Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: ‘বচপন’-এর হলগুলি

অতএব কম্পমান আসনে বসেই ছবিটি দেখতে বাধ্য হলাম। ৪) প্রবন্ধে দু’টি জনপ্রিয় প্রান্তিক প্রেক্ষাগৃহের নাম বাদ গিয়েছে। দমদমের নেত্র এবং খালপাড়ের সুরশ্রী।

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০০:২৫

‘সেই যে আমার নানা রঙের হলগুলি’ (রবিবাসরীয়, ১-৪) প্রবন্ধটি অতি উৎকৃষ্ট, কিন্তু এই প্রবন্ধে কিছু তথ্য ‘কম পড়িয়াছে’— তাই এই পত্র।

১) ‘ম্যায় সুন্দর হুঁ’ ছবিতে ‘নাচ মেরি জান’— দৃশ্যে পর্দায় মেহমুদ ও জয়শ্রী টি ব্যতীত গায়ক কিশোরকুমারকেও দেখা গিয়েছিল। তিনিই স্বয়ং পর্দায় দৃশ্যমান হয়ে, গানটির প্রথম স্তবকটি গাইবার পরে, মেহমুদ-জয়শ্রী নৃত্য শুরু করেন। ২) কৃষ্ণা প্রেক্ষাগৃহ প্রসঙ্গে লেখক শ্রদ্ধানন্দ পার্কের নাম উল্লেখ করেছেন। ওটি হবে মহম্মদ আলি পার্ক। ৩) দ্বিতীয় তল-বর্জিত প্রেক্ষাগৃহের যে তালিকাটি দেওয়া হয়েছে, তাতে এন্টালি টকিজের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু এটা দ্বিতল বিশিষ্ট। ওই প্রেক্ষাগৃহে এক বার দ্বিতলে বসে ধর্মেন্দ্রর একটি ছবি দেখেছিলাম। ধর্মেন্দ্র ছবিতে যত বার নিজ গাত্র-বস্ত্র খুলে, পেশিবহুল শরীরে দুষ্ট ব্যক্তিগণকে পেটাচ্ছেন, তত বার আমার ঠিক পিছনের আসনে বসে এক মদ্যপ ‘মার দিয়া শালা, ঝাড় দিয়া শালা’ বলে আমার আসনের পিছনে ঘুষি মারছে। আমার আসন থরথর করে কাঁপছে। কয়েক বার বারণ করা সত্ত্বেও ব্যক্তিটি শুনল না। অনুভব করলাম, কব্জির জোরে আমি পারব না। অতএব কম্পমান আসনে বসেই ছবিটি দেখতে বাধ্য হলাম। ৪) প্রবন্ধে দু’টি জনপ্রিয় প্রান্তিক প্রেক্ষাগৃহের নাম বাদ গিয়েছে। দমদমের নেত্র এবং খালপাড়ের সুরশ্রী। ৫) দ্বিতল-বর্জিত প্রেক্ষাগৃহের তালিকায় বাদ পড়েছে নূরমহল চিত্রগৃহের নাম। এর স্থান মল্লিকবাজারে— ১৯০ লোয়ার সার্কুলার রোড। এটা পার্ক স্ট্রিট ও আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের সংযোগস্থলে অবস্থিত ছিল। অভিজাত পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলে এমন প্রেক্ষাগৃহ অচিন্তনীয়। অধুনা এটাও লুপ্ত। প্রধানত পুরনো ও তখন দুষ্প্রাপ্য হিন্দি ছবি দেখানো হত। অবশ্য কদাচিৎ নতুন ছবিও চলত। বিশেষ সমারোহ হত অমিতাভ বচ্চনের ছবি মুক্তি পেলে। প্রেক্ষাগৃহের গায়ে আঁকাবাঁকা হস্তাক্ষরে বড় বড় করে বাংলা ও হিন্দিতে আলকাতরা দিয়ে লেখা হত: ‘অমিতা বচপন ফিলিম’।

শ্রীশঙ্কর ভট্টাচার্য কলকাতা-৩৯

ভারতে বিজ্ঞান

পথিক গুহ-র ‘প্রযুক্তিকে দর, অবজ্ঞা বিজ্ঞানকে, এই হাল!’ (২৯-৩) পড়লাম। ভারতের মতো বিশাল দেশে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রটি বেশ বড়। দেশের করদাতাদের কোটি কোটি টাকা খরচ হয় উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণায়। ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, গোটা দেশে প্রায় ২৫টি বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাফল্যের নিদর্শন রাখতে পেরেছে। উন্নত দেশগুলির তুলনায় ভারত যেমন বিজ্ঞান গবেষণায় কম বরাদ্দ করে, তেমনই সেই বরাদ্দের বিতরণেও রয়েছে অসাম্য। যেখানে ৮০০রও বেশি উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞানের গবেষণা হয়, সেখানে মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন মতো অর্থ পায়। ফলে অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী তাঁদের উদ্ভাবনী কাজ করতে পারেন না। আবার আইআইটি-র সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বরাদ্দ বেড়ে যায়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিজ্ঞান বিভাগের বরাদ্দ আনুপাতিক হারে বাড়ে না।

১৩২ কোটির দেশ ভারতে করদাতাদের কোটি কোটি টাকায় উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রিত হয় ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন ও বিভিন্ন সরকারি মন্ত্রণালয় দ্বারা। জিডিপি-র ০.৭% উচ্চশিক্ষায় বিনিয়োগ করে উন্নত দেশগুলোকে আমরা বছরের পর বছর উপহার দিয়ে চলেছি মেধাবী ছাত্রছাত্রী, যারা ওই সব দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতিতে অংশ নিচ্ছে। অন্য দিকে, দেশে থাকছে সামান্য কিছু ভাল আর অসংখ্য মধ্যমানের গবেষক। বিজ্ঞানী রাও-এর আক্ষেপ স্বাভাবিক। পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর বিজ্ঞানে বরাদ্দের দিকে চোখ ফেরালেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে: ইজরায়েল (মোট জিডিপি-র) ৪.৩%, দক্ষিণ কোরিয়া ৪.২৯%, জাপান ৩.৮৫৮৪%, আমেরিকা ২.৭৪২%, ফ্রান্স ২.২৫৬%, এবং চিন ২.১৫%। ভারতে বছরে এক লক্ষের কিছু বেশি আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এমন জার্নালের নামডাক কেমন, তা মাপা হয় ‘ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর’ দিয়ে। সারা বিশ্বে স্বীকৃত ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্টিফিক ইনফর্মেশনের তালিকা অনুযায়ী, ভারতে ‘কারেন্ট সায়েন্স’-এর ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর হল ০.৫৬৭, ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব অ্যাগ্রোনমি’-র ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ০.০৩২। এ ক্ষেত্রেও আমরা পিছিয়ে র‍য়েছি।

নন্দগোপাল পাত্র সটিলাপুর, পূর্ব মেদিনীপুর

সম্মান নেই

পথিক গুহ-র লেখার শুরুর বাক্যটি ছিল ‘সমাজ ও সরকার মৌল বিজ্ঞানকে গুরুত্ব না দিলে ভারত বিজ্ঞানে এগোতে পারবে না।’ একমত আমিও। সমাজের দর্পণ দূরদর্শন ও সংবাদমাধ্যম। সেখানে দেখি সব সময় সর্বাগ্রে স্থান পায় বিনোদন, রাজনীতি ও খেলার খবর, তার পর যৎসামান্য অন্য কিছু। সেখানে বিজ্ঞানের কদর প্রায় নেই। এক জন ফিল্ম-তারকা বা খেলোয়াড়কে নিয়ে যে ভাবে চর্চা হয় বা সম্মান দেওয়া হয়, বুদ্ধিজীবীকে তা দেওয়া হয় না। ক’জন বাবা-মা চান সন্তান বিজ্ঞানী কিংবা সাহিত্যিক হোক? চান সন্তান অনেক টাকা ও সম্মান পাক। তাঁদের স্বপ্ন সার্থক হয়, কিন্তু পিছিয়ে পড়ে ভারত।

শ্রীমন্ত কুমার দাস বামনাসাই, পশ্চিম মেদিনীপুর

মা, শিশু

পথিক গুহ-র লেখাটিতে পড়লাম বিজ্ঞানী রাও-এর কথা, ‘দেশের যে প্রান্তেই যাই, দেখি কৌতূহলী এবং জ্ঞানপিপাসু শিশুদের।’ এই প্রেক্ষিতে বলি, একটি গবেষণা জানিয়েছে, ‘সদ্য জন্মপ্রাপ্ত শিশুর মাথা ফাঁকা স্লেট নয়, কারণ তার শিক্ষা শুরু হচ্ছে জরায়ুর ভিতর থেকেই।’ স্বাভাবিক ভাবেই গর্ভবতী মায়ের ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বের এবং তাঁকে ঘিরে বিজ্ঞানচর্চার বিস্তার প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তব চিত্র বোঝাতে একটি ছোট উদাহরণই যথেষ্ট: দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর শহরের ২০টি স্কুলে ২০১৭ সালে ছাত্র ভর্তির হিসাব থেকে দেখা যায়, মাত্র ২০% ছাত্র বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে।

দেবদাস মুখোপাধ্যায় কলকাতা-১৪৪

মিত্র রহস্য

‘নতুন বইয়ে থেকে গেল ‘মিত্র রহস্য’ (দিল্লি ডায়েরি, ৮-৪) খবরটিতে লেখা হয়েছে, ‘এক্ষণ’ পত্রিকার ১৯৬৮ সালের কার্ল মার্ক্স বিশেষ সংখ্যায় অশোক মিত্রের একটি লেখা ছিল, যেটি নতুন করে পুনর্মুদ্রিত সংখ্যা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সংবাদদাতা লিখেছেন কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রকের উপদেষ্টা এবং অশোক মিত্রের লেখার ভক্ত অমিতাভ রায় ব্যাপারটি ধরে ফেলে ‘বেদম চটেছেন’। তিনি ‘এক্ষণ’-এ ফোন করে জানতে পেরেছেন, ‘অশোকবাবুর লেখাটি এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছিল যে এ বার সেটি ছাপা যায়নি।’

শুধু তা-ই নয়, তিনি কলকাতায় এসে অশোকবাবুর সঙ্গে দেখা করে লেখাটির বিষয়ে যাচাই করে নেন।

আসল ঘটনা হচ্ছে, ‘এক্ষণ’ কার্ল মার্ক্স বিশেষ সংখ্যায় অশোক মিত্রের কোনও লেখাই ছিল না। কার্ল মার্ক্স বিশেষ সংখ্যাটি ছিল ‘এক্ষণ’-এর ষষ্ঠ বর্ষ, ২য় ও ৩য় সংখ্যা (মে-অগস্ট ১৯৬৮)। এর ঠিক আগের বছর ১৯৬৭ সালের শারদীয় সংখ্যায় ‘এক্ষণ’-এ ‘দাস ক্যাপিটাল’ শতবর্ষ স্মারক ক্রোড়পত্রে অশোক মিত্রের ‘দাস ক্যাপিটাল’ প্রসঙ্গে শিরোনামে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ পেয়েছিল। তা হলে!

দেবাশিস মুখোপাধ্যায় চন্দননগর, হুগলি

ভ্রম সংশোধন

‘ইতিহাসের পাতায় ধাঁধার সমাধান’ শীর্ষক খবরে (আনন্দ প্লাস, ৭-৪) ছবি মুক্তির তারিখ ২৮ এপ্রিল লেখা হয়েছে। হবে ২০ এপ্রিল। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

Cinema Halls Movies
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy