Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Cartoons

সম্পাদক সমীপেষু: কার্টুনের আকাল

কার্টুনশিল্পী হিসেবে বাঙালিদের প্রাধান্য কখনওই ছিল না। দক্ষিণ ভারতীয়রাই সব সময় এই বিষয়ে প্রাধান্য দেখিয়ে চলেছেন।

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২২ ০৪:৫৯
Share: Save:

অনেক বছর হল বাংলা পত্রপত্রিকায় রাজনৈতিক কার্টুনের অস্তিত্ব সে ভাবে খুঁজে পাওয়া যায় না। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। কার্টুনশিল্পী হিসেবে বাঙালিদের প্রাধান্য কখনওই ছিল না। দক্ষিণ ভারতীয়রাই সব সময় এই বিষয়ে প্রাধান্য দেখিয়ে চলেছেন।

ষাটের দশকের আগে থেকে আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত কুট্টির দুর্দান্ত রাজনৈতিক কার্টুন আনন্দবাজার পত্রিকা-সহ বেশ কিছু প্রথম সারির দৈনিকে বড় করে প্রায়শই ছাপা হত। দেশ পত্রিকাতেও ছাপা হত। কুট্টি ছিলেন কেরলের মানুষ। তার পর উনি বিদেশ চলে যান। ২০১১ সাল নাগাদ বয়সজনিত কারণে প্রয়াত হন। তার পর বহু দিন যাবৎ প্রথম সারির দৈনিকগুলিতে রাজনৈতিক কার্টুন দেখাই যায় না। কী কারণে, আমার মতো পাঠকদের তা জানা নেই।

ফেসবুক, টুইটার-সহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েব পোর্টালে বর্তমানে সতীশ আচার্য (বাঙালি নন), মাহফুজ আলি, আলোক, চন্দন কুমার, মঞ্জুল এবং আরও অনেকের বেশ ভাল মানের ইংরেজি, হিন্দি রাজনৈতিক কার্টুন পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলায় তা অতি দুর্লভ, বা বলা ভাল, পাওয়াই যায় না। অথচ, তামিল, মালয়ালম, তেলুগু, হিন্দি ইত্যাদি ভাষায় প্রকাশিত খবরের কাগজেও ভাল রাজনৈতিক কার্টুন ছাপা হয়। বস্তুত আনন্দবাজার রাজনৈতিক কার্টুন বন্ধ করার পর এই রস থেকে বাঙালি বঞ্চিত। দুঃখের বিষয়, বাঙালির উচ্চ মানের রাজনৈতিক কার্টুন তৈরির দিকে দৃষ্টি নেই। বাঙালি, এই ক্ষেত্রটিতে কার্যত শূন্যেই অবস্থান করছে। ইমার্জেন্সির সময় একুশ মাস কার্টুনের কিছুটা আকাল ছিল। রাজনৈতিক কার্টুনের বিষয়বস্তু সরকারকে ব্যঙ্গ করেই ভাল হয় এবং সারা পৃথিবীতে সেটারই বেশি চল। বর্তমান ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এই দেশে কার্টুনিস্টদের জন্য যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি চলছে, তাতে সন্দেহ নেই। তা সত্ত্বেও তো সরকারকে ব্যঙ্গ করেই প্রচুর রাজনৈতিক কার্টুন হচ্ছে অন্য ভাষায় ও ইংরেজিতে। সেগুলি আমরা বাঙালিরাই তো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে চলেছি। তা হলে?

বাংলায় একটা অম্বিকেশ মহাপাত্রের ঘটনায় ভয় পাওয়া ঠিক হবে না। বাঙালিরা সব সময়েই প্রতিবাদী। তাই ভয়ে চুপ না থেকে এই বিষয়ে পারদর্শীরা এগিয়ে আসুন।

প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, কলকাতা-১০৮

বিজ্ঞান তাপস

গ্রেগর জোহান মেন্ডেলের ২০০তম জন্মদিনকে স্মরণ করে পার্থ প্রতিম মজুমদারের লেখা ‘পথের কাঁটাগুলি রয়েই গেল’ (২২-৭) শীর্ষক প্রবন্ধ সম্পর্কে এই পত্র। স্কুলে যখন দশম শ্রেণি থেকে সুপ্রজননবিদ্যার পাঠ শুরু হয়, তখন থেকেই মেন্ডেলের বংশগতির সূত্র ও তাঁর পর্যবেক্ষণগুলির সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা পরিচিত হয়। এর পর উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের পরে মেন্ডেলের গবেষণা হয়ে দাঁড়ায় আলোকবর্তিকার মতো। তিনি যে পথ দেখিয়ে গিয়েছেন, সেই পথ ধরে হেঁটে শস্য, ফল, ফুল থেকে প্রাণী প্রজননে সাফল্য পেয়ে থাকেন প্রজননবিদরা। এও এক আশ্চর্য, মেন্ডেল এক জন যাজক হয়েও বিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে খুঁজেছেন উদ্ভিদ ও প্রাণীর বংশগতিতে বৈচিত্রের কারণ। তিনি গরুর দুধে সোনা থাকার মতো কোনও উদ্ভট তত্ত্ব খাড়া করেননি।

মেন্ডেল যখন ঢুকলেন ফ্যাকাল্টি অব ফিলসফি, দ্য ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি অ্যান্ড এগ্রিকালচারে, তখন সেখানে প্রধান ছিলেন জোহান কার্ল নেস্টলার। তিনি ব্যাপক গবেষণা করেছিলেন প্রাণী ও উদ্ভিদের বংশগতির বিষয়ে, বিশেষ করে ভেড়ার বংশগতি নিয়ে। মেন্ডেল জেনেছিলেন সেই গবেষণার পদ্ধতি ও ফলাফল। ১৮৬৮ সালে তিনি যখন মঠের অধ্যক্ষ, তখন তাঁর গবেষণা থেমে যায়, এবং তিনি মঠের দায়িত্ব সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ১৮৮৪ সালের ৬ জানুয়ারি ক্রনিক নেফ্রাইটিসে ভুগে ৬১ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পরে যিনি মঠের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন, তিনি মেন্ডেলের সংগ্রহের অনেক কাগজ পুড়িয়ে দেন।

১৮৬৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ও ৮ মার্চ ব্রুনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির সভায় মেন্ডেল গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেছিলেন। এর ফলে তাঁর সমর্থনে কয়েকটি প্রতিবেদন স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়, তবে বৈজ্ঞানিকরা বিষয়গুলিকে এড়িয়ে যান। চার্লস ডারউইন মেন্ডেলের গবেষণা সম্পর্কে জানতেন না। যদি জানতে পারতেন, জীববিজ্ঞানের শাখা হিসেবে সুপ্রজননবিদ্যা হয়তো আরও অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত হত। জানলে অবাক হয়ে যেতে হয়, ১৮৫৬ থেকে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত মেন্ডেল ২৮০০০টি গাছের উপর বংশগতির পরীক্ষা করেছিলেন এবং এই বিরাট সংখ্যক গাছের বেশির ভাগই ছিল মটরগাছ। নিরলস পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার মধ্যে দিয়ে তিনি কোথায় পৌঁছেছিলেন, সেটা জানলে বিস্ময়ের অন্ত থাকে না। পড়াশোনা করার সময় যখন তীব্র অর্থকষ্টে ভুগেছেন, তখন বোন থিরোসিয়া সাহায্য করেছেন। মেন্ডেলের পরিবার যেখানে বাস করত, সেখানে সরকার তাঁর নামে মিউজ়িয়াম করেছে।

তাঁর গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে বক্তৃতা দেওয়ার সময় প্রায় চল্লিশ জন উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু মেন্ডেলের কাজ তাঁরা ধরতে পারেননি। সেই সময়ের বিখ্যাত জীববিদ্যাবিশারদ কার্ল নেগেলিকে তিনি তাঁর গবেষণা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। তিনিও মেন্ডেলের গবেষণা বুঝতে পারেননি।

এমনই কাজ মেন্ডেল করে গিয়েছেন যে, তাঁর নাম জানেন না বা তাঁর কাজের সঙ্গে পরিচয় হয়নি— আধুনিক পৃথিবীতে তেমন ছাত্রছাত্রী বোধ হয় নেই। মেন্ডেলের জীবন ও গবেষণা এই জটিল সময়ে আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে, একমাত্র বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণই সত্যকে উদ্ঘাটিত করতে পারে।

পঙ্কজ পাঠক, পূর্ব বর্ধমান

পান শিল্প

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চপকে ‘শিল্প’ তকমা দিয়ে বাংলায় ঝড় তুলেছেন। সেই হাওয়া ইউনিভার্সিটির গবেষণাগারেও ঢুকে পড়ল নিঃশব্দে। কিন্তু চপের চেয়ে অনেক বেশি প্রাচীন একটি মুখরোচক মুখশুদ্ধি পান। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ সুসজ্জিত পানের মধ্য দিয়েই শ্রীরাধার কাছে (তাম্বুল) প্রেমের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন সেই কবে! চতুর্দশ শতকে বড়ু চণ্ডীদাসের লেখা শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন কাব্যের ‘তাম্বুলখণ্ড’ অন্তত তৎকালীন সমাজের এই চিত্রই তুলে ধরেছে। পান একটি ঐতিহ্যবাহী বড় শিল্পের তকমা পেতেই পারে। পাড়ায় পাড়ায়, বাজারে বাজারে অসংখ্য পানের দোকান আছে এবং তাদের উপার্জনও নজরকাড়া। তাই অনুরোধ, এই প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীরা পানকেও শিল্পের পোশাক পরিয়ে গবেষণা করে দেখুন। বাংলার অর্থনীতিতে এর অবদান বিশ্লেষণ করে দেখুন।

অলকেশ মাইতি, পটাশপুর, পূর্ব মেদিনীপুর

অসহায়

‘পার্থের কুকুরের খোঁজে আবাসনে কলকাতা পুলিশ’ (১-৮) শীর্ষক প্রতিবেদনটি পশুপ্রেমীদের কাছে খুশির খবর। মনিবের দেখা না পেলে সারমেয়দের মধ্যে কেমন প্রতিক্রিয়া হয়, তা আমি প্রতিনিয়ত উপলব্ধি করি। আমার নিজেরও একটি বিদেশি প্রজাতির কুকুর আছে। এক দিন কেন, মাত্র কয়েক ঘণ্টা চোখের আড়াল হলেই তার যে কী করুণ প্রতিক্রিয়া ঘটে, ভাবা যায় না। অনেক সময় দিনের পর দিন তারা অভুক্ত থাকে। বিশেষ করে মালিকের কিছু হলে এই অবলা প্রাণীগুলোকেই ভুগতে হয়। বহু ক্ষেত্রেই ওরা না পায় ভাল অভিভাবক, না পায় তাদের উপযুক্ত থাকার জায়গা। অনেক ক্ষেত্রেই বন্দি হয়ে থাকতে হয় কোনও অচেনা অজানা পরিবেশে, কোনও আশ্রয়স্থল বা হাসপাতালে।

মঙ্গল কুমার দাস, রায়দিঘি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cartoons Political Cartoons
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE