেন, হয়তো এত বড় দুর্ঘটনা ঘটত না।

তাই আমার ধারণা, সভার কাঠামো ভেঙে পড়ার পর, প্রধানমন্ত্রী যদি ভাষণ বন্ধ করতেন, তা হলে আরও বড় দুর্ঘটনা হত, লোকে হয়তো আতঙ্কে ছোটাছুটি করত, হয়তো পদপিষ্ট হয়ে কিছু লোক মারা যেত, তাই বক্তৃতা চালিয়ে গিয়ে তিনি বোধ হয় বিচক্ষণতারই পরিচয় দিয়েছেন।

প্রভাকর মজুমদার

দক্ষিণ বারাসত, দ. ২৪ পরগনা

নেতিবাচক

‘পিটিয়ে মারার ব্যস্ত শ্মশানে’ (১৯-৭) নিবন্ধে লেখক কী অবলীলায় আফগানিস্তানের তালিবানদের সঙ্গে বর্তমান ভারতের তুলনা টেনে দিয়েছেন! একটু তালিবানদের নিন্দা করেই, ভারতের বর্তমান অবস্থার মুণ্ডপাত করেছেন! শুধু এটুকু প্রশ্ন, তালিবানদের বিরুদ্ধে এ ভাবে কাবুলে বসে লিখতে পারতেন কি? আফগানিস্তানে কিছু দিন আগেই যে ১৮ জন ভারতীয় নিধন হল, সে নিয়ে আপনার লেখা আসে না? সুন্দর সকালে আজকাল প্রায়ই দেশবিরোধী, নেতিবাচক লেখা দিয়েই আনন্দবাজার দিন শুরু করছে!

অমিত কুমার ভট্টাচার্য

কলকাতা-১৪৫

ভুল লুকোচুরি

‘বাস্তবের বন্ধুত্বই বড় পর্দায়’ (আনন্দ প্লাস, ৩-৭) প্রতিবেদনে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তনুজা অভিনীত প্রিয় ছবির মধ্যে ‘লুকোচুরি’-র উল্লেখ করেছেন। ‘লুকোচুরি’তে তনুজা অভিনয় করেননি, করেছিলেন মালা সিন্হা।

হীরালাল শীল

কলকাতা-১২

চিঠি স্বীকার

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, অন্য মন্ত্রী এবং পদস্থ আধিকারিকদের চিঠি লিখলে তার প্রাপ্তি স্বীকার করা হয় না। তাই চিঠি লিখে কী ফল হল, জানা যায় না। কেন্দ্রীয় সরকারের কিন্তু সুব্যবস্থা আছে, প্রতিটি চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করার এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হল তা জানিয়ে দেওয়ার।

অনুপ মণ্ডল

চন্দননগর, হুগলি

মারাদোনা

রূপসা দাস লিখিত চিঠির (‘এত ফাউল কেন?’, ১২-৭) সপ্রশংস উল্লেখ করছি। আরও একটি দৃষ্টিকটু ও খেলার গতিভঙ্গকারী উদ্যম দেখছি খেলোয়াড়দের মাটিতে পড়ে যন্ত্রণার ভান করে ফাউল আদায় করার চেষ্টা, যার প্রথম উপস্থাপক হিসেবে আমি ১৯৯০ বিশ্বকাপে মারাদোনাকেই স্মরণ করব।

তারক নাথ সুর

মঙ্গলাবাগ, ওড়িশা

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ই-মেলে পাঠানো হলেও।

Turkey Recep Tayyip Erdoğan Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy