এসএসসি চাকরি প্রার্থী শিক্ষকদের অনশন ধর্মঘট ২৬ দিনে পড়তে চলেছে। অনশনকারী তরুণতরুণীদের শরীরের উপর এই দীর্ঘ অনশনের পরিণাম ভেবে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও বেদনার্ত বোধ করছি। এই মুহূর্তে আমি কলকাতার বাইরে। শহরে থাকলে অবশ্যই অনশনের মঞ্চে তাঁদের পাশে গিয়ে বসতাম। দাবি আদায়ের প্রক্রিয়া হিসেবে অনশনের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় পেরিয়ে গিয়েছে; এই নিরুপায় অবস্থার প্রতিকার কি আগেই সম্ভব ছিল না? যেখানে সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে ওয়েবসাইটে ছাত্রের নাম ও সাইকেলের মডেল নম্বর তৎক্ষণাৎ আপলোড হয়ে যায়, সেখানে স্কুল প্রতি শিক্ষকের প্রয়োজন (অথবা আধিক্য) প্রতি ১৫ দিনে হালতামামি করা সম্ভব নয় কি?
অবশেষে একটি কমিটি গড়া হল আন্দোলনের ২৩ দিনের মাথায়, কমিটি সময় পেল ১৫ দিন। অর্থাৎ ৩৮ দিনের আগে কোনও সমাধান সম্ভব হবে না। ওয়েট লিস্টের সকলে হয়তো চাকরির দাবিদার নন, কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সদর্থক পদক্ষেপগুলি ঘোষণা করা সম্ভব ছিল না কি? সব দাবি সরকার পূরণ করতে পারে না, কিন্তু এমন করুণাহীন ঔদাসীন্য তো জনগণের নির্বাচিত সরকারকে মানায় না!
নির্বাচনের উপর এই অনশনের প্রভাব নেই বলেই কি মৃত্যুর মুখে দাঁড়ানো ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্তব্ধতা দীর্ঘায়িত? কিন্তু নির্বাচনই কি সব? প্রতি দিনের নিষ্ঠুরতায় আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে কোথায় ঠেলে দিচ্ছি তাও তো দেখতে হবে!
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘ অনশন আন্দোলনের বেদনা জানেন। তাঁকেই অনুরোধ করি, আপনি নিজে তরুণতরুণীদের সদর্থক পদক্ষেপের আশ্বাস দিন, আরও ক্ষতি হওয়ার আগে আন্দোলন প্রত্যাহারের আবেদন করুন।
অকরুণ নিস্পৃহতার সাক্ষী হয়ে থাকলে ইতিহাস আমাদের মার্জনা করবে না।
অনিতা অগ্নিহোত্রী
আইআইটি পাওয়াই, মুম্বই
ভারত ও চিন
2 ‘মেঘনাদের জয়’ (১৫-৩) সম্পাদকীয়টিতে পড়লাম, ‘‘...দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের প্রধান শত্রু ভারত।’’ প্রসঙ্গটি কিছু কঠিন প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। ভারতের প্রধান শত্রুও কি চিন নয়? এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ‘গ্লোবাল পাওয়ার’ হওয়ার লক্ষ্যে প্রবল ভাবে ধাবমান শক্তিধর চিন। ইতিমধ্যেই পাক-চিন ইকনমিক করিডর গড়ে তুলতে চিন সেখানে ৪৬০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ ঘোষণা করেছে। নির্ধারিত সড়কটি যাবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর তথা বালাকোটের পাশ দিয়ে, যেখানে ঘাঁটি গেড়ে আছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী জইশের জঙ্গি-শিবির।
প্রশ্ন উঠবে, ভারত তার নিরাপত্তার স্বার্থে কী ভাবে এই ‘প্রধান শত্রু’র মোকাবিলা করবে? যখন এই নিয়ে চার বার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ জঙ্গি-তালিকা থেকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী জইশ-ই দলের প্রধান মাসুদ আজহারের নাম অন্তর্ভুক্তি আটকে দিল চিন, তখন উপমহাদেশের শান্তির লক্ষ্যে ভারত আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কী ভাবে সন্ত্রাসবাদের খোলাখুলি মদতকারী বলশালী দেশের বিরুদ্ধে বিশ্বজনমত গঠন করতে পারবে?
বিরোধিতার অন্যতম একটি পদক্ষেপ হতে পারে, ব্যাপক হারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ভারতীয় বাজার থেকে বিপুল চিনা-পণ্যের অপসারণ। চিন থেকে আমদানির পরিমাণ ৬৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে, যেটা গত ১০ বছরে সর্বোচ্চ। চিনের টেলিকম জায়েন্ট ‘হুয়াওয়ে’ সংস্থা দ্রুতগতি ফাইভ-জি নেটওয়ার্কে, বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে চায়। ভারতের টেলিকম বিভাগ গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রযুক্তিগত ‘ফিল্ড ট্রায়াল’-এর জন্য সেই কোম্পানিকে বিশেষ ভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ভারতের উচিত চিনের এই ‘নেট জায়েন্ট’কে পুরোপুরি অগ্রাহ্য বা বাতিল করা। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা-সহ পশ্চিমের বেশ কিছু দেশ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইতিমধ্যে ওই চিনা সংস্থাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
বাণিজ্যিক স্তরে প্রতিরোধের পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চে পাকিস্তানে লালিত সন্ত্রাসের পরিকাঠামো সম্পর্কে, ভারতকে সরব হয়ে সবাইকে বিশদ ভাবে জানাতে হবে— কোন স্বার্থান্বেষী, আধিপত্যকামী দেশ, ভয়ঙ্কর আতঙ্কবাদকে নিজের ছত্রচ্ছায়ায় আড়াল করে রাখছে। আমেরিকা, ফ্রান্স-সহ সব দেশ এই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মত দিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা ভারতের কাছে একটা বিরাট রক্ষাকবচ।
যদিও এর পর জটিল প্রশ্ন, ভারতের সঙ্গে চিনের দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ তবে কী? গত এক বছরে মোদী ও শি চিনফিং চার বার বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। অথচ মাসুদ আজহার ও জইশের অনুকূলে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিন ভিটো প্রয়োগ করেছে। ভারত আর কত বার এ ভাবে চিনের প্রতি সৌহার্দ্যের হাত বাড়িয়ে যাবে?
পৃথ্বীশ মজুমদার
কোন্নগর, হুগলি
সংশোধন
2 ডা় হৈমবতী সেন সম্পর্কে আমার চিঠিটিতে (‘হৈমবতী সেন, ২১-৩) একটি তথ্যপ্রমাদ ঘটেছে স্মৃতিবিভ্রমে। ‘স্বাস্থ্যের বৃত্তে’ পত্রিকায় ‘বাল্যবিধবা থেকে মহিলা ডাক্তার’ রচনাটির লেখক ধ্রুবজ্যোতি দে নন, ওটির লেখক প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায়। পরে ওই পত্রিকাটিতেই প্রবীরবাবু ডা় হৈমবতী সেনের দিনলিপি থেকে ধারাবাহিক অনুবাদ প্রকাশ করে চলেছেন। ‘আবাদভূমি’ পত্রিকায় যে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল সেটির লেখক ধ্রুবজ্যোতি দে, যেটি পরিবর্ধিত আকারে আশাদীপ প্রকাশনী থেকে ‘সাদা থান থেকে সাদা অ্যাপ্রন: ডা় হৈমবতী সেনের জীবন ও সময়’ নামে প্রকাশ পেয়েছে। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমি আন্তরিক দুঃখপ্রকাশ করছি৷
সিদ্ধার্থ সেন
কামারপাড়া রোড, হুগলি
উপকারীর কাছে
2 নিজের প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে, বিপন্ন অন্য মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ছুটে যাওয়া মানুষের সংখ্যা এখনও যে শূন্য অঙ্কে নেমে যায়নি, তার জ্বলন্ত নজির ‘মনের জোরেই লড়াই জারি রেখেছেন জীবন’
(১৪-৩) শীর্ষক সংবাদ। গত ১৩ ডিসেম্বর শ্যামনগর স্টেশনে কানে হেডফোন লাগিয়ে রেললাইন পার হচ্ছিলেন দুই তরুণী। ট্রেন আসার শব্দ তাঁরা শুনতে পাননি। জীবন সরকার লাইনে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁদের ঠেলে সরিয়ে দেন। কিন্তু নিজেকে লাইন থেকে সরাতে না পারায় ট্রেনের ধাক্কায় ছিটকে পড়ে জ্ঞান হারান।
দুই তরুণীর জীবন রক্ষা করে জীবনবাবুর নিজের জীবন আজ বিপন্ন। পাড়ার লোক, আত্মীয়, অপরিচিত মানুষ, এমনকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও জীবনবাবুর জীবন রক্ষার লড়াইয়ে পাশে থেকেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, যাঁদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে তাঁর এমন দুরবস্থা, তাঁদের পাশে পেলেন না। দুই তরুণীর উদ্দেশ্যে আমার আবেদন— উপকারীর উপকার স্বীকার করার
সৎসাহস দেখাতে এক বার অন্তত জীবনবাবুর সামনে হাজির হোন।
সত্যকিংকর প্রতিহার
বাঁকুড়া
নজির
2 দেশ যখন রং খেলতে ব্যস্ত, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সাম্প্রতিক কালে বিপুল সংখ্যক জওয়ান শহিদ হওয়ার দুঃখে, রং খেলা বর্জন করলেন, আরও কিছু মানুষও সেই পথ অবলম্বন করেছেন। এটা একটা নজির হয়ে রইল।
জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়
মীরবাজার, পশ্চিম মেদিনীপুর
দেবালয়
2 সর্বত্র ইতরতা ছড়িয়ে পড়ছে, শান্তিনিকেতনে দোলের উৎসবই বা ছোঁয়াচ বাঁচাবে কী করে? নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়?
রাণু চক্রবর্তী
কলকাতা-৬৪
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy