Advertisement
E-Paper

প্রধানমন্ত্রীর দফতর দায় এড়াবে কী ভাবে?

এ বার বিবদমান পক্ষগুলির হাত থেকে ক্ষমতা বার করে নিতে সরকার বদ্ধপরিকর। অতএব, শক্ত হাতে সিবিআইয়ের রাশ ধতে প্রস্তুত নাগেশ্বর রাও।

সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা এবং ডেপুটি ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। গ্রাফিক- তিয়াসা দাস।

সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা এবং ডেপুটি ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। গ্রাফিক- তিয়াসা দাস।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:১৯
Share
Save

গোয়েন্দা সংস্থাটিকে ঘিরে যে টানাপড়েন শুরু হয়েছে, তা ক্রমশ জটিল হওয়ার পথে। গোটা দেশের নজর ছিল সিবিআইয়ের অভ্যন্তরীণ সঙ্কটের দিকে। তবে এ বার বিবদমান পক্ষগুলির হাত থেকে ক্ষমতা বার করে নিতে সরকার বদ্ধপরিকর। অতএব, শক্ত হাতে সিবিআইয়ের রাশ ধতে প্রস্তুত নাগেশ্বর রাও। কিন্তু ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করাই সিবিআইয়ের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

যা কিছু এখনও পর্যন্ত ঘটল, তার পুরোটাই অনভিপ্রেত। সিবিআইয়ের দুই সর্বোচ্চ পদাধিকারীর মধ্যে দ্বৈরথ শুরু হওয়া, সে দ্বৈরথ ক্রমশ বাড়তে থাকা এবং প্রকাশ্যে এসে পড়া, পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে একে অপরকে অপদস্থ করার মরিয়া চেষ্টায় দুই শীর্ষকর্তার মেতে ওঠা, সিবিআইয়ের হাতে সিবিআই আধিকারীকের গ্রেফতারি, দুই শীর্ষকর্তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো এবং সবশেষে অলোক বর্মার বাড়ির সামনে থেকে চার আইবি কর্মীর আটক হওয়া গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে— ঘটনাপ্রবাহের প্রতিটি পর্বই আপত্তিকর। কিন্তু এখনও আরও কত আপত্তিকর এবং লজ্জাজনক পর্ব অপেক্ষায় রয়েছে, এখনই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না সে বিষয়ে।

দেশের সরকার নড়েচড়ে বসেছে, সে কথা ঠিক। দেশের অন্যতম প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাটির অন্দরমহলে যে তীব্র টানাপ়ড়েন শুরু হয়েছে, তা যত শীঘ্র সম্ভব নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় সরকার এখন সচেষ্ট। কিন্তু এই চেষ্টা বা এই তৎপরতা এতদিন কোথায় ছিল? পরিস্থিতিকে এতটা জটিল হয়ে উঠতে দেওয়া হল কেন? সমস্যা যখন থেকে দানা বাঁধতে শুরু করেছিল, তখনই কেন্দ্র তৎপর হয়নি কেন? এমন নানা প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে। প্রশ্নগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেই ঘিরে ফেলছে। কারণ সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীনস্থ।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

অলোক বর্মা এবং রাকেশ আস্থানা পরস্পরের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তুলছিলেন, সেগুলো অত্যন্ত গুরুতর। দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থার দুই সর্বোচ্চ পদাধিকারী পরস্পরের বিরুদ্ধে এমন বিপুল দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন—এ মোটেই সহজ কথা নয়। প্রথম অভিযোগটা যে দিন উঠেছিল, সে দিনই সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত ছিল সরকারের। বর্মা-আস্থানার মধ্যে প্রকাশ্য দ্বৈরথ শুরু হতে চলেছে বলে যে দিন প্রথম বার আভাস পাওয়া গিয়েছিল, সেই দিনই সতর্ক হওয়া যেতে পারত, দুই আধিকারিককে সতর্ক করে দেওয়া যেতে পারত। কিন্তু তা হল না, টানাপড়েন বাড়তে দেওয়া হল এবং দৃষ্টিকটু তথা অভূতপূর্ব এক পরিস্থিতির জন্ম দেওয়া হল। সিবিআইয়ের ইতিহাসে এই রকম সঙ্কট আগে কখনও দেখা যায়নি। এর দায় প্রধানমন্ত্রীকেই তো নিতে হবে?

আরও পড়ুন: নজর আজ আদালতে, কী বোমা ফাটাবেন অলোক? চিন্তায় শাসক

আবার বলি, এখনও পর্যন্ত যা কিছু ঘটল তা অত্যন্ত অনভিপ্রেত এবং দৃষ্টিকটু। দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাটির দুই শীর্ষকর্তা খড়গহস্ত হয়ে একে অপরকে ধ্বংস করতে উদ্যত, গভীর রাতে দুই শীর্ষকর্তাকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা, সিবিআই আধিকারীকদের গণবদলি, অলোক বর্মার বাড়ির সামনে থেকে আইবি কর্মীদের আটক হওয়া, সরকার ও বিরোধীর মধ্যে তীব্র টানাপড়েন শুরু হওয়া— গোটা পর্বটাই নেতিবাচক। গোটা পর্বটাই সিবিআইয়ের ভাবমূর্তিতে সাংঘাতিক ধাক্কা দিল। সরকারের সদিচ্ছা, স্বচ্ছতা এবং দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিল। দুই শীর্ষ সিবিআই কর্তার নামে গুরুতর অসততার অভিযোগ ওঠা মাত্রই পদক্ষেপ করা উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতরের। প্রকাশ্য দ্বৈরথের পরিস্থিতি তৈরি হতে দেওয়াই উচিত হয়নি। দ্বৈরথটা থামানো হচ্ছে যে পন্থায়, সেই পন্থার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠার অবকাশ দেওয়া উচিত ছিল না। হয় সরকার বুঝতেই পারেনি, এত দূর গড়িয়ে যেতে পারে জলটা। অথবা বুঝেও নিরসন ঘটাতে পারেনি সমস্যার। দিনের শেষে কাঠগড়ায় কিন্তু সরকারই। হয় অকর্মণ্যতা, না হয় অস্বচ্ছতা। সিবিআইয়ের এই টালমাটাল পরিস্থিতির জন্য কোনটা দায়ী, জবাবটা সরকারই দিক।

Editorial News CBI IB Intelligence Bureau Alok Verma Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় PMO Rakesh Asthana Nageswar Rao

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।