Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: আশঙ্কা জালিয়াতি

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩০

কথায় আছে, ‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’। কথাটা আজও সত্যি। “‘শব্দ’ শুনেই ডুবল টাকা, নালিশ আদালতে” (১৮-২) শীর্ষক সংবাদে বলা হয়েছিল, ৮ হাজার টাকা দিলেই প্রতি দিন ৫০০ টাকা, ১৬ হাজার টাকা দিলে দিনে ১০০০ টাকা সুদ মিলবে। যত টাকা বাড়বে, দৈনিক সুদ বাড়বে তেমনই। মোবাইলে পাঠানো ভুয়ো লিঙ্কের সূত্র ধরে শহরাঞ্চলের অনেক শিক্ষিত মানুষ বিরাট অঙ্কের সুদ পাওয়ার আশায় লক্ষ লক্ষ টাকা অস্তিত্বহীন ঠিকানায় বিনিয়োগ করে প্রতারিত হলেন। এমন ক্ষেত্রে তো মনে প্রশ্ন জাগা উচিত, সংস্থাটি কী, তাদের অফিস কোথায় বা সরকারের অনুমোদন আছে কি এই ব্যবসায়? যেখানে সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদি আমানতের উপর সর্বাধিক সুদ দেয় মাত্র ৬ শতাংশ, সেখানে কোন সংস্থা বা ব্যবসা আমানতের উপর এত সুদ দেবে? সারা বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে চলেছে। কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সুদ পাওয়া এখন আর সম্ভব নয়। তাই সাধারণ মানুষকে বিনিয়োগ করতে হবে দেখে শুনে। তা সরকারি প্রতিষ্ঠানে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। না হলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল।

ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও অর্থ লোপাট বা জালিয়াতির সম্ভাবনা আছে। আর তা রোধেই ভারত সরকার সম্প্রতি ক্রিপ্টো লেনদেনের উপর নানা বিধিনিষেধ চাপিয়েছে। এ দেশে নানা রকমের ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারে আছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সিই (সম্ভবত সামনের বছর বাজারে আসবে) একমাত্র সরকার অনুমোদিত ডিজিটাল মুদ্রা। বাকি মুদ্রাগুলির গ্যারান্টি কেউ দেবে না। তাই ডিজিটাল মুদ্রায় বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া জরুরি।

কুমার শেখর সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

বিকল্প চাই

যত দিন যাচ্ছে কলকাতার নেতাজি সুভাষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী-চাপ ততই বাড়ছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার কলকাতায় বিকল্প দ্বিতীয় বিমানবন্দর গড়তে চাইছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় জমির সন্ধান রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রকে দিতে পারেনি। কলকাতার কাছে ভাঙড় ও ভোগালি পঞ্চায়েত এলাকায় বিমানবন্দরের উপযোগী জমির সন্ধান পাওয়া গেলেও স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার জোর করে জমি অধিগ্রহণের পথে হাঁটতে পারবে না। এখন রাজ্য সরকার কেন্দ্রকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্ডালকে কলকাতার বিকল্প দ্বিতীয় বিমানবন্দর হিসাবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। কলকাতা থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে বিকল্প দ্বিতীয় বিমানবন্দর যুক্তিযুক্ত কি? কলকাতা ও এর আশপাশের মানুষ এত দূরে বিমান ধরতে আসবেনই বা কেন? শিল্পায়ন এবং রাজ্যের উন্নয়নের বৃহত্তর স্বার্থে কলকাতার কাছেপিঠে দ্বিতীয় বিমানবন্দর গড়ার জমি খুবই দরকার। রাজ্য সরকারের বিষয়টি আরও এক বার যুক্তি সহকারে বিবেচনা করা উচিত।

প্রদীপ সেনগুপ্ত

ব্যান্ডেল, হুগলি

রেশন দিচ্ছে না

আমার বয়স ৮৪ বছর, স্ত্রীর ৭৬। রেশন দোকানে আমাদের আঙুলের ছাপ না মেলায় রেশন দিচ্ছে না। আমাদের মতো আরও অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধার একই অবস্থা। এত দিন মোবাইলে ওটিপি আসত। সেই ওটিপি মোতাবেক রেশন দেওয়া হত। এখন আর দিচ্ছে না। আমাদের কিন্তু রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করা আছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সমরেন্দ্র নাথ সাহা

দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান

পরিচ্ছন্নতা কই

ভোট মিটে যাওয়ার পরেও বিধাননগরে যত্রতত্র থেকে যাওয়া হোর্ডিং, ফেস্টুন ইত্যাদি খুলে নেওয়ার বিশেষ উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য (‘খোলা হল পোস্টার’, ১৮-২)। কলকাতা পুরসভার ভোটের ঠিক পরই শাসক দলের নেতা-কর্মীদেরও তৎপরতার সঙ্গে এ কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছিল। তবু এখনও কোথাও কোথাও কাত হয়ে থাকা ফ্লেক্স, ছেঁড়াফাটা ফেস্টুন, পোস্টার দেখা যাচ্ছে। দোকান, বাড়ি বা আবাসনের গেটে রাজনৈতিক দলের পতাকা দৃষ্টিকটু ভাবে ঝুলছে। অশান্তির ভয়ে কেউ তা খুলতে চান না। এতে শহরের সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। বাইরের লোক, বিশেষ করে বিদেশিদের কাছে শহরের সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা বোধ কি তুলে ধরা যায় না?

ধীরেন্দ্র মোহন সাহা

কলকাতা-১০৭

তথ্যের দায়িত্ব

‘ডিজি লকার-এ জট কলকাতা, যাদবপুরে’ (২০-২) প্রকাশিত সংবাদটি খানিকটা বিভ্রান্তিমূলক। গুগলড্রাইভ, আইস্টোরেজ, ড্রপবক্স-এর মতো কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের একটি ক্লাউড স্টোরেজ হল ‘ডিজি লকার’। এই স্টোরেজে সংরক্ষিত তথ্যগুলি বৈধতার কোনও নিশ্চয়তা দেয় না। যেমন, আধার একটি অত্যাবশ্যক নথি যা হোটেল, রিসর্টে থাকতে গেলে লাগে। এ থেকে কোনও ব্যক্তির তথ্য জানা যায়। কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট আধার কার্ডের বৈধতা জানা সম্ভব নয়। সেই পরিকাঠামো এখনও আমাদের নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন কোনও ‘অ্যাপ’ নেই, যা মাত্র একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট যন্ত্রের দ্বারাই ব্যক্তির আধার পরিচয়পত্রের বৈধতা যাচাই করতে পারে। ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’র জাঁতাকলে এই ‘ডিজি লকার’ও।

যে কোনও ক্লাউড স্টোরেজেই সাধারণ মানুষ তাঁদের তথ্যাদি বা মূল্যবান শংসাপত্র ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে পারেন। এটা অনেকটা ব্যাঙ্কের ভল্টের মতো। একটি অভিন্ন পরিচয়পত্র বা মেল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই ক্লাউড স্টোরেজে যে কেউ নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। তা হলেও সেই ব্যবহারকারীর যাবতীয় নথিই জাল কিংবা অবৈধ হতেই পারে। ইউনিভার্সিটি, বিভিন্ন বোর্ড এবং কাউন্সিলগুলি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ছাত্রছাত্রীদের শংসাপত্রের যাবতীয় নথি সংরক্ষণ করার পদ্ধতিই একমাত্র বৈধতা সুনিশ্চিত করতে পারে। তা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় বা বোর্ড-কাউন্সিলের অধিকর্তার দায়িত্ব এবং মধ্যস্থতার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। কোনও চাকরিপ্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি যাচাই করে নেওয়ার ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত জরুরি। প্রচলিত পদ্ধতি অনুযায়ী, নিয়োগকর্তার অনুসন্ধানের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলি চিঠি আদানপ্রদান মারফত তাদের সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর শংসাপত্রটির বৈধতা সুনিশ্চিত করে, যা দেশে এবং বিদেশে চাকরিরত কিংবা গবেষণারত ছাত্রছাত্রীদের কাছে একটি দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছেই যখন প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার অধীনস্থ সমস্ত কলেজের তথ্য রয়েছে, তা হলে তারা নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে কী করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে একটি ক্লাউড স্টোরেজে ছাত্রছাত্রীদের শংসাপত্র নথিভুক্ত করার কথা বলতে পারে? বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রী ব্যতীত সেই শংসাপত্র কী ভাবে কোনও তৃতীয় ব্যক্তি বা বাইরের কোনও প্রতিষ্ঠান যাচাই করবে?

প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি একটি ডিজিটাল সংরক্ষণাগার থাকে, তা হলে সেখানে ছাত্রছাত্রীদের নথি অন্তর্ভুক্ত করা যায় অনায়াসেই। সেই তথ্য তখন অন্যরা যাচাই করতে পারেন। ইউজিসি বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ওয়েবসাইটগুলিকে আরও বেশি তথ্যপূর্ণ, তথ্যনির্ভর এবং প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগটির পরিকাঠামো বৃদ্ধির কথা ভাবতে পারে। তাতে একটি সুদূরপ্রসারী ফল পাওয়া যেতে পারে।

পিনাকী রুদ্র

অধিকর্তা, অনুমোদিত কেন্দ্র

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, বারাসত সরকারি মহাবিদ্যালয়

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy