Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: এটা কী করলেন!

এ রকম খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার উদাহরণ আমাদের সামনে তুলে ধরবেন না। কারণ আমরা কিছুই শিখব না! আমরা বিপক্ষকে সম্মান করতে শিখব না, ভাল খেললে তার প্রশংসা করতে শিখব না।

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৮ ০১:০০

এ কী করলেন আপনি রোনাল্ডো! আমরা যে এ রকম দৃশ্য দেখার যোগ্যই নই! আমরা শুধু গালাগাল বুঝি। বুঝি শুধু একে অপরকে নিচু করে দেখানো! আর আপনি কিনা, যে কাভানি আপনাদের বিরুদ্ধে দুটো গোল করেছেন এবং আপনারা ম্যাচটা হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতে বসেছেন, সেই কাভানি যখন খোঁড়াচ্ছেন, তাঁকে ধরে ধরে সাহায্য করলেন মাঠের ধারে যেতে! তাঁকে জড়িয়ে ধরে নিয়ে গেলেন!

এ রকম খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার উদাহরণ আমাদের সামনে তুলে ধরবেন না। কারণ আমরা কিছুই শিখব না! আমরা বিপক্ষকে সম্মান করতে শিখব না, ভাল খেললে তার প্রশংসা করতে শিখব না। আমরা শুধু জানি নিজের পছন্দের খেলোয়াড় বা দল ছাড়া বাকিদের নিয়ে নোংরামো করতে হয়, পারলে তাদের পরিবার তুলে গালিগালাজ করতে হয়। অবশ্য শেষ অবধি নিজের দল হেরে গেলেও অশ্রাব্য ভাষায় তার মুন্ডুপাত করতে হয়। এ বিশ্বকাপ তাই আমাদের জন্য নয়। রবিঠাকুর আজ বেঁচে থাকলে হয়তো বলতেন, ‘‘রেখেছ নিন্দুক করে, সমর্থক করোনি!’’

আকাশদীপ রানা দমদম, উত্তর ২৪ পরগনা

হুজুগ

খুব আশাবাদীও আগামী দু’একটি বিশ্বকাপ ফুটবলের মহাযজ্ঞে আমাদের স্থান পাওয়ার কথা ভাবতে পারবেন না। অথচ ফুটবল নিয়ে আক্ষরিক অর্থেই উন্মাদনার ঢেউ আছড়ে পড়ছে গাঁ-গঞ্জ-শহরে। জলে ভিজল যারা, জ্বর বাধাল অন্য। গালে পতাকা এঁকে, জার্সি পরে কেউ আর্জেন্টিনা কেউ ব্রাজ়িল, কেউ জার্মানি। শয়নে স্বপনে জাগরণে মেসি, রোনাল্ডো, নেমার। আরাধ্য দেবতার জন্মদিনে পুজো হচ্ছে পুরোহিত ডেকে। ঢাউস মাপের পতাকা দুলছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে।

হুজুগে অক্লেশে গলে যাচ্ছে দশ-বিশ হাজার। অথচ পাড়ার যে ছেলেটি ছেঁড়া বুট পরে খিদে-পেটে খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্নে তা দিতে দিতে এক দিন হতাশায় কারখানার দরজায় লাইনে দাঁড়ায়, অনেক কম খরচে তার পাশে সাহায্যের হাত বাড়ানো যেত। ক্লাব ফুটবলের মিটিঙে প্রতিপক্ষের নাক ফাটানো পর্যন্তই আমাদের দৌড়।

এই বিশ্বকাপ কিন্তু আমাদের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিয়েছে। বড়জোর তিন লাখ আটত্রিশ হাজার মানুষ বাস করেন আইসল্যান্ডে। তাঁরা এগারো জন খেলোয়াড়কে বিশ্বকাপের মাঠে নামিয়ে দলগত নৈপুণ্যে চমকে দিয়েছেন ক্রীড়ামোদী দুনিয়াকে। পানামা বা সেনেগালের খেলার কথা বিশেষ হয় না। তাদের উঠে আসার বৃত্তান্ত অনুধাবন করলে হয়তো উন্মাদনা বদলে যেত কার্যকর উৎসাহে। তবে সরকারি স্তরে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা এবং তার যথাযথ রূপায়ণের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফুটবলের মাঠে এক দিন খালি পায়েই, বুট-পরা সাহেবদের হারিয়েছি আমরা। ফাঁপা আড়ম্বর নয়, আকাঙ্ক্ষা তীব্র এবং আন্তরিক হলে সাফল্য করায়ত্ত হবেই।

বিশ্বনাথ পাকড়াশি শ্রীরামপুর, হুগলি

বাংলার ফুটবল

ফিফা-র ক্রমতালিকা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় ফুটবলের র‌্যাঙ্কিং এখন ৯৭। তা সত্ত্বেও ভারতীয়রা, বিশেষ করে বাঙালিরা বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে হ্যাংলামি, আদিখ্যেতা, পাগলামির চূড়ান্ত করছে। এ দিকে কলকাতার তিন প্রধান ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা— এ বছর আই লিগ এবং আইএসএল-এ চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। এই তিন প্রধানেই বাঙালি ফুটবলারের সংখ্যাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে কলকাতা ময়দান থেকে হয়তো কোনও ভূমিপুত্র বাঙালি ফুটবলার আর উঠে আসবেন না। মেসি, নেমার আমাদের স্বপ্নের নায়ক হতেই পারেন, কিন্তু পাশাপাশি বাংলার ফুটবলের দশা নিয়ে ভাবব না?

তুষার ভট্টাচার্য মুর্শিদাবাদ

আর তখন?

মেসির জন্মদিন বাংলায় ঘটা করে পালন করা হচ্ছে। আচ্ছা, যখন ১৯৫১ সালে দিল্লিতে এশিয়ান গেমসে ভারত ইরানকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, ভারতীয় দলপতি শৈলেন মান্নার তো জন্মদিন জেনে নিয়ে পালন করেননি তখনকার ফুটবলপ্রেমীরা? ১৯৫৬ সালে মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে ভারত যখন অস্ট্রেলিয়াকে ৪-২ গোলে চূর্ণ করে, সেই ম্যাচে পর পর তিনটি গোল করেন নেভিল স্টিফেন ডি’সুজ়া। তিনিই হন ওই অলিম্পিক্সে সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং অলিম্পিক্স ফুটবলে প্রথম এশীয় হ্যাট্রিককারী খেলোয়াড়। কই, তাঁর বা সেই ভারতীয় দলটির দলপতি সমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন হিসেব করে কোনও ফুটবলপ্রেমী তো কেক কাটেননি! ভারত যখন ১৯৬২ সালে জাকার্তা এশিয়ান গেমস ফুটবলে, দক্ষিণ কোরিয়াকে ফাইনালে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, তৎকালীন ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন চুনী গোস্বামীর জন্মদিন পালন করার উৎসাহ তো তখনকার লোকের মধ্যে দেখা যায়নি!

তাপস সাহা শেওড়াফুলি, হুগলি

কে আগে

পথিক গুহ তাঁর ‘টাইব্রেকারে সুবিচার: বিজ্ঞান কী বলে’ (৩-৭) শীর্ষক প্রতিবেদনে বলেছেন, বিভিন্ন নামী প্রতিযোগিতায় টাইব্রেকারের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে টসে জিতে যে দলগুলো প্রথম পেনাল্টি নিয়েছে তাদের জয়ের হার বেশি। টসের মাধ্যমে প্রথম কে শট নেবে তা নির্ধারণের অবিচার মুছতে ফিফাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তাও লিখেছেন। আচ্ছা, টাইব্রেকারে টস এড়াতে এ রকম কিছু পরিসংখ্যান তো দেখা যেতেই পারে, যেমন: এক) নির্ধারিত ১২০ মিনিটে কোন দলের ‘বল পজ়েশন’ বেশি ছিল। দুই) কোন দল কর্নার কিক বেশি পেয়েছে। তিন) কোন দল ফাউল কম করেছে বা হলুদ কার্ড কম দেখেছে। এই তিনটে তথ্যের ভিত্তিতে যে দল এগিয়ে থাকবে সেই দলই টাইব্রেকারে প্রথম পেনাল্টি মারবে। এই পদ্ধতিতে যেমন ‘টস’ এড়ানো যাবে, তেমন সিদ্ধান্তটা সংশ্লিষ্ট দল দুটোর পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে হওয়ায়, তা বিজ্ঞানসম্মতও হবে।

শ্যামল সাহা কলকাতা-৩৫

পাশাপাশি

বিশ্বকাপের সময়ে এক একটি দলের বাঙালি ভক্তকুল সোশ্যাল মিডিয়া ভরে রাখেন টিটকিরি-বিদ্রুপে। ব্রাজ়িল আর আর্জেন্টিনার ভক্তরা এমনিতেই পান থেকে চুনটুকু খসার অপেক্ষা রাখেন না, এ বার কোয়ার্টার ফাইনালেই আর্জেন্টিনার বিদায়ে ব্রাজ়িলপন্থীরা ইঙ্গিতপূর্ণ প্যারডি কাটা থেকে শুরু করে মেসির মাথায় জন্তুজানোয়ারদের সাশ্রু মুন্ডুটুন্ডু বসিয়ে কীর্তি স্থাপন করেছেন। আবার খেলার মাঠে ব্রাজ়িলের নেমারের ছদ্ম-আঘাতে লুটিয়ে পড়া দেখে আর্জেন্টিনাপ্রেমীরা গুচ্ছের ভিডিয়ো-ট্রোল বানিয়েছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে, হলুদ জার্সি পরা খেলোয়াড় ‘একটুকু ছোঁয়া’ লাগলেই হাত-পা চেপে ধরে মাটিতে গড়াগড়ি যাচ্ছে। এর মাঝেই ব্যতিক্রমী এক ছবি, রাস্তার হোটেলে পাশাপাশি থালাবাটি ধুচ্ছে দুই কিশোর, এক জনের পরনে মেসির জার্সি, অন্য জনের নেমার। অসহিষ্ণুতার মাঝে খানিক বিরতি।

ঋষি রায় কলকাতা-৮৪

ভ্রম সংশোধন

‘আট বছর পরে শেষ আট পর্বে’ শীর্ষক প্রতিবেদনে (পৃ. ১৬, ৪-৭) প্রকাশিত হয়েছে ১৯৫৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সুইডেন। আসলে সুইডেনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজ়িল। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ই-মেলে পাঠানো হলেও।

Cristiano Ronaldo Sportsmanship Edinson Cavani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy