Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু:শান্তিতে থাকতে দাও

পাপারাৎজ়িরা পারলে সেলেবদের মলমূত্র বিয়োগ বা সঙ্গমের দৃশ্যও দর্শকদের কাছে তুলে ধরেন। আর, সেন্টিনেলিজ়রা সভ্যতাকে নিজেদের বলে মানতে চাইছেন না।

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০

এই পৃথিবীতে কি ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বলে অার কিছু রাখতে দেবে না শপথ নিয়েছে এক দল অত্যুৎসাহী স্বঘোষিত অ্যাডভেঞ্চারার? সেলেব্রিটিদের তো নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছে, পাপারাৎজ়িরা পারলে সেলেবদের মলমূত্র বিয়োগ বা সঙ্গমের দৃশ্যও দর্শকদের কাছে তুলে ধরেন। আর, সেন্টিনেলিজ়রা সভ্যতাকে নিজেদের বলে মানতে চাইছেন না। তাঁদের একটু শাান্তিতে নিজেদের মতো করে থাকতে দিলে, এই তথাকথিত সভ্য পৃথিবীর কী মহাভারত অশুদ্ধ হবে?

অরূপরতন আইচ

কোন্নগর, হুগলি

ফুটব্রিজ


মাঝেরহাটে ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর সংবাদমাধ্যম রাজ্যের নানা প্রান্তের সেতুগুলির বেহাল এবং ঝরঝরে অবস্থা নিয়ে লিখে গেল। ফরাক্কা সেতুর দুরবস্থা জনসমক্ষে আসবার পর কিছুটা সারাই হল। তার পর কাজ থেমে গেল। অথচ গত কুড়ি বছর ধরেই ফরাক্কা সেতুর অবস্থা বেশ খারাপ।
সাঁতরাগাছি স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজে কিছু যাত্রীর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনাতেও আবার বিভিন্ন স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজের দুরবস্থার কথা লেখা শুরু হয়েছে। যেখানে রেলকর্তাদের, স্টেশন ম্যানেজারদের এফওবি (ফুট ওভারব্রিজ)-র সঙ্কীর্ণতা অর্থাৎ সরু ব্রিজ নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ পাচ্ছে! কিন্তু বিগত বছরগুলোতে এনজেপি স্টেশন-সহ বারসই জংশন, সামসি, হরিশ্চন্দ্রপুর, কুমেদপুর, অন্য দিকের নিউ কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার জংশন প্রভৃতি এফওবি-র নানা ধরনের ত্রুটি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অসংখ্য লেখা প্রকাশিত হয়েছে। পুরনো দিনের ফুটব্রিজের দু’পাশেই অ্যাপ্রোচ সিঁড়ি থাকত, যা দিয়ে প্ল্যাটফর্মের দু’পাশ থেকে এসে যাত্রীরা উঠতে পারতেন। এখন অধিকাংশ জায়গায় একটি দিকেই অ্যাপ্রোচ সিঁড়ি (কু-লোকে বলে, এক দিকের সিঁড়ির টাকা ‘মেরে দেওয়া’ হচ্ছে), আর অন্য যে একটি অ্যাপ্রোচ সিঁড়ি থাকছে তার মেজ়ারমেন্টও যথেষ্ট গোলমেলে। সিঁড়ির ধাপ কমিয়ে দিয়ে অ্যাপ্রোচ সিঁড়িটাকে আরও খাড়া করে তৈরি করা হচ্ছে। ওই খাড়া সিঁড়ি দিয়ে মালপত্র-সহ সমস্ত যাত্রী, প্রবীণ যাত্রী, বাচ্চা কোলে মা, শিশু ও বৃদ্ধাদের উঠতে বুকে হাঁপ ধরে যায়। পদপিষ্ট হয়ে যাত্রী-মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম নয়, লালুপ্রসাদ যাদবের রেলমন্ত্রিত্বেই নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত চল্লিশ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেখানেও প্রতিটি এফওবি-তে একটিই অ্যাপ্রোচ সিঁড়ি ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনা থেকে রেল প্রশাসন কোনও শিক্ষা নেয় না।

শান্তনু বসু
চাঁচল কলেজ, মালদহ

নতুন জেল


‘তারকা-হোটেলের সঙ্গে নয়া জেলের তুলনা টানলেন মন্ত্রী’ শীর্ষক সংবাদ (১৫-১১) মনে যুগপৎ আনন্দ ও বিষাদ তৈরি করল। আনন্দের কারণ: আসামি বা অপরাধীরাও মানুষ। মানবাধিকার সবার জন্য। কেউই অপরাধী হয়ে জন্মায় না। নানান পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি মানুষকে অপরাধী করে তোলে। সঙ্গত কারণেই এখন কারাগারের অপর নাম সংশোধনাগার। সভ্য ভাবে বেঁচে থাকার সকল সুযোগ-সুবিধাই সংশোধনাগারে থাকা উচিত। বন্দি অবস্থায় অনেকেই পড়াশোনা করেছেন এবং সৃষ্টিশীল রচনা লিখেছেন। যা সংস্কৃতির ইতিহাসে স্থায়ী মর্যাদার আসন পেয়েছে।
আর বিষাদের কারণ: বিদেশে, যেমন সুইডেন, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসে— আসামির অভাবে কারাগার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ কারাভবনগুলিকে লাইব্রেরি বা মিউজ়িয়ামে বদলে দিচ্ছে। আর আমাদের দেশে উল্টে ঢাকঢোল পিটিয়ে জেলখানার উদ্বোধন হচ্ছে। কারামন্ত্রী গর্বিত হচ্ছেন বিশাল জেলখানা তৈরি করে। আমরা বুঝতে পারছি না, নতুন নতুন জেলখানার নির্মাণ আসলে গৌরবের নয়, লজ্জারই বিষয়।


কৌশিক চিনা
মুন্সিরহাট, হাওড়া

সমাজ, অধিকার


‘প্রথা ভাঙার কী দরকার?’ (১৪-১১) চিঠিতে প্রশ্ন করা হয়েছে, দীর্ঘ দিন সংসার করার পর স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীদের কি ইচ্ছে থাকে সিঁদুরখেলায় যোগ দিতে? মনে রাখতে হবে, মানুষের যেমন অনুভূতি, স্মৃতি, আবেগ আছে, তেমন তার সঙ্গে সেগুলি মনের গোপনে লুকিয়ে রাখার, নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আছে। শোকের তীব্রতা সময়ের সঙ্গে স্তিমিত হতে বাধ্য। স্বামীহারা মহিলাকে আমাদের সমাজ বাড়তি সুবিধা দেয় কি? তা হলে সব শুভ অনুষ্ঠান থেকে তাকে ব্রাত্য করে রাখার অধিকার সমাজকে কে দিল?
কোনও দিন কোনও বাবা-হারা মেয়ে বা ছেলেকে জিজ্ঞাসা করে দেখবেন, মনের উপর কী বয়ে চলে, যখন তাদের সামনে তাদের মা’কে শুনতে হয়, ‘‘না, না ও বিধবা। ওকে এখানে থাকতে নেই, এটা করতে নেই, সেটা করতে নেই।’’ মহিলাদের বৈবাহিক চিহ্নগুলো যদি দাসত্বের প্রতীক না হয়ে নিতান্তই নিরীহ হয়, তা হলে তা উৎসবের প্রাঙ্গণে মানুষের মধ্যে মস্ত প্রাচীর তুলতে পারত না!


মৌসুমী ঘোষ
কৃষ্ণনগর, নদিয়া

খেলনা শৌচাগার


বর্তমানে মিশন নির্মল বাংলা অভিযান নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত ব্লক ও জেলা স্তরে জোরকদমে প্রচার চলছে। সরকারি অনুদান ১০০০০ টাকা এবং ব্যক্তিগত ব্যয় ৯০০ টাকা, মোট ১০৯০০ টাকায় গ্রামে গ্রামে শৌচাগার তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেগুলিকে খেলনা শৌচাগার বলাই ভাল। সবাই জানেন, আজকের দিনে ওই টাকায় ঠিকঠাক ভদ্রস্থ শৌচাগার নির্মাণ অসম্ভব। যারা ওই সরকারি অনুদানের সঙ্গে আরও তিন চার গুণ অর্থ নিজেরা ব্যয় করতে পারছেন, তাঁরাই ব্যবহারযোগ্য শৌচাগার পাচ্ছেন। গ্রামাঞ্চলের একটা বিরাট অংশ এটা পারছেন না। বিশেষ করে যে এলাকায় তথাকথিত পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা বাস করেন, সেখানকার অবস্থা খুবই খারাপ। সেখানে যে খেলনা শৌচাগারগুলো বানিয়ে তড়িঘড়ি ছবি তুলে বলা হচ্ছে মিশন সম্পূর্ণ, সেগুলিতে এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকতে হয়। তা ছাড়া সবার বাড়িতে নলকূপ বা জলের ব্যবস্থা না থাকায় শৌচাগারগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় থেকে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে বাংলাকে সত্যি নির্মল করতে গেলে, ‘কমিউনিটি শৌচাগার’ তৈরির উপর জোর দিতে হবে। পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলিতে, প্রতি পরিবারকে ১০০০০ টাকা না দিয়ে, সামগ্রিক ভাবে যদি টাকা খরচ করা হয় তবে চার-পাঁচখানা মজবুত ও দীর্ঘ দিন ব্যবহারযোগ্য ঠিকঠাক শৌচাগার তৈরি করা যাবে। সেখানে জলের ব্যবস্থাও করা যাবে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে একটি কমিটি করা যেতে পারে। যা শৌচাগারগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করবে এবং সবাই যাতে শৌচাগার ব্যবহার করে তা সুনিশ্চিত করবে।


যতীন্দ্রনাথ ঘোষ
ধরমপুর, বাঁকুড়া

নির্মলতার হিড়িক


চতুর্দিকে, জেলায় জেলায় ব্লকে ব্লকে, নিজেদের এলাকাকে ‘নির্মল এলাকা’ ঘোষণা করার যেন হিড়িক পড়ে গিয়েছে। কিন্তু সাধারণ বুদ্ধিতেই বোঝা যায়, এত তাড়াতাড়ি মানুষের স্বভাব পরিবর্তন সম্ভব নয়। নিজের এলাকা, অঞ্চল নির্মল করতে গেলে মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। নির্মল বাংলারই একটি মিছিল শেষ হওয়ার পর দেখলাম, মিষ্টিমুখ করানোর জন্য থার্মোকলের বাটি ব্যবহার করা হচ্ছে, আর মিষ্টি খেয়ে, লোকেরা বাটিগুলো ইতস্তত ফেলে দিচ্ছে। গ্রাম সংসদের জমায়েতেই প্লাস্টিকের চায়ের কাপ ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সেগুলো ফেলার জন্য কোনও ডাস্টবিন রাখা হচ্ছে না।


কম্বু মালিক
বাঁকুড়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Celebrity Human Rights Pollution Social Media
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy