Advertisement
E-Paper

আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, কিন্তু আশার কিরণও এল

ঘন কালো অন্ধকার নামাতে পারে ভারত জুড়ে, এমন এক মেঘের সঞ্চার হয়েছিল আকাশে আগেই। মেঘের পরিসর ক্রমশ বাড়ছিল। নানা প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যেই বিপদ সঙ্কেত এসেছে। বিপদ ঘণ্টাটা আরও এক বার বাজল।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৬
আস্থার হাত। ছবি: পিটিআই।

আস্থার হাত। ছবি: পিটিআই।

ঘন কালো অন্ধকার নামাতে পারে ভারত জুড়ে, এমন এক মেঘের সঞ্চার হয়েছিল আকাশে আগেই। মেঘের পরিসর ক্রমশ বাড়ছিল। নানা প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যেই বিপদ সঙ্কেত এসেছে। বিপদ ঘণ্টাটা আরও এক বার বাজল। আন্তর্জাতিক সমীক্ষক পিইডব্লু রিসার্চ জানাল, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতায় অধিকাংশ দেশের চেয়েই অগ্রগণ্য ভারত।

লজ্জাজনক নিঃসন্দেহে। তবে অন্ধকার ফুঁড়ে আশার আলোটাও জ্বলে উঠল একই দিনে। নিজের দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান— সামাজিক হোক বা অর্থনৈতিক, সব রকমের বৈষম্য দূর করতে হবে দেশে থেকে। শাসক দলের সব নেতা-কর্মী-সমর্থককে এগিয়ে আসতে হবে সে লক্ষ্য পূরণে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানাতেই ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে সবচেয়ে বেশি বার আন্তর্জাতিক কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে ভারতকে। অসহিষ্ণুতার বীজ ভারতের মাটিতে ছিল না এর আগে, এমন নয়। কিন্তু মোদী-রাজের শুরু থেকেই সে বীজ জানান দিচ্ছে যে সে মহীরূহ হয়ে উঠতে চায়। শুধুমাত্র সেই কারণেই কিন্তু বিপদ ঘণ্টাগুলো বেজে উঠছে বার বার, বিশ্ব মঞ্চে পরিচিত ভারতের যে ছবিটা, সে ছবিতে কালির ছিটে লাগছে বার বার। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের শিরোপা যার মাথায়, এ লজ্জা সে রাষ্ট্রের প্রাপ্য নয়। অতএব সতর্ক হতেই হবে, শুধু রাষ্ট্র নয়, শুধু শাসক নন, প্রত্যেক নাগরিককে সতর্ক হতে হবে, সংযমী হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই সংযমের বার্তাটাই দিলেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সংযমের বার্তা, জাতীয় সংহতির বার্তা, সম্প্রীতির বার্তা আগেও হয়তো দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এ দিন যে মঞ্চ থেকে বার্তাটা দিলেন নরেন্দ্র মোদী, সে মঞ্চে তিনি প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি দেশের শাসক দল বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা। যাবতীয় সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য মুছে দেওয়ার আহ্বানটা তাই আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ধরা দিল।

রাষ্ট্রনায়ক যখন বার্তা দেন, তখন সমগ্র জাতির প্রতিনিধি হিসেবে বার্তা দেন। নিরপক্ষেতার প্রতিই সর্বোচ্চ দায়বদ্ধতা তাঁর। কিন্তু রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে দলের নেতার দায়বদ্ধতা মূলত দলের প্রতিই। সেই মঞ্চেও যখন নরেন্দ্র মোদী ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অনগ্রসর মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেন, দলের নেতা-কর্মীদের যখন বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার নির্দেশ দেন, তখন আশান্বিত হওয়ার কারণ থাকে।

স্বপ্ন অবশ্য আগেও দেখিয়েছেন মোদী। ‘অচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ন কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন, সে হিসেব সম্ভবত নরেন্দ্র মোদীই সবচেয়ে ভাল জানেন। তবু আস্থা রাখা যাক আরও এক বার। জাতীয় সংহতি এবং বৈষম্যমুক্ত সমাজই লক্ষ্য শাসকের— বিশ্বাস করা যাক আরও এক বার। নরেন্দ্র মোদী, মনে রাখবেন— বিশ্বাসভঙ্গ হবে ধরে নিয়ে কিন্তু বিশ্বাস রাখছি না।

Anjan Bandyopadhyay Newsletter Intolerance Report Narendra Modi PEW
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy