Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: টিকটিকি পতন

পত্রলেখক লিখেছেন, কন্যার বিবাহের ক্ষেত্রে অতি অল্প বয়সের উল্লেখ আছে। সত্যিই এক পঞ্জিকাতে বলা হয়েছে, ‘‘যুগ্ম বর্ষে বিবাহে কন্যা বিধবা ও অযুগ্মে দুর্ভাগ্যগ্রস্তা হয়।

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০০:২৭

সাধন মুখোপাধ্যায়ের ‘পাঁজিতে লেখা আছে’ (৮-৪) শীর্ষক চিঠির সঙ্গে কিছু যোগ করি। সত্যিই পাঁজির পাতায় পাতায় কুসংস্কার এবং মধ্যযুগীয় চিন্তাচেতনার পুনরুচ্চার দুর্ভাগ্যজনক ভাবে লক্ষণীয়। বাজারচলতি পঞ্জিকায়, তিথি অনুযায়ী কিছু খাদ্য নিষিদ্ধ বলে উল্লেখ করা আছে— ‘‘প্রতিপদে কুষ্মাণ্ড, দ্বিতীয়ায় বৃহতী, তৃতীয়ায় পটোল, চতুর্থীতে মূলা...’’ এবং ক্ষৌরকর্মের কিছু নিষিদ্ধ বার উল্লেখ আছে এবং সেই বারে ক্ষৌরকাজ করলে কী হবে তার বিধান দেওয়া আছে— রবিবার ধনহানি, মঙ্গলবার আয়ুক্ষয়, বৃহস্পতিবার মানহানি...

পত্রলেখক লিখেছেন, কন্যার বিবাহের ক্ষেত্রে অতি অল্প বয়সের উল্লেখ আছে। সত্যিই এক পঞ্জিকাতে বলা হয়েছে, ‘‘যুগ্ম বর্ষে বিবাহে কন্যা বিধবা ও অযুগ্মে দুর্ভাগ্যগ্রস্তা হয়। অতএব গর্ভ হইতে গণনা করিয়া যুগ্ম বর্ষে বিবাহ দিলে কন্যা পতিব্রতা হয়। ৬ বৎসর তিন মাসের পর ৭ বৎসর ৩ মাস পর্যন্ত ও ৮ বৎসর ৩ মাসের পর ৯ বৎসর ৪ মাস পর্যন্ত বিবাহের প্রশস্ত কাল।’’

‘স্বপ্ন’ নিয়ে যেখানে বড় বড় মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে, সেখানে পঞ্জিকা অতি সহজে সমস্ত সমস্যার মীমাংসা করে লিখেছে— ‘‘স্বপ্ন মাত্রই যে মিথ্যা তাহা নহে। পক্ষ, সময়, প্রহর, স্বপ্নদৃষ্ট বিষয়, শয়নকালীন অবস্থা প্রভৃতি স্বপ্ন বিজ্ঞানসম্মত হইলে সে স্বপ্ন সত্যি হইয়া থাকে...’’ শুধু তা-ই নয়, পক্ষ অনুযায়ী স্বপ্নদর্শনের ফল, এবং কোন বস্তুর স্বপ্ন দেখলে কী ফল লাভ হয়, তা-ও সবিস্তার আলোচিত।

অকস্মাৎ শরীরের কোনও অংশের কম্পনও বাদ যায়নি। কোন অঙ্গ কাঁপলে কী হবে, তাও বর্ণিত হয়েছে: ‘‘মাথায়— রাজদ্বারে সম্মান, ললাটে— ঐশ্বর্য লাভ, দক্ষিণ চক্ষুতে— বন্ধু দর্শন, ...বাম কর্ণে— শিরশ্ছেদনের আশঙ্কা...’’ এখন রাজদ্বারও নেই, শিরশ্ছেদনের শাস্তিও নেই, তবু ‘কম্পন বৃত্তান্ত’ একই রয়ে গিয়েছে। ‘তিলতত্ত্ব’-এর শুরুতে লেখা আছে, ‘‘জার্মান জ্যোতিষ (Cabinet of Curiosities) হইতে গৃহীত।’’ এ বার শরীরের কোন অঙ্গে তিল থাকলে তার কী ফল, সেই বর্ণনা রয়েছে।

তবে পঞ্জিকার একটি ‘মডার্ন’ দিক লক্ষ করার মতো। ভারতবর্ষ-সহ একাধিক দেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের এক বছরের ভাগ্য কেমন যাবে, তারও বিধান দেওয়া আছে। যেমন ভারতবর্ষ সম্বন্ধে বলা হয়েছে— ‘‘বর্ত্তমান বছরে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়। স্বচ্ছ ভারত গড়ে তোলার স্বপ্নকে সফল করতে বর্তমান সরকার ঐকান্তিক প্রয়াস চালাবে। ...দেশের জনগণের বৃহত্তর অংশের সমর্থন সরকারকে সাহস জোগাবে। বর্ত্তমান বছরে দেশের কোনো নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বের এবং কলা ও সাংস্কৃতিক জগতের কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তির জীবনাবসান রয়েছে।’’

এ ছাড়া পঞ্জিকার বিজ্ঞাপনের পাতায় ফলাও করে বশীকরণ তন্ত্র, ডাকিনী তন্ত্র-র বইয়ের বিজ্ঞাপন শোভা পাচ্ছে। সবচেয়ে মজা লাগে, ‘টিকটিকি পতনের ফলাফল’ দেখে। ‌শরীরের কোন অঙ্গে টিকটিকি পড়লে তার কী ফল, সে সব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে: ‘‘মাথায়— রাজ্যলাভ, কানে— অলংকারাদি লাভ, পিঠে— ভূসম্পত্তি লাভ, কোমরে— নতুন বস্ত্র লাভ এবং গুহ্যদ্বারে— মৃত্যুভয়।’’ পঞ্জিকার সব কিছু মেনে নিলেও এই শেষোক্ত স্থানে কী করে টিকটিকি পতন সম্ভব তা আজ পর্যন্ত আমার মাথায় ঢোকেনি!

শঙ্খ অধিকারী মান্ডী, বাঁকুড়া

ট্রেন লেট

গত ১৮ এপ্রিল সপরিবার হাওড়া-এনজেপি শতাব্দী এক্সপ্রেসে এনজেপি গেলাম। ২:১৫-র পরিবর্তে ট্রেন ছাড়ল ৩:০৫-এ। সেই ট্রেন আড়াই ঘণ্টা লেট করে রাত ১টায় এনজেপি পৌঁছল। একটি সুপারফাস্ট প্রিমিয়াম ট্রেন রাস্তায় একটুও লেট কমাল না, বরং বাড়াল দেখে আশ্চর্য হলাম। ২৪-৪ তারিখে ওই ট্রেন এনজেপি থেকে সকাল ৫:৩০-এর পরিবর্তে ৭:৩০-এ ছাড়ল। যথারীতি সেই লেট বেড়ে তিন ঘণ্টা দেরিতে হাওড়া পৌঁছল। এত টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও এত হয়রানি কেন? সব থেকে বড় কথা, এত লেট-এর কোনও কারণ যাত্রীদের জানানো হয় না। পোকার গন্ধযুক্ত পরোটা আর লোহার মতো শক্ত চিকেনের কথা তো বললামই না।

শুচিস্মিতা চক্রবর্তী কলকাতা-৫০

অবৈধ যাত্রী

রেলযাত্রা আর নরকযাত্রা সমার্থক। দুরন্ত, রাজধানী, শতাব্দী— ট্রেনগুলি বিশেষ নজরের আওতায় থাকলেও, বাকি নব্বই শতাংশ ট্রেন অভিভাবকহীন। সংরক্ষিত স্লিপার ক্লাস এখন বারোয়ারি হয়ে দাঁড়িয়েছে। চার-পাঁচ গুণ ভাড়া বেশি দিয়েও ইদানীং এসি কামরাতেও একই অবস্থা। সম্প্রতি বাঘ এক্সপ্রেসে কাঠগোদাম থেকে হাওড়া আসতে গিয়ে সেই অভিজ্ঞতা হল। ট্রেনটির রোজ চার-পাঁচ ঘণ্টা লেট গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। সারা রাস্তা এসি কামরায় অবৈধ যাত্রী। বিরক্ত হয়ে কয়েক জনকে জিজ্ঞাসা করতে দাপটের সঙ্গে তাঁরা জানালেন যে তাঁরা রেলের স্টাফ, অনেকের কথায় বুঝলাম তাঁদের পূর্বপুরুষরা কখনও গ্যাংম্যান ছিলেন। টিটিই সাহেব এলেন এবং চলে গেলেন। কেউ জানে না এই দুর্ভোগের শেষ কবে!

সুদর্শন নন্দী রাঙামাটি, মেদিনীপুর শহর

পুলিশ ও নিয়ম

‘নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ক্যাবে ধাক্কা পুলিশের গাড়ির’ (৩০-৪) খবরের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। পুলিশের গাড়িকে অনেক বারই ট্র্যাফিক নিয়ম না-মানতে দেখেছি। প্রায় এক বছর আগে, সল্ট লেক স্টেডিয়াম থেকে সেন্ট্রাল পার্কের দিকে আসছি। সিগনালের পর একটা আইল্যান্ড পার হব। সব গাড়িই আস্তে আস্তে পেরোচ্ছে। আমিও ডান দিকে আইল্যান্ড ঘেঁষে প্রায় পেরিয়ে গিয়েছি। কোথা থেকে এক পুলিশের গাড়ি এসে বাঁ দিক থেকে আমাকে ওভারটেক করতে গিয়ে আমার গাড়ির সামনের বাঁ দিকে লাগিয়ে দিল! বললাম, টার্নিংয়ে তো ওভারটেক করার নিয়ম নেই। উল্টে আমাকেই ধমক দিয়ে বলল, আমার আরও ডান দিক ঘেঁষে চালানো উচিত ছিল!

সমীর কুণ্ডু কলকাতা-৬৪

সিগনাল কই

রুবি বাস স্টপ থেকে সায়েন্স সিটির দিকে প্রায় দেড়-দু’কিলোমিটার দূরে রয়েছে পরবর্তী বাস স্টপ। অথচ রুবি বাস স্টপ থেকে সায়েন্স সিটির দিকে প্রায় চারশো মিটার দূরে আয়কর (পূর্বা), সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হেল্থ স্কিম এবং মনোবিকাশ কেন্দ্র। ফলে এই রাস্তায় মানুষকে প্রতি দিন যাতায়াত করতে হয়। পরের বাস স্টপ দীর্ঘ দূরত্বে থাকার জন্য বাস-সহ অন্যান্য গাড়ি এই রাস্তায় অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলাচল করে। এখানে কোনও সিগনাল-ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পর অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং মানসিক রোগীরা রাস্তা পারাপার করেন। যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক নয়।

গৌতম বিশ্বাস কলকাতা-৮৪

সিনিয়র

সারা দেশের সঙ্গে আমাদের রাজ্যেও সিনিয়র সিটিজেনদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই রাজ্যে এই সংখ্যাটা প্রায় ৪৫ লক্ষ। সংবিধানে সিনিয়র সিটিজেনদের কিছু বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া আছে। রেলে এবং বিমানের (এয়ার ইন্ডিয়া) টিকিটে ছাড় আছে। সরকারি বাসে এই ছাড় বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন। যেমন, ইলাহাবাদে এই ছাড় ৩০%। উত্তরপ্রদেশ সরকার মহিলা সিনিয়র সিটিজেনদের বাসভাড়া পুরোপুরি মকুব করার বিল সদ্য পাশ করিয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশে এই ছাড় ২৫%। বেঙ্গালুরুতে ১০%। চণ্ডীগড়ে ৫০%। হিমাচলপ্রদেশে ছাড় ২০%। রাজস্থানে ২৫%। পঞ্জাব আর হরিয়ানায় ৫০%। তামিলনাড়ুতে ১০%। আর পশ্চিমবঙ্গে এই ছাড় তো নেই-ই, এমনকী বহু বাসে সিনিয়রদের আলাদা সিটও থাকে না।

রনজিৎ মুখোপাধ্যায় মুড়াগাছা, নদিয়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

lizard Bengali panjika superstitions
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy