Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: শরৎচন্দ্রকে যে-ভাবে

চিঠি-লেখক জহরব্রত বা রাজপুত রমণীর ‘সম্মান রক্ষার্থে’ আত্মহত্যাকে প্রতিবাদ ও যুদ্ধক্ষেত্রে না নেমেও জয়লাভ বলেছেন।

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৩৩

‘শোনা যায়, প্রণয়ঘটিত ব্যর্থতার যন্ত্রণা ভুলতে প্রথম জীবনে হাতে পয়সা পেলেই শরৎচন্দ্র বেজায় মদ্যপান করতেন। মাঝে মাঝে মদ খেয়ে বেহুঁশও হয়ে পড়তেন।’ ‘রেঙ্গুনের যৌনপল্লিতেও নাকি শরৎচন্দ্রের যাতায়াত ছিল।’ রবিবাসরীয়-র এক নিবন্ধে (‘মুখ ভর্তি দাড়ি,...’, ৭-১) লেখক
এ-ভাবেই সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রকে ভাবতে শিখিয়েছেন। লেখকের ‘শোনা যায়’, ‘নাকি’ কথাগুলির সূত্র তিনি দেননি। শরৎচন্দ্র সম্পর্কে কোনও গবেষণামূলক প্রবন্ধে এ-সব লেখা হলে তা-ও যুক্তিযুক্ত হত। কিন্তু ‘রবিবাসরীয়’র অল্প পরিসরে এই কথাগুলি পরিবেশিত হলে মনে প্রশ্ন জাগে। বাঙালি পাঠকের কাছে শরৎচন্দ্রকে হেয় করাই কি উদ্দেশ্য? এখনও শরৎচন্দ্র বাংলা ও ভারতে বহুপঠিত ঔপন্যাসিক। সাহিত্যরসিক বাঙালি আজও শরৎভাবনার নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁর তৈরি নারীচরিত্রগুলির ব্যঞ্জনা নতুন করে আবিষ্কৃত হচ্ছে। সেখানে হঠাৎ এই ধরনের লেখা অনভিপ্রেত।

স্বপনকুমার ঘোষ কলকাতা-৩৪

ধর্ষণ ও পুংতন্ত্র

ধর্ষণ কি কেবল একটি মেয়ের শারীরিক বিপর্যয়— দেবাদৃতা মণ্ডল তাঁর চিঠিতে (‘স্বরা ভাস্কর ও পদ্মাবত’, ৭-২) এই প্রশ্নটি তুলে ধর্ষিতার মানসিক বিপর্যয়ের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছেন। তার পর ধর্ষিতার আত্মহত্যাকে প্রকারান্তরে সমর্থন করেছেন। কিন্তু সমাজ বা সামাজিক ধ্যানধারণা ধর্ষিতাকে যে মানসিক যন্ত্রণা দেয়, তাঁর মানসম্মান নিয়ে টানাটানি করে, সেটা তাঁর শারীরিক বিপর্যয় অর্থাৎ ‘যোনি আঘাতপ্রাপ্ত’ হওয়ার কারণেই সম্ভব হয়। সুতরাং তাঁর মনস্তাত্ত্বিক বিপর্যয়ের কারণ এটাই— তিনি পুরুষের চোখে, সমাজের চোখে শারীরিকভাবে অক্ষত নন।

দ্বিতীয়ত, চিঠি-লেখক জহরব্রত বা রাজপুত রমণীর ‘সম্মান রক্ষার্থে’ আত্মহত্যাকে প্রতিবাদ ও যুদ্ধক্ষেত্রে না নেমেও জয়লাভ বলেছেন। এই ব্যাখ্যা অর্থাৎ আত্মহত্যাকে গৌরবান্বিত করা পুরুষতন্ত্রের নির্মাণ। এর পিছনেও রয়েছে নারীশরীরকে অক্ষত রাখার প্রয়াস। এই ধরনের আত্মহত্যাকে প্রতিবাদ বা জয়লাভ বলাটা চূড়ান্ত অমানবিকতা ও এক ধরনের পুরুষতান্ত্রিক স্বার্থপরতা। দুর্ভাগ্য, বহু নারীও এই ধরনের মানসিকতার শিকার। তাঁরা বিশ্বাস করেন, শরীরই সম্মানের উৎস, শরীরের শুদ্ধতাই জীবনের পবিত্রতা, তাকে রক্ষার জন্য প্রাণ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু শরীরের ‘শুদ্ধতা’ কি জীবনের চেয়েও মূল্যবান?

চিঠির এক জায়গায় রয়েছে, ব্রিটিশ আমলেও বিপ্লবীরা সংঘর্ষের শেষে আত্মসম্মান রক্ষার্থে ও ব্রিটিশদের শাস্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আত্মহত্যা করতেন। আসল কারণ কি তাই? শুধু স্বাধীনতা সংগ্রামীরা নয়, অনেক জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরাও একই কাজ করেন। সংঘর্ষের পর ধরা পড়ার মুহূর্তে আত্মহত্যার কারণ: দল বা সংগঠন সম্পর্কে তথ্য তাঁরা গোপন রাখতে চান। জীবিত ধরা পড়লে জেরার মুখে অথবা শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের সময় তা ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। কিংবা তাঁরা জানেন ধরা পড়লেও মৃত্যুদণ্ড অনিবার্য। এই আত্মহত্যার সঙ্গে জহরব্রতর কোনও তুলনা চলে নাকি!

স্বস্তিক মল্লিক মাখলা, উত্তরপাড়া, হুগলি

সবাই পাক

চিংড়িঘাটায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছেন দুই বন্ধু। যে কোনও মৃত্যুই খুব দুর্ভাগ্যের। খুব বেদনাদায়ক। কাগজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দুই মৃতের পরিবারকে রাজ্য সরকার ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেশ ভাল। কিন্তু প্রশ্ন, রাজ্যে বাকি জায়গায় যে দুর্ঘটনাগুলি ঘটছে, তাতে যাঁরা মারা যাচ্ছেন, তাঁদের পরিবারগুলি কেন ব্রাত্য থাকবে? পেলে সবার পাওয়া উচিত।

মঙ্গলচন্দ্র ঘোষ মালদহ

পাথর ছুড়ছে

চক্ররেলের কামরায় উঠে দেখি, প্রতিটা গেটে ৪-৫ জন করে ছেলে হাসি-তামাশা করছে। লাইন থেকে পাথর তুলে তুলে গেটের কাছে জমা করছে। এত পাথর নিয়ে এরা কী করবে? গাড়িটা চলতেই বোঝা গেল।

মিলেনিয়াম পার্কে লাইনের ধার বরাবর কিছু ছেলে-মেয়ে বসে
সময় কাটাচ্ছে, এই ছেলেগুলির লক্ষ্য তারা। চলন্ত গাড়ি থেকে তাদের পাথর ছুড়ে ছুড়ে মারছে। ওই পাথর যদি কারও মাথায় লাগে,
সে না-ও বাঁচতে পারে। কিন্তু ছুড়তে ছুড়তে এদের আনন্দের আর সীমা নেই, সঙ্গে ‘টার্গেট’দের মা-বোন নিয়ে অশ্লীল শব্দ নিক্ষেপ।

যাত্রীদের নিষেধে কান না দিয়ে, বিবাদী বাগ থেকে বাবুঘাট পর্যন্ত চলল ‘জোড়া’র প্রতি ইটবৃষ্টি। প্রবল উল্লাস।

চণ্ডী কাবাসী কলকাতা-১২৯

ট্রেনে কুকথা

এখন সপরিবার লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করা বেশ অসুবিধাজনক হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন বয়সের নিত্যযাত্রীরা দল তৈরি করে অত্যন্ত বিশ্রী কথাবার্তা বলেন ও আলোচনা করেন, আর পাশে কে বা কারা বসে বা দাঁড়িয়ে আছে, তা যেন দেখতেই পান না। বিশেষত অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা তো অনেক সময়ই মাত্রাছাড়া আচরণ করে, হয়তো তারা কলেজ থেকে একসঙ্গে ফিরছে, কিন্তু ট্রেন-কামরাটি তাদের কাছে কলেজের কমন রুমে পরিণত হয়ে যায়। সেখানে থাকে না কোনও আচরণের বা ভাষার শালীনতা। পাশের লোকেরা অগত্যা সমস্ত ‘সাংস্কৃতিক দূষণ’ নীরবে সহ্য করে নিদ্রার ভান করেন এবং সঙ্গের ছোটদের মোবাইল-গেম দিয়ে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।

হেমন্ত গরাই পাণ্ডুয়া, হুগলি

রোজ চলছে

‘‘শেষ ট্রেনে ‘দুষ্কৃতী তাণ্ডব’ শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায়’’ (৯-২) প্রসঙ্গে বলতে চাই, আমি এই শাখার ৮:২২-এর বারুইপুর লোকালের নিত্যযাত্রী। প্রতি দিন মহিলা কামরার পরের দুটি দরজায় (অন্য কামরায় বা অন্য ট্রেনেও হয় শুনেছি) মল্লিকপুর থেকে ওঠা কিছু যুবক নিজেদের মধ্যে অতি অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করে, প্রতিটি স্টেশনের বিপরীত প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো মহিলা যাত্রীদের প্রতি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে, চিৎকার করে অকারণে গালাগালি করে, ওড়না, ছাতা, টুপি, পোশাকের অংশ ধরে টানে। কেউ বারণ করলে ঘুসি, কিল, থাপ্পড় খাওয়া তার অবধারিত। ট্রেন যতই ফাঁকা থাক এরা দরজায় বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে ঝুলে জিমন্যাসটিক্‌স দেখাতে দেখাতে লাইনের পাথর তুলে পার্শ্ববর্তী এলাকার বাড়িতে মারে। অতি সামান্য কারণে নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে মারপিট, গালাগালি করে। এ-ব্যাপারে বারুইপুর, সোনারপুর জিআরপি-কে বহু বার জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আসিফ হোসেন কাছারি বাজার, বারুইপুর

অভ্যাস বদলান

‘প্রতিবাদে অটো বন্ধ, দুর্ভোগ’ (৯-২) শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। কিসের দুর্ভোগ? টালিগঞ্জ-গড়িয়া রুটে অটোর দৌরাত্ম্য দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী। প্রত্যেক ‘মামা’র জন্য আছে এক বা একাধিক রাজনৈতিক ‘দাদু’। ফলে এদের বাগে আনা পুলিশের সাধ্যাতীত। অসংগঠিত, অসহায় যাত্রীদের, এই চালকদের হাতে হেনস্তা হওয়া সাধারণ ঘটনা। আমি বয়স্ক, এই এলাকার পুরনো বাসিন্দা। প্রত্যেক দিনই কোথাও না কোথাও যেতে হয়। শারীরিক সুবিধার চেয়ে আত্মসম্মান শ্রেয় জ্ঞানে অটো এড়িয়ে চলি। মেট্রো ছাড়াও বহু বাস রুট এই রাস্তায়; অসুবিধা হয় না। চাই শুধু একটু অভ্যাসের পরিবর্তন আর প্রতিবাদের ইচ্ছা।

দেবাশিস মিত্র নেতাজিনগর

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

Sarat Chandra Chattopadhyay Blame
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy