Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: ভক্তি এবং মিলনানন্দ

মনে রাখতে হবে, তার পর‌ও বহু কাল ধরে দুর্গাপূজা কিন্তু বসন্তকালেই হয়ে আসছিল। এর পর ১৭৫৭ সালের শরৎকালে দুর্গাপূজার অকালবোধন হল জমিদার নবকৃষ্ণদেবের হাতে।

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০০

মন্ত্রিমহাশয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সহমত হতে পারলাম না। শারদীয়া দুর্গা পুজো মোটেই ভক্তির পুজো নয়, বরং পুজোকে সামনে রেখে এক মিলনোৎসব। কোন এক কালে শ্রীরামচন্দ্র রাবণ বধের মানসে অকালবোধন করেছিলেন এই শরৎকালে। মনে রাখতে হবে, তার পর‌ও বহু কাল ধরে দুর্গাপূজা কিন্তু বসন্তকালেই হয়ে আসছিল। এর পর ১৭৫৭ সালের শরৎকালে দুর্গাপূজার অকালবোধন হল জমিদার নবকৃষ্ণদেবের হাতে। পলাশির যুদ্ধে মিত্রশক্তির হাতে অর্থাৎ জমিদার গোষ্ঠী ও ইংরেজ বণিকের মিলিত শক্তির হাতে সিরাজের পরাজয়ের পর, মহানন্দ মহোৎসবের উদ্দেশ্যে ঘটল সেই পূজার্চনা। সাহেবরা বললেন, এই পুজো হল Celebration of victory. অর্থাৎ এখনকার শারদীয় পূজায় ভক্তিও যেমন গুরুত্বপূর্ণ, মিলন উৎসবের আয়োজনটিও ততটাই। যার যেমন পছন্দ।

হেমনাথ দাস

কলকাতা-১৫০

ভাষার আধিপত্য

আবাহন দত্তের “আবার হিন্দি আধিপত্যের চেষ্টা” (৪-১০) লেখাটি সময়োপযোগী। দু’একটি অসম্পূর্ণতা দূর করা দরকার, নয়তো বিষয়টি অস্পষ্ট হয়ে থাকে। কারণ ভাষা নিয়ে মাঝেমধ্যেই দেশের প্রশাসনিক ও অন্যান্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি এমন কথা উত্থাপন করেন যা সাধারণ নাগরিককে বিপথে পরিচালিত করে। বেঁচে থাকতে গেলে আমাকে কতগুলো ভাষা শিখতে হবে, তা কিসের উপর নির্ভর করে? রাষ্ট্রের ভাষিক চরিত্রের উপর? না কি আমার পারিপার্শ্বিকের উপর? এক জন টোটোভাষী যেমন মাতৃভাষা শেখেন পৃথিবীর প্রথম আলো দেখার সময় থেকেই, তেমনই শেখেন প্রতিবেশী ভাষা নেপালিও। এর পর আসে স্থানিক অস্তিত্বের প্রশ্ন। ভাষিক-সংখ্যালঘুকে তিনি যে রাজ্যে থাকেন, তার প্রধান ভাষাটি শিখতে হয়। এর পর আসে কেন্দ্রের দাবি— হিন্দি শিখতে হবে। হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার নানা প্রয়াস চলছে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে। এর পর রয়েছে আজকের প্রযুক্তির ও বিশ্বজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য ইংরেজি। ফলে এক জন টোটোভাষীকে পাঁচটি ভাষা শিখতে হয়। এই বহুভাষিকতা তাঁর চাওয়া না-চাওয়ার উপর নির্ভর করে না, এটাই তাঁর বাস্তব। এর বাইরে গিয়ে তিনি আরও ভাষা শিখবেন কি না, তা অবশ্যই তাঁর ইচ্ছাধীন।

হিন্দিকে যাঁরা রাষ্ট্রভাষা করতে চাইছেন, তাঁদের মনে রাখতে হবে হিন্দি যাঁর মাতৃভাষা তিনি হিন্দি আর ইংরেজি শিখেই নিজের পথ সুগম করতে পারবেন। সাধারণ ভাবে ধ্রুপদী ভাষা ছাড়া সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ভাষা আমরা কেউ শিখতে চাই না। কারণ তার সঙ্গে বেঁচে থাকার প্রাথমিক প্রয়োজন যুক্ত থাকে না। সুতরাং তিন ভাষা-নীতির তৃতীয়টির বাধ্যবাধকতা থাকলেও গ্রহণযোগ্যতা মোটেই সে ভাবে গড়ে ওঠেনি ভাষাভিত্তিক রাজ্যগুলিতে।

২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে বর্তমানে ভারতে মাতৃভাষার সংখ্যা হল ১৩৬৯। এ ছাড়াও আছে আরও ১৪৭৪টি ভাষা, যেগুলোর পিছনে সেই ভাষাভাষী জনসংখ্যা কম। এমন একটি দেশে ‘এক ভাষা, এক জাতি, এক দেশ’ নীতি কার্যকর করা অন্যায় নয় কি? মাঝখান থেকে হিন্দির মতো কুলীন ভাষার ক্ষমতা বেড়েছে, আর তার ছায়ায় ঢাকা পড়েছে দেশের অসংখ্য অন্যান্য ভাষা। সাধারণের ধারণায় ভোজপুরিও হিন্দি, অওয়ধিও হিন্দি— যা লিখেছেন আবাহন। হিন্দির এই তালিকায় পাওয়া যাবে ৫৬টিরও বেশি মাতৃভাষা। আর হিন্দি-প্রতিম ওড়িয়ার ছায়ায় ভত্রী, ভুইয়া, ভূমিজালি, প্রোজা, রেল্লি, সম্বলপুরী প্রভৃতি ছ’টি; কন্নড়, কাশ্মীরি, কোঙ্কোনি, পঞ্জাবি, বাংলা ইত্যাদির ছায়ায় তিনটি করে, গুজরাতি ও তামিলের ছায়ায় চারটি করে মাতৃভাষা। ছায়ায় ঢাকা এই ভাষাগুলি এবং এর বাইরের হাজারেরও বেশি ভাষা বিষয়ে আমাদের মতামত কী, তা দেখা দরকার নয় কি? ইংরেজি বিদেশি, এই অজুহাতে হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা করার একটা যুক্তি ওঠে। প্রশ্ন হল, কোন ভাষা বিদেশি, আর কোনটা নয়, সে বিচারও কি এতই সহজ? আমরা নিজেরা কে বিদেশি কে নিখাদ স্বদেশি, তা কি আমরা নিজেরাই জানি? মারাংবুরু থেকে আল্লা, জিসাস, ভগবান, কে বাইরের, কে ভিতরের? ছোট বড় যা আছে এ দেশের ভিতরে, যারা এ দেশকে নিজের মনে করে দেশের জলহাওয়ায় বেড়ে উঠেছে, সমাজ ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে, তার মধ্যে স্বদেশি-বিদেশি ক্ষমতার তারতম্য না করাই শ্রেয়। এতে অহেতুক সংঘাতের বীজ উপ্ত হয়। নাগরিকের শান্তি বিনষ্ট হয়। বরাক উপত্যকার আন্দোলন, ওড়িয়া-বাঙালি দ্বন্দ্ব, সবের মধ্যেই এই স্বদেশি-বিদেশি দ্বন্দ্বের বীজ। আজও একচল্লিশটি ভাষাভাষীর নাগরিক হিন্দির পাশে নিজেদের ভাষারও সাংবিধানিক কৌলীন্য প্রদানের দাবি জানিয়ে রেখেছে। ভাষা নিয়ে খামকা বাছবিচার করলে এ দেশের যুগযুগ ধরে সঞ্চিত জ্ঞানভাণ্ডার হারিয়ে যেতে পারে।

মহীদাস ভট্টাচার্য

ভাষা ও ভাষাবিজ্ঞান শাখা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

গাঁধীজির লাঠি

দীপেশ চক্রবর্তীর ‘গাঁধীজি কেন প্রাসঙ্গিক’ অতীব শিক্ষামূলক প্রবন্ধ। একটি ঘটনা উল্লেখ করব। এক বার গাঁধীজিকে গল্পচ্ছলে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে পথের মাঝে একটি বিষধর সাপ দেখলে আপনি কী করবেন। গাঁধীজির জবাব ছিল সব চেয়ে আগে আমি আমার লাঠিটি ছুড়ে ফেলে দেব। আমরা আর সবাই হয়তো ওই একই সময়ে লাঠিটি ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে ওটাকেই আগলে ধরব। সহিংস পথে অহিংস সমাজ গড়া যায় না এই কথাই হয়তো গাঁধীজি বলতে চেয়েছিলেন।

বিমল কুমার চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা-১৯

ভারী যান

‘ট্রেলার নিষিদ্ধ, পুজোর কার্নিভাল নিয়ে চিন্তা’ (৭-১০) সংবাদে লেখা হয়েছে ‘‘দশ বা তার বেশি চাকার গাড়ি শহরে ঢোকা নিষেধ...।’’ এই প্রসঙ্গে বলি আমরা শহরের যে অঞ্চলে বাস করি সেটি শহরের মোটামুটি অভিজাত অঞ্চল বলেই পরিচিত। কিন্তু সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের শুরুতেই আমাদের বাড়িগুলির সামনে দিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড ধরে একটু রাত হলেই অত্যন্ত ভারী ভারী পণ্যবাহী দশ বা তার বেশি চাকার গাড়িগুলি যাতায়াত করে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ঢালাই কাজে ব্যবহৃত সিমেন্ট মিক্সিংয়ের ভারী গাড়িগুলো। ফলে ওই জায়গার বাড়িগুলো প্রচণ্ড ভাবে কাঁপতে শুরু করে। কোনও কোনও বাড়িতে এই কম্পনের ফলে চিড়ও ধরেছে। মাঝে মাঝে মনে হয় যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। খাট-সহ অন্যান্য আসবাবপত্র কাঁপতে থাকে। কাচের শার্সিতে ঝনঝন শব্দ হয়। অনেক বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যক্তিও এতে বিপন্ন বোধ করেন। সাদার্ন অ্যাভিনিউ ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের সংযোগস্থলে রাস্তা খুবই চওড়া হওয়ায় এক সঙ্গে তিন-চারটি দশ বা তার বেশি চাকার লরি ভারী মালপত্র-সহ অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যাতায়াত করে। আমার বাড়ির আশেপাশের কয়েক জন প্রতিবেশীও একই অভিযোগ করেছেন।

রাজ্যের পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের কাছে আমার অনুরোধ, রাতের দিকে ভারী ভারী পণ্যবাহী লরিগুলির চলাচল নিয়ন্ত্রিত হোক। সব গাড়িগুলিকে একই সময়ে একই পথে না পাঠিয়ে অন্যান্য পথেও পাঠানো হোক।

সোমনাথ মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-২৬

বেহাল রাস্তা

বাইপাস সংলগ্ন রাজডাঙা অঞ্চলের বাসিন্দা আমি। এখানকার রাস্তাঘাট বড় বেহাল অবস্থায় আছে। জল এবং নিকাশির পাইপ লাইনের কাজ প্রায় এক বছর ওপর হয়ে গেলেও একাধিক রাস্তায় এখনও পিচ হয়নি। হাঁটা কষ্টকর। অটো চলাচলেরও অনুপযুক্ত। ধুলো উড়ছে। পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।

ধীরেন্দ্র মোহন সাহা

কলকাতা-১০৭

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Durga Puja Controversy Subrata Mukherjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy