Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: চাঁদ ও গরুর বিজ্ঞান

ওঁর দলেরই এক মন্ত্রী বলেছেন, গরু শ্বাসকার্যের সময় বাতাস থেকে অক্সিজেন নেয়, আবার অক্সিজেনই ছাড়ে। এই বক্তব্য সম্বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া নেই।

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৩
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিজ্ঞান কুইজ় প্রতিযোগিতায় জয়ী ছাত্রদের শ্রীহরিকোটা থেকে চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান নামার ঘটনা চাক্ষুষ করার সুযোগ করে দেবেন। সন্দেহ নেই এটা ছাত্রসমাজকে বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলার পক্ষে উৎসাহজনক। অপর দিকে, ওঁর দলেরই এক মন্ত্রী বলেছেন, গরু শ্বাসকার্যের সময় বাতাস থেকে অক্সিজেন নেয়, আবার অক্সিজেনই ছাড়ে। এই বক্তব্য সম্বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। জানার ইচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞান এবং ওই মন্ত্রীর বিজ্ঞান একই কি না।

শুভ্রাংশু বসু

বড়নীলপুর, পূর্ব বর্ধমান

ভোটের রাজনীতি

সেমন্তী ঘোষের ‘মারে গণতন্ত্র রাখে কে’ (২৬-৭) শীর্ষক নিবন্ধে, লোকসভায় পাশ হওয়া গুরুতর দু’টি সংশোধনী বিল, বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ বিল (ইউএপিএ) এবং তথ্যের অধিকার বিলের সংশোধিত নব্য রূপের সুদূরপ্রসারী ধ্বংসাত্মক দিকগুলি লেখিকা আলোচনা করেছেন, যা নিয়ে দ্বিমত নেই। কিন্তু এর দায় বা দায়িত্ব সম্পূর্ণ রূপে কেন্দ্রস্থিত দলটির— তা ঠিক নয়। এর সমান দায়ভার বর্তায় প্রধান তথা অন্য বিরোধী দলগুলির ক্ষেত্রেও। তাঁরা ‘বিল দু’টি আটকানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিলেন’ এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হওয়া গেল না।

প্রথমত এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি) এবং বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ বিল (ইউএপিএ) দু’টিরই উদ্ভাবক বর্তমান প্রধান বিরোধী দলটি। এবং তাদের শাসন কালে এই আইনের যে খুব সদর্থক ভূমিকা ছিল এমন দাবি করা যায় না। সে সময়েও এই আইনের একাধিক অপব্যবহারে ব্যক্তির গণতান্ত্রিক অধিকার বিপন্ন হয়েছে বারে বারে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটির বর্তমান প্রধানও এই আইনের বলে বিরোধী স্বর রুদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন প্রায়শই।
এখন ফারাক এই, আজ তাতে ‘ঘোষিত’ সিলমোহর পড়ল।

দ্বিতীয়ত, লোকসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ বিলটির পক্ষে পড়েছে ২৮৭-৮ ভোট এবং তার আগে এনআইএ-র পক্ষে গিয়েছে ২৭৮-৬ ভোট। লোকসভার মুষ্টিমেয় মুসলিম এবং বাম সাংসদ ব্যতিরেকে
গরিষ্ঠ বিরোধী মত গিয়েছে
এই বিলগুলির পক্ষে। অর্থাৎ বিরোধিতা কেবল মৌখিক ভাবেই সারা হয়েছে, কার্যক্ষেত্রে শত সীমাবদ্ধতা এবং জনবিরোধী চরিত্র সত্ত্বেও ‘সন্ত্রাসবাদ দমনমূলক’ আইনের বিরোধিতার সঙ্গে নিজেদের ‘অফিশিয়ালি’ কেউ জড়াতে রাজি নন, দ্বিচারিতা স্পষ্ট। ভোট রাজনীতির এতটাই মাহাত্ম্য!

মৃণাল শতপথী

ইন্দা, পশ্চিম মেদিনীপুর

নোবেলের মতো!

‘নোবেল পাননি’ (২৮-৭) শীর্ষক চিঠিটা পড়ে খুব ভাল লাগল। আজ বাংলায় ফের নবজাগরণ শুরু হয়েছে, মধ্যমানের এক নব্য বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের হাত ধরে। তাঁরা সমাজে ‘চোখে আঙুল দাদা’র দায়িত্ব নিয়ে মহান কর্তব্য পালনের অঙ্গীকার করেছেন। তাই তাঁরা বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী গুণিজনদের নীচে নামিয়ে, নিজেদের সমকক্ষ বানাবার চেষ্টা করছেন। এই রকম চেষ্টার একটা ধাপ, বিদ্যাসাগরের ‘সহজ পাঠ’। আর একটা ধাপ এই কথা বলা: অমর্ত্য সেনের নোবেলটা নোবেল নয়।‌‌

ওটা ‘নোবেলের মতো’! যদিও সমমূল্যের। মানে, শুধু অর্থের দিক থেকে সমান মূল্যের? সম্মানের দিক থেকে নয়? এ বার বোধ হয় যোগ্য লোককে অযোগ্য প্রতিপন্ন করার জন্য বিশেষ নোবেল চালু হবে!‌‌

আশীষ চক্রবর্তী

ধাড়সা কাঁটাপুকুর, হাওড়া

নোবেলই

‘নোবেল পাননি’ শীর্ষক চিঠিতে পত্রলেখক তথ্যগুলি সব ঠিকই দিয়েছেন, কিন্তু অমর্ত্য সেন যেটি পেয়েছেন, সেটিকে অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার বলেই উল্লেখ করা হয়ে থাকে। তার কিছু কারণ আছে। প্রথমত, অন্য নোবেল পুরস্কারগুলির মতো এই পুরস্কারও ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি। দ্বিতীয়ত, যে অনুষ্ঠানে যে পদ্ধতিতে অন্য নোবেল-প্রাপকদের পুরস্কার দেওয়া হয়, সেই একই অনুষ্ঠানে সেই একই পদ্ধতিতে এই পুরস্কারও দেওয়া হয়। তৃতীয়ত, বোধ হয় সবচেয়ে বড় কথা, এই পুরস্কার দেওয়া হয়
নোবেল ফাউন্ডেশন থেকেই। পার্থক্য এটুকুই, এই পুরস্কারের টাকা আলফ্রেড নোবেল দেননি, এটি দেয় সুইডেনের একটি ব্যাঙ্ক। কিন্তু যখন তারা টাকা দিয়েছিল, তখন উল্লেখ করা হয়েছিল যে আলফ্রেড নোবেলের নামেই যেন এই পুরস্কার দেওয়া হয়। তাই এ নিয়ে নতুন
করে বিতর্কের অবতারণা অনভিপ্রেত ও অযৌক্তিক।

সন্দীপন সেন

কলকাতা-৫

দায়ে পড়ে

টিএমসিপি ছাত্রনেতার হাতে প্রহৃত কোন্নগর কলেজের শিক্ষকের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় বিধায়ক, জেলা সভাপতি কলেজে গিয়ে সাক্ষাতে করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। দিল্লি থেকে ক্ষমা চেয়েছেন সাংসদ। নিগ্রহ-উত্তর এই পাইকারি হারে ক্ষমাপ্রার্থনা রাজ্য রাজনীতিতে মাইলস্টোন হিসাবে চিহ্নিত হওয়া উচিত। কারণ অতীতে অন্তত এক ডজন শিক্ষক নিগ্রহ ঘটনায়, কোনও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ঘোষণা করা হয়নি, বরং বাচ্চা ছেলেদের কাজ বলে বিষয়গুলিকে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে লঘু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। শিক্ষিকাকে জলের জগ ছুড়ে মেরেছিলেন তৎকালীন দাপুটে তাজা নেতা। এ বছর কলেজে অনলাইন ভর্তি চালু হওয়ায়, ভর্তিকেন্দ্রিক তোলাবাজি ও হিংসা অনেকটাই স্তিমিত, এ জন্য রাজ্য প্রশাসনের সাধুবাদ প্রাপ্য। সন্দেহ নেই, শিক্ষকের নিকট এই ক্ষমাপ্রার্থনার মূলে বিরোধী দলের উত্থান। যা শাসক দলের কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে। দুর্বিনীতকে বিনয়ী করে তুলেছে, দিকে দিকে কাটমানি ফেরত দেওয়ার ঢল নেমেছে। শাসক দল জ্যোতিবাবুর নামাঙ্কিত মিউজ়িয়ামের ছাড়পত্র দিতে রাতারাতি উদ্যোগী হয়েছে, উত্তরবঙ্গে বদলি হওয়া কো-অর্ডিনেশন নেতাদের ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছে। ‘ঘেউ ঘেউ’ তাচ্ছিল্য উপেক্ষা করে সাড়ে চার বছরে অপ্রস্তুত পে কমিশন রিপোর্ট দিনের আলো দেখার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। বিরোধী নিশ্চিহ্ন করার খেলায় মত্ত শাসক দল আজ নিজেই থরহরিকম্প। এখন ভোটকুশলীর পরামর্শ রাজ্যবাসীকে কত দূর রিলিফ এনে দেয়, দেখার।

রাজশেখর দাস

কলকাতা-১২২

কেন থাকে না?

সম্ভবত মুসলমানরা আনন্দবাজার পত্রিকা পড়েন না! সে জন্যই দিনপঞ্জিকায় হিজরি সালের দিন-মাসের কোনও উল্লেখ থাকে না। অফিস ছুটি না থাকলে তাঁদের ছোটখাটো পরবের কথাও এড়িয়ে যাওয়া হয়।

গোলাম মাহবুব

ইমেল মারফত

বিরল উদাহরণ

শিক্ষক নিগ্রহ যেখানে কাটমানি সংগ্রহের মতোই সাধারণ ঘটনা, সেখানে আব্দুল কাফি নিগৃহীত হয়েও অন্য মারমুখী পড়ুয়াদের হাত থেকে অপরাধী ছাত্রকে বাঁচিয়ে এক বিরল নজির তৈরি করলেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক, শুধু আদর্শ শিক্ষক হিসাবে নয়, প্রতিশোধস্পৃহাকে অতিক্রম করা এক আদর্শ ভারতীয় হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করলেন। এখন আমার জন্মভূমি এমন এক দেশ, যেখানে বুদ্ধ বা গাঁধীর নাম শুধু ব্যঙ্গার্থে উচ্চারিত হয়। কল্পনা করতে ভাল লাগে, এ দেশে আরও অনেক আব্দুল কাফি জন্মাচ্ছেন; থেমে যাচ্ছে গোরক্ষা বাহিনী বা গণপিটুনির দল।

দেবাশিস মিত্র

কলকাতা-৭০

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Narendra Modi Chandrayaan 2
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE