Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: যথার্থ অভিভাবক

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য চাঁদে অবতরণের এই দিন ও সময় ছিল পূর্বনির্ধারিত। গত ২২ জুলাই যে চন্দ্রযান যাত্রা শুরু করেছিল, তার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের দিন ছিল ৭ সেপ্টেম্বর।

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০৬
Share: Save:

‘প্রতিভা’ (১১-৯) শীর্ষক সম্পাদকীয়তে ইসরো-র চেয়ারম্যান কে শিবন ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আলিঙ্গনরত অবস্থানকে যে দৃষ্টিতে দেখানো হয়েছে তা অত্যন্ত একপেশে। প্রথমত, ভারতের মহাকাশ দফতরের মন্ত্রী কিন্তু মোদী স্বয়ং। তাই দফতরের মন্ত্রী হিসেবে তিনি যদি চন্দ্রযানের অবতরণের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকেন (দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে) তা হলে তা ‘লোক দেখানো’ তকমা পাচ্ছে কী করে?

দ্বিতীয়ত, লেখা হয়েছে ‘‘একশো দিনের সর্বাঙ্গে অর্থনীতির ক্ষত। চন্দ্রযানের বিভায় সেই ক্ষত চাপা পড়িত।’’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য চাঁদে অবতরণের এই দিন ও সময় ছিল পূর্বনির্ধারিত। গত ২২ জুলাই যে চন্দ্রযান যাত্রা শুরু করেছিল, তার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের দিন ছিল ৭ সেপ্টেম্বর। কারণ, ৬ সেপ্টেম্বর থেকেই চাঁদে ১৪ দিনের দিন শুরু হওয়ার কথা। (আবার চাঁদে দিন শুরু ৫ অক্টোবর থেকে) অর্থাৎ জুলাই মাসের আগে চন্দ্রযান অবতরণের যে দিন স্থির করেছিল ইসরো, তারা কী ভাবে জানত যে সেপ্টেম্বর মাসে ‘ভারতের অর্থনীতির বেহাল দশা’ দেশের মূল আলোচনা হিসেবে স্থান পাবে? তাই চন্দ্রযানের সাফল্যের সঙ্গে রাজনীতির সরলরৈখিক সম্পর্ক খোঁজা অত্যন্ত বেঠিক এবং চন্দ্রযানের সাফল্যে অর্থনীতির ক্ষত চাপা পড়বে— এ হেন মন্তব্য অনভিপ্রেত।

তৃতীয়ত, লেখা হয়েছে ‘‘মোদী ম্যাজিক যদি কোথাও থাকে তবে তা দৃশ্যনির্মাণের দক্ষতায়।’’ হ্যাঁ ঠিকই। এটা সেই দৃশ্য যা দেখে ব্যর্থ, পরাভূত আশাহত মানুষ সান্ত্বনা পেতে পারেন, ভাবতে পারেন ‘ব্যর্থ হলেও তার কাজের প্রতি মানুষ আস্থাশীল’। দীর্ঘ দিনের অক্লান্ত সাধনা যখন মাত্র কয়েক মিনিটে শেষ হয়ে যায় তখন সেই হতাশাগ্রস্ত মানুষটিকে বুকে টেনে নিয়ে পিঠ চাপড়ানোর মধ্যে থাকে এক চরম আশ্বাস, অফুরন্ত ভরসা— ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর এক অদম্য অনুপ্রেরণা। যথার্থ অভিভাবকের মতোই দেশের প্রধানমন্ত্রী এই কাজটি করেছেন। এটি অবশ্যই তাঁর স্বপ্রতিভা।

প্রণয় ঘোষ

কালনা, পূর্ব বর্ধমান

ঘোড়াও হাসবে

‘গাড়ি শিল্পে মন্দা, দায়ী নয়া প্রজন্ম’ (১১-৯) শীর্ষক সংবাদটি পড়ে তাজ্জব বনে গেলাম! টানা ন’মাস ধরে গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ার জন্য মাননীয়া অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দায়ী করেছেন নতুন প্রজন্মকে! তাঁর অমূল্য (?) যুক্তি নতুন প্রজন্ম নাকি গাড়ি কেনার ঋণের ইএমআইয়ের দায়বদ্ধতার মধ্যে যেতে রাজি নয়, তারা ওলা-উবর ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করে, তাই তারা গাড়ি কিনছে না, ফলে গাড়ি শিল্পে মন্দা চলছে।

অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন: নতুন প্রজন্মের কত জন ওলা-উবর ব্যবহার করে এবং ভারতবর্ষের মোট কতগুলি স্থানে ওই পরিষেবা মেলে, তা কি তিনি জানেন? মাননীয় অর্থমন্ত্রী বোধ হয় অফিস টাইমে ভিড়েঠাসা বাস অটো ট্রেন দেখেননি। দেখলে তিনি নিশ্চয় বুঝতেন দেশের নতুন প্রজন্মের বিরাট অংশের আয় গাড়ি কেনার পক্ষে যথেষ্ট নয়, তাই তারা বাধ্য হয়ে বাস ট্রেনে চড়ে, এবং এ কথা বুঝলে মাননীয়া মন্ত্রী তথাকথিত মন্তব্য থেকে বিরত থাকতেন। কী জানি এর পর যদি তিনি বলেন যে নতুন প্রজন্ম ভিড়েঠাসা বাস ট্রেন অটো পছন্দ করে, তা হলে তা-ও বিচিত্র নয়!

বর্তমানের আর্থসামাজিক অবস্থায় নতুন প্রজন্মের অধিকাংশই ভোগবাদী দর্শনে বিশ্বাসী, সেখানে সংসার চালিয়ে, ফ্ল্যাটের ইএমআই মিটিয়ে তাদের হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকলে তারা নিশ্চয় গাড়ি কিনত, শখ করে কেউ ভিড়েঠাসা বাসে অফিস যায় না। বলা বাহুল্য, অম্বানীদের ছেলেমেয়েরা নিশ্চয় বাস ট্রেন টোটোয় করে অফিস যান না।

আসলে দেশের আর্থিক মন্দা, চরম বেকারত্ব, অল্প পারিশ্রমিকে শ্রমিকদের কাজ করিয়ে নেওয়ার মতো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে অর্থমন্ত্রী এই ধরনের যুক্তিহীন মন্তব্য করেছেন, যা শুনলে ঘোড়াও হাসবে! এ দেশে বর্তমানে কোনও যুক্তিবাদী মেহনতি মানুষের উপকারী সরকার আছে কি? সাধারণ মানুষকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী থেকে অন্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা; এমনকি সরকারি দফতর অবিরাম মিথ্যাচার করছে, ভাঁওতা দিয়ে চলেছে!

কুমার শেখর সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

চাকরির আকাল

গাড়ি শিল্পে মন্দার কারণ প্রসঙ্গে মাননীয়া অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন নতুন প্রজন্মের চাকরি পাওয়া, ভাল রোজগার করা ছেলেমেয়েরা ইএমআই দিয়ে গাড়ি কিনতে আগ্রহী নয়। এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই।

নতুন প্রজন্মের কত সংখ্যক ছেলেমেয়েকে ওঁরা ভাল চাকরির বন্দোবস্ত করে দিতে পেরেছেন এই ৬ বছরের রাজত্বে? এখন তো সমস্ত কেন্দ্রীয় বা রাজ্য দফতরে বেশির ভাগ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়, কী ভাবে তারা সংসার চালাবে, আর কী ভাবেই বা ইএমআই দিয়ে গাড়ি কিনবে? যত সংখ্যক চাকরিজীবী রাজ্য বা কেন্দ্রীয় স্তরে রিটায়ার করছেন, সেই সমস্ত খালি পদে তো নিয়োগ বন্ধ, নতুন চাকরির দিশা কই? কেন্দ্র বা রাজ্য কবে ভাববে নতুন কর্মসংস্থানের কথা? বেশির ভাগ কর্মচারীর এখন বেতন কমিশনের দিকে নজর— কেবল বেতন বাড়াও। অধিকাংশ সরকারি চাকরিজীবী ভেবে নিয়েছেন যে সবাই থাকুক ভুখা, আমরাই কেবল বাঁচব। তাঁরা আর কবে ভাববেন, তাঁদের বেতন বাড়লে তাঁদের বাড়ির শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা যে চাকরি না পাওয়ার হীনম্মন্যতায় ভুগবে। কী ভাবে বাঁচবে ওরা? কবে আমরা ভাবনাচিন্তা করব দেশের যে সব পরিবারের কোনও সদ্যসেরই চাকরি নেই, তাদের তো একই বাজারে, একই দরে খাদ্যদ্রব্য কিনতে হয়, সেই সব পরিবার কী করবে? কত সংখ্যক লোক চাকরি করেন রাজ্য বা কেন্দ্রীয় স্তরে? দেশের বেশির ভাগ মানুষ আজ অর্থনৈতিক ভাবে বঞ্চিত, তাঁরাও তো ভোট দিয়ে ওঁদের সরকারে এনেছে। আজ কেন ইঞ্জিনিয়ার বা গ্র্যাজুয়েট স্তরে ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করতে চায় না? প্রায় প্রতিটি কলেজে কেন আসন খালি পড়ে থাকে? চাকরি কই?

আশিস কুমার দাস

কলকাতা-৫৭

অমর বচন!

আমাদের দেশের নেতানেত্রীদের অমর বচনে আমরা প্রতি দিন সমৃদ্ধ হই। কত জানব। অর্থনীতির কত নতুন নতুন তত্ত্ব ও তথ্য আমাদের জ্ঞানভাণ্ডার উপচে দেয়। আগামী দিনের অর্থনীতির ছাত্ররা অবশ্যই এটা নিয়ে চর্চা করবেন, বেকারত্ব নয়, দরিদ্রতা নয়, শুধু নব্য প্রজন্মের গাড়ি কেনার অনীহাই গাড়ি শিল্পে মন্দার কারণ। দোহাই নয়া প্রজন্ম, আপনারা যে ভাবে পারুন, রোজগার থাকুক না থাকুক, ব্যাঙ্ক থেকে চড়া সুদে ধার নিয়েও, একটা করে গাড়ি কিনুন। তা না হলে যে প্রায় দশ লক্ষাধিক আর এক বেকার নব প্রজন্মের জন্ম হবে।

আশীষ চক্রবর্তী

ধাড়সা কাঁটাপুকুর, হাওড়া

ডেঙ্গি ও সতর্কতা

কিছু জায়গায় ডেঙ্গি খুব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে বনগাঁ, হাবড়া, অশোকনগর এলাকায় মশার কামড়ে ডেঙ্গি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বহু লোক হাসপাতালে ভর্তি। কিছু লোক মারা গিয়েছেন। কলকাতায় বেশ কিছু জায়গায় ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা গিয়েছে। এখনই সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে এটি ভয়াবহ রূপ নেবে। ডেঙ্গি আটকানোর জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

আমাদেরও সতর্ক হতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলা। ঘুমোনোর সময় মশারি ব্যবহার করা। বাড়িতে জমা জল পরিষ্কার করা। প্রশাসন রাস্তার ড্রেনে নিয়মিত মশা মারার তেল দিচ্ছে এবং পরিষ্কার করছে, আমাদের সেটি পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ডেঙ্গির উপসর্গ দেখলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। প্রশাসন এবং আমাদের সদর্থক ভূমিকায় ডেঙ্গি নির্মূল করা সম্ভব।

অমিত সেনগুপ্ত

নিমতা, উত্তর ২৪ পরগনা

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE