Advertisement
E-Paper

কোনও অজুহাতেই কি এই তাণ্ডব মেনে নেওয়া যায়?

একটা প্রদর্শনী ক্রমশ বহরে বাড়ছে যেন। আইন-শৃঙ্খলার চূড়ান্ত উল্লঙ্ঘনের আরও একটা ছবি উঠে এল। নতুন ধরনের কোনও ছবি নয়। ধাঁচটা মোটামুটি চেনাই। শুধু ছবির সংখ্যা আরও একটা বাড়ল, তালিকায় একটা নতুন সংযোজন ঘটল।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০১
এ ভাবেই ভাঙচুর চালানো হয় হাসপাতালে।

এ ভাবেই ভাঙচুর চালানো হয় হাসপাতালে।

একটা প্রদর্শনী ক্রমশ বহরে বাড়ছে যেন। আইন-শৃঙ্খলার চূড়ান্ত উল্লঙ্ঘনের আরও একটা ছবি উঠে এল। নতুন ধরনের কোনও ছবি নয়। ধাঁচটা মোটামুটি চেনাই। শুধু ছবির সংখ্যা আরও একটা বাড়ল, তালিকায় একটা নতুন সংযোজন ঘটল।

রোগীনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সিএমআরআই হাসপাতাল যে কাণ্ডের সাক্ষী হল, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সেই কাণ্ড আরও এক বার প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল। রোগীনির মৃত্যু হাসপাতালের গাফিলতিতে, অভিযোগ মৃতার পরিজনদের এবং তাঁদের সঙ্গে ভাঙচুর চালাতে আসা শ’খানেক উন্মত্তের। বিপরীত পক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, গাফিলতির প্রশ্নই নেই। কোন বক্তব্যটি ঠিক, সে নির্ধারণ করা খুব সহজ কাজ নয়। কিন্তু সে তর্ক অন্য পরিসরের। এই পরিসরের প্রশ্ন হল, হাসপাতালের গাফিলতিতে যদি চিকিৎসাধীনের মৃত্যু হয়, তা হলে কি কেউ অবাধ তাণ্ডব চালিয়ে হাসপাতাল তছনছ করে দেওয়ার অধিকার পান?

মৃত্যুটি দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনকও। কিশোরীর মৃত্যুর দায় সিএমআরআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নয়, এ কথাও এখনই বলার সময় আসেনি। কিন্তু একটি মৃত্যুর জেরে যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি হাসপাতালে তৈরি করা হল, তাতে আরও অনেক চিকিৎসাধীন যে সঙ্কটে পড়লেন, অনেক মুমূর্ষু যে বিপন্ন হলেন, সে দায় কে নেবেন? যে অচলাবস্থার মুখে গোটা হাসপাতালকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল বেশ কিছুটা সময়ের জন্য, তাতে আরও বড় কোনও বিপর্যয় যদি নেমে আসত, দায় কে নিতেন?

আইন-শৃঙ্খলার উল্লঙ্ঘনের এই ছবিটা কিন্তু শুধু সিএমআরআই হাসপাতালের ছবি নয়। কখনও ছাত্র-ভোটকে ঘিরে এই ছবি, কখনও পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জেরে এই ছবি, কখনও পুলিশি ভূমিকা পছন্দ না হওয়ায় এই ছবি। কারণ বিভিন্ন, ঘটনাস্থল বিভিন্ন, দৃশ্যটা অভিন্ন।

আইন-শৃঙ্খলার এই উপর্যুপরি উল্লঙ্ঘন দু’টি কারণে ঘটতে পারে। জনসাধারণের মনে পুলিশ-প্রশাসন সম্পর্কে সমীহ বা ভয় সম্পূর্ণ লোপ পেলে এমনটা ঘটতে পারে। আর আইন-পুলিশ-প্রশাসনের উপর থেকে নাগরিকদের বড় অংশের ভরসা সম্পূর্ণ উঠে গেলে এমনটা ঘটতে পারে।

বাংলার ক্ষেত্রে কোন কারণটি প্রযোজ্য, তা প্রশাসনকেই বুঝে নিতে হবে। কিন্তু সেই বুঝে নেওয়ার কাজটা খুব দ্রুত সারতে হবে এবং সমাধানটাও ততোধিক দ্রুততায় খুঁজে নিতে হবে। না হলে উল্লঙ্ঘনের প্রদর্শনীটা বহরে আরও বাড়বে। তা যে খুব একটা শ্লাঘার বিষয় হবে না, বাংলার প্রশাসকদের সে বোধ রয়েছে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

Anjan Bandyopadhyay Newsletter Vandalism CMRI Hospital Ransacked
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy