Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: বাহিরের দুনিয়ার নন

সেই খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে গ্রিসের আথেন্স আদি শহরে ‘গণতন্ত্র’ পদ্ধতির সূচনালগ্ন থেকেই, সেটি দলহীন হবে কি না, সে বিতর্ক চলছেই। গ্রিসের আদিম গণতন্ত্র পার্সিলেস-ইউক্লেডিস-হেরোডোটাস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৪০) হয়ে শেষ হল আলেকজেন্ডারের (খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৬) রাজতন্ত্রে।

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

‘স্লোভাকিয়া দূর নহে’ (২-৪) শীর্ষক সম্পাদকীয় পড়ে ক’টি কথা মনে এল। পুরনো চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে ২৫ বছর আগে ‘স্লোভাকিয়া’ (স্লোভেস্কা রিপাব্লিকা) নামে যে সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রটি গঠিত হয়েছে, তার শেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী, সাহসী মানবাধিকার কর্মী, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা, আইনজীবী জ়ুজ়ানা কাপুতোভা-কে (ছবিতে) ‘‘রাজনীতির বাহিরের দুনিয়ার মানুষ’’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার সঙ্গে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে ‘দলহীন’ গণতান্ত্রিক মানুষ ‘অতি জাতীয়তাবাদ’-এর বিরুদ্ধে, ‘উদার বহুত্ববাদ’-এর পক্ষে কী ভাবে সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছেন, তাও লেখা হয়েছে।

সেই খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে গ্রিসের আথেন্স আদি শহরে ‘গণতন্ত্র’ পদ্ধতির সূচনালগ্ন থেকেই, সেটি দলহীন হবে কি না, সে বিতর্ক চলছেই। গ্রিসের আদিম গণতন্ত্র পার্সিলেস-ইউক্লেডিস-হেরোডোটাস (খ্রিস্টপূর্ব ৪৪০) হয়ে শেষ হল আলেকজেন্ডারের (খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৬) রাজতন্ত্রে।

সুদূর অতীতে না গিয়ে এই দেশেই দেখি। মহাত্মা গাঁধী বা তাঁর ‘সমাজবাদী’ ভাবশিষ্য লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণের ‘দলহীন গণতন্ত্র’-এর স্বপ্ন যে সফল হয়নি, বরং জয়প্রকাশজিকে শেষ অবধি ‘জনতা দল’ সৃষ্টি করতে হয়েছিল, গণতন্ত্র রক্ষা করতেই, সে তো খুব পুরনো ইতিহাস নয়!

জ়ুজ়ানা কাপুতোভা কর্মজীবন শুরু করেন স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনে অংশ নিয়ে। পরে বৃহত্তর ক্ষেত্রে ‘ওপেন সোসাইটি’ বা ‘সিভিল সোসাইটি’র মাধ্যমে নির্যাতিত শিশুদের সামাজিক ন্যায় ও পরিবেশ দূষণ নিয়ে কাজ করলেও, অবশেষে ২০১৭-র ডিসেম্বরে ‘প্রগ্রেসিভ স্লোভাকিয়া’ নামের রাজনৈতিক দলে যোগ দেন। পরের মাসেই হন সেই দলের সহ-সভানেত্রী। ১-৪ তারিখের আনন্দবাজার পত্রিকার ১১ পাতায় সচিত্র প্রতিবেদনে তাঁকে ‘উদারপন্থী প্রগ্রেসিভ স্লোভাকিয়া পার্টির সদস্য’ বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও গত মাসের শুরুতে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার আগে, তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। তার পর ইতিহাস— ১৬ মার্চ প্রথম রাউন্ড জিতে, ৩০ মার্চ দ্বিতীয় পর্ব জিতলেন ৫৮% ভোট পেয়ে। তবে আধ কোটি জনসংখ্যার (৫৪.৪৮ লক্ষ) মাত্র ৪১% ভোট পড়েছে। তাঁর বিজয়ে তাঁর দল ‘প্রগ্রেসিভ স্লোভাকিয়া’ দলের প্রবল সমর্থন কাজ করেছে। তাই এই জয়কে ‘‘রাজনীতির বাহিরের দুনিয়ার মানুষ’’-এর জয় বলা যাবে কি?

এই সুযোগে আরও একটি ছোট্ট আলোচনা বোধ করি অপ্রাসঙ্গিক হবে না। বিশ্ব নারী দিবসের মাত্র ২২ দিন পরেই এক নারী একটি দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। গত ১০০ বছরে, সারা পৃথিবীতে অন্তত ২১৩ জন নারী রাষ্ট্র ক্ষমতার চূড়ায় বসেছেন। সেই তালিকায় সবচেয়ে বেশি নাম পূর্বতন সোভিয়েট ইউনিয়ন ও পূর্ব জার্মানির। অতি উন্নত, উন্নয়নশীল বা অনুন্নত রাষ্ট্র, গোঁড়া ইসলামি বা একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র নেপাল— সব রকম দেশেই কোনও না কোনও সময়ে দেশের সর্বোচ্চ পদে বা তার খুব কাছে নারীকে দেখা গিয়েছে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর ২১টি দেশে এক এক জন নারীই রাষ্ট্রপ্রধান। এবং তাঁরা কোনও না কোনও ‘রাজনৈতিক দলের’ মানুষ। জ়ুজ়ানা হবেন ২২তম।

‘দলহীন অরাজনৈতিক ক্ষমতা’ কথাটা শুনতে মনোমুগ্ধকর, বাস্তবে কোনও রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে যে টেকে না, তার সাক্ষী ইতিহাস। অরাজনৈতিক মানুষের প্রবলতম আন্দোলন রাষ্ট্রক্ষমতাকে উচ্ছেদ করতে পারে, দখল করতে পারে না। সে আমাদের দুর্ভাগ্য। সঙ্গে সঙ্গে ‘অতি জাতীয়তাবাদ’-এর বিরুদ্ধে ‘উদার বহুত্ববাদ’ যে দেশে দেশে কালে কালে বার বার কোণঠাসা বা পরাজিত হয়ে চলেছে, সেটিও কম দুর্ভাগ্য নয় ।

স্বরাজ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা-৯৬

.

ক্যানাল চুরি

বীরভূমের সিউড়ি তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে যে মেন ক্যানাল এসেছে, তার একটি ছড় তপন, দিঘুলী, হাটপাড়া,আরও কয়েকটা গ্রামের পাশ দিয়ে আমাদের হাঁসন গ্রামে গিয়েছে। ক্যানালের নানা স্থানে যার যেমন ইচ্ছে ক্যানাল কেটে দেওয়ার জন্য, আমাদের গ্রাম ও পাশের গ্রামগুলি ক্যানালের জল পায় না। ফলে গরমকালে অনেক জল কিনে, ধান, গম ও অন্যান্য ফসল লাগাতে হয়। অবিলম্বে ক্যানালের পাহারার ব্যাবস্থা করে, অরাজকতা বন্ধ করা হোক।

গৌর গোপাল সরকার

নতুন হাসপাতাল পাড়া, বীরভূম

জরিমানা হোক

সম্প্রতি অসমের নামেরি জাতীয় উদ্যানে গিয়েছিলাম। তার গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে জিয়া ভোরেলি নদী। জন্তু-জানোয়ার ছাড়াও সেখানে হরেক রকমের পাখির আনাগোনা। কিন্তু নদীর তীরে ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিক ব্যাগ এবং মদের বোতল দেখে খারাপ লাগল। এক শ্রেণির পর্যটক এবং পিকনিক পার্টির বেহিসেবি আচরণের জন্য প্রায় সর্বত্র একই অবস্থা। শুধু সতর্কীকরণের বার্তার বোর্ড ঝুলিয়ে এদের হুঁশ ফেরানো মুশকিল। নজরদারি, জরিমানা আদায় প্রয়োজন।

ধীরেন্দ্র মোহন সাহা

কলকাতা-১০৭

ভবিষ্যৎ কী?

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে যা-ও বা নার্স ও জেনারেল ডিউটি অ্যাটেনড্যান্ট (জিডিএ) কর্মীদের দিয়ে অপারেশন বিভাগগুলি চলছে, জেলা সদর হাসপাতালগুলির অনেক জায়গায় পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও যথেষ্ট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর অভাবে সেগুলি শিকেয় উঠেছে। সরকারি অর্থে কেনা উন্নত যন্ত্রপাতি দেখভালের অভাবে নষ্টও হয়ে যাচ্ছে।

২০০৭ সাল থেকে, রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে, একই সঙ্গে অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজি, ক্রিটিকাল কেয়ার টেকনোলজি, পারফিউশন টেকনোলজির মতো বিবিধ প্যারামেডিক্যাল কোর্স নিয়ে ডিগ্রি স্তরে পড়ানো হচ্ছে। এর পরে প্রয়োজনীয়তা বুঝে ২০১২ সাল থেকে অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজির উপরে ডিপ্লোমা কোর্সও প্রতিটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ানো হচ্ছে। অথচ অদ্ভুত ভাবে, ২০১৮ সালে রাজ্য সরকার, সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে, কেবলমাত্র অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজি ছাড়া বাকি সব বিষয়ের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে। এবং ডিসেম্বর মাসে সকলে তাঁদের নিয়োগপত্র হাতেও পেয়ে যান! একই সঙ্গে এতগুলো বিষয় একই স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়ানো হলেও এমন দ্বিচারিতা সত্যিই হতাশাজনক।

অথচ এই রাজ্য ছাড়া, কেন্দ্রের অধীনে থাকা ভারতের সমস্ত হাসপাতালে, অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু আছে।

শোনা গিয়েছিল, অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজিস্টদের নিয়োগের ফাইল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার পর থেকে আজ তিন বছর ধরে স্বাস্থ্য ভবন, বিভিন্ন সরকারি দফতর ও নবান্নেও যাওয়া হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ে জানানোও হয়েছে। ইতিমধ্যে শুনেছি, বহু বার সরকারি নথি-সহ এই বিষয়ের ফাইল স্বাস্থ্য দফতর থেকে হারিয়ে গিয়েছে। বারংবার সেই কথা জানানোয় অবশেষে ই-ফাইল তৈরি হলেও, কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

কথাটা হল, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রতিটি কর্মীর আলাদা কাজ আছে। সেখানে নার্স ও ডাক্তারের পক্ষে সব কাজ সামাল দেওয়া অসম্ভব। কেন্দ্র যেখানে সমস্ত মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের কথা সমান ভাবে ভাবতে উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে রাজ্যের থেকেও দৃঢ় পদক্ষেপ আশা করি। প্রায় হাজারখানেক অপারেশন থিয়েটার টেকনোলজিস্ট এই রাজ্যে আছেন। চলতি বছর থেকে এই সব মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের জেনপা-র (JENPAUH) অধীনে ভর্তি নেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। কিন্তু এত পড়ুয়া ও কর্মীর ভবিষ্যৎ কী?

শুভজিৎ বসাক

কলকাতা-৫০

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Zuzana Caputova Slovakia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE