Advertisement
E-Paper

নির্বাচন প্রশ্নাতীত রাখার কথা কমিশনকে মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে কেন?

পাঁচ দফায় ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে দেশের সাধারণ নির্বাচনের জন্য। ষষ্ঠ দফার ভোটের আগেও বাংলায় বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে রাতভর ধর্নায় বসে থাকতে হচ্ছে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০০:২৫
নির্বাচন কমিশনের সদর দফতর। ফাইল চিত্র।

নির্বাচন কমিশনের সদর দফতর। ফাইল চিত্র।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করানো নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য। প্রত্যেক নাগরিকের ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করা যাবে কি না, তা নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা কমিশনেরই থাকার কথা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সে ছবি দেখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক দলকে রাস্তায় নামতে হচ্ছে সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে। বিক্ষোভ বা ধর্নার মুখোমুখি হওয়ার পরে কমিশন যেন দর কষাকষির ভঙ্গিতে কিছুটা মেনে নিচ্ছে রাজনৈতিক দলের দাবি। এই রকম একটা ছবি কেন তৈরি হচ্ছে, তা বেশ দুর্বোধ্য।

পাঁচ দফায় ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে দেশের সাধারণ নির্বাচনের জন্য। ষষ্ঠ দফার ভোটের আগেও বাংলায় বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনের দফতরের সামনে রাতভর ধর্নায় বসে থাকতে হচ্ছে। সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবিতে কমিশনের গেটে অবস্থান করতে হচ্ছে খোদ প্রার্থীকে। এই ছবিটা কি আদৌ কাম্য?

গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বাংলা জুড়ে, তা সম্ভবত কেউই ভোলেননি। সেই স্মৃতিই আরও জোরদার করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে নির্বাচন করানোর দাবি। ধাপে ধাপে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী যে পৌঁছয়নি বাংলায়, তা নয়। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি ১০০ শতাংশ পূরণ হোক বা না হোক, সাম্প্রতিক কালে এই বাংলায় হওয়া অন্যান্য নির্বাচনের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সুষ্ঠুভাবেই যে এই নির্বাচন পরিচালিত হচ্ছে, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। বুথ দখল, ছাপ্পা, হিংসা, ভোটদানে বাধা ইত্যাদি নানা অভিযোগ যে ওঠেনি, এমন নয়। এ রাজ্যের বিরোধী শিবিরে রয়েছে যে সব রাজনৈতিক দল, অভিযোগ মূলত তাদের তরফ থেকেই তোলা হচ্ছে। কিন্তু ভোটে কারচুপির অভিযোগ মুখে যতটা তুলছেন এইসব দলের নেতারা, কমিশনে লিখিতভাবে ততটা সম্ভবত জানাচ্ছেন না। তাই ভোটগ্রহণ ঘিরে অশান্তির ছবিটাকে সর্বাত্মক হিসাবে ধরে নেওয়া যাচ্ছে না এ বার। অশান্তির বিন্যাস বিক্ষিপ্তই বরং।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: ‘সায়েন্টিফিক রিগিং’-এর অভিযোগে ধর্নায় বিজেপি, মিলল ৯০% বুথে বাহিনীর আশ্বাস

কিন্তু বিক্ষিপ্ত অশান্তিই বা হবে কেন? ভারতের অন্য সব রাজ্যে যখন প্রায় নিরুপদ্রবে মিটে যাচ্ছে ভোটগ্রহণ, তখন পশ্চিমবঙ্গেও তেমনটাই কাম্য। প্রথম পাঁচ দফার ভোটগ্রহণ থেকে শিক্ষা নিয়ে ষষ্ঠ দফায় তো আরও বেশি সাবধানী হওয়া উচিত ছিল কমিশনের কর্তাদের। তার বদলে উল্টো পথে হাঁটার প্রবণতা কেন? পঞ্চম দফায় যখন ৯৮ শতাংশের মতো বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল এবং তা সত্ত্বেও বিক্ষিপ্ত অশান্তি রোখা যায়নি, তখন এই দফায় শতাংশের বিচারে কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্বারা পরিবৃত বুথের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত কোন যুক্তিতে নেওয়া হল? রাজনৈতিক দল কমিশনের দুয়ারে গিয়ে ধর্নায় বসছে, কমিশনের উপর চাপ বাড়ানোর জন্য প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে, তার পরে কমিশন মিটমাটের ভঙ্গিতে আরও একটু নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছে— এই রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কোনও প্রয়োজনীয়তা কি রয়েছে? অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনই যদি লক্ষ্য হয়, কোনও পক্ষকে অভিযোগের অবকাশ না দেওয়াই যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে দিতে সমস্যা কোথায়? নির্বাচন প্রশ্নাতীত হোক সব অর্থে, এমনটাই কিন্তু কাম্য।

Lok Sabha Election 2019 Central force Anjan Bandyopadhyay Newsletter অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় Election Commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy