Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Opposition Alliance INDIA

অগ্রগতি দূরস্থান

নির্বাচনী ক্যালেন্ডারের স্বাভাবিক নির্ঘণ্ট এবং দেশের বাস্তব পরিস্থিতি জানিয়ে দিচ্ছে, ভোট আসতে আর মাস পাঁচেক বাকি।

An image of INDIA

দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে বিরোধী নেতানেত্রীরা। ছবি: পিটিআই।

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২৫
Share: Save:

নামকরণের পরে পাঁচ মাস অতিক্রান্ত। ‘ইন্ডিয়া’ নামক মঞ্চটি লোকসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতেই তৈরি হয়েছে, নির্বাচনের পরে তার অস্তিত্ব থাকবে কি না, থাকলেও তার হাল কেমন হবে, ইত্যাকার জল্পনা এখন কেবল অপ্রাসঙ্গিক নয়, ২০২৩ সালের শেষ সপ্তাহে দাঁড়িয়ে সেই উত্তরকাণ্ড তথা পরজন্ম বিষয়ক আলোচনা নিতান্তই অবান্তর। নির্বাচনী ক্যালেন্ডারের স্বাভাবিক নির্ঘণ্ট এবং দেশের বাস্তব পরিস্থিতি জানিয়ে দিচ্ছে, ভোট আসতে আর মাস পাঁচেক বাকি। সুতরাং বিরোধী দলের সমন্বয়-মঞ্চটি তার বর্তমান জীবনের অর্ধেক মেয়াদ ইতিমধ্যেই কাটিয়ে ফেলেছে। এই মধ্যাহ্নে একটি কথা নির্দ্বিধায় বলা চলে। জন্মকালে, বিশেষত অভাবিত নামকরণের মুহূর্তে, ইন্ডিয়া যে সাড়া জাগিয়েছিল, আজ তার বিশেষ কিছুই অবশিষ্ট নেই। একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের কালে বিরোধী সংহতিকে বিশেষ তৎপরতার সঙ্গে সচল ও সক্রিয় করে তোলার বদলে বিশেষ তৎপরতার সঙ্গে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়! সেই ঘুমপাড়ানিয়া ঔদাসীন্যের পিছনে কংগ্রেসের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। অতঃপর রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের ব্যর্থতা ও বিজেপির সাফল্য যখন লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীদের কঠিন কাজকে আরও অনেক বেশি কঠিন করে তুলেছে, সেই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে নতুন করে ইন্ডিয়া-কে জাগ্রত এবং সচল করে তোলার চেষ্টা শুরু হয়েছে, গত সপ্তাহে দিল্লিতে যার কিছু নমুনা দেখা গেল, বিভিন্ন বিরোধী দলের নায়কনায়িকারা নির্বাচনী রণকৌশল বিষয়ে আলাপ করলেন, রকমারি আলোচনাও।

কিন্তু তার ফল? সমন্বয়ের পথে এগোনো দূরে থাকুক, নতুন পর্বের শুরুতেই নতুন সমস্যা তৈরি হল ইন্ডিয়া-র নেতৃত্ব নিয়ে। বহুদলশোভিত এই মঞ্চের কোনও অবিসংবাদিত বা স্বাভাবিক নেতা-নেত্রী পাওয়া যাবে না, সুতরাং ‘প্রধানমন্ত্রী পদে আমাদের প্রার্থী’ হিসাবে কারও নাম ও মুখ তুলে ধরা হবে না, এমনটাই সাব্যস্ত হয়েছিল। স্থির হয়েছিল, এই সমস্যাকে সুযোগে রূপান্তরিত করে শাসক শিবিরের এক এবং অদ্বিতীয় মহানায়কের বিপরীতে ‘আমি নয়, আমরা’ নামক বহুত্বের জয়গান গাইবে ইন্ডিয়া। সেই কৌশল কত দূর ফলপ্রসূ হবে, সে প্রশ্নের উত্তর কারও জানা নেই, বস্তুত তা নির্ভর করবে বিরোধী রাজনীতির পরিচালকদের বুদ্ধিমত্তা ও মুনশিয়ানার উপরেই। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির মতো দলগুলির কর্ণধাররা সহসা বিরোধী মঞ্চের ‘মুখ’ হিসাবে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের নাম প্রস্তাব করার ফলে নতুন বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রস্তাবের ‘গূঢ় উদ্দেশ্য’ কী? কংগ্রেসে তথা বিরোধী শিবিরে রাহুল গান্ধীর ভাবমূর্তিকে দুর্বল করা? ইন্ডিয়া-র পরিসরে নীতীশ কুমারের সম্ভাব্য ভূমিকাকে খাটো করা? নানা জল্পনা বাতাসে ভাসছে। জল্পনার বাইরে সত্য এই যে, এমন প্রস্তাব বিরোধী সমন্বয়ের পক্ষে হিতকর নয়, ক্ষতিকর।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য দিকে, ইন্ডিয়া-র সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনী আসন বণ্টন নিয়ে যে টানাপড়েন ছিল, তার মাত্রা কিছুমাত্র কমেছে বলে মনে করার কোনও কারণ নেই। যে রাজ্যে তথা অঞ্চলে যে দলের সামর্থ্য বেশি, সেখানে বিরোধী আসনে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার মূল নীতি এখনও কেউ প্রকাশ্যে অস্বীকার করেনি, কিন্তু, অন্তত অধিকাংশ আসনে, সেই সূত্র বাস্তবে প্রয়োগ করার জন্য যে নমনীয়তা ও বাস্তববোধের প্রয়োজন হয়, তা কতটা দেখা যাবে সে বিষয়ে গভীর সন্দেহ আছে। এ ক্ষেত্রে নমনীয় হওয়ার প্রধান দায়িত্ব অবশ্যই কংগ্রেসের। তাদের বাস্তব শক্তি যে কতটা সীমিত, সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচন তা আরও এক বার প্রমাণ করেছে। অথচ এখনও বহু ক্ষেত্রেই, এমনকি উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে কার্যত নগণ্য হয়ে যাওয়ার পরেও, এই দলের আচরণ ‘বড় শরিক’ সুলভ। বিভিন্ন রাজ্যে দলের স্থানীয় স্বার্থ, তদুপরি রাজ্য স্তরের নেতাদের একাংশের অনমনীয় অবস্থান এই সমস্যাকে জটিল আকার দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে কঠিন পরীক্ষা।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

INDIA Alliance Lok Sabha Election 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE